বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পাশে দাঁড়াল চীন

প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জাতিসংঘের বৈশ্বিক স্বাস্থ্য নিরাপত্তা বিষয়ক অঙ্গসংগঠন ডব্লিউএইচও থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার নিয়েছেন ট্রাম্প। জাতিসংঘের গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গকে এগিয়ে নিতে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের ঘোষণা দিয়েছে চীন। সংস্থাটির পাশে দাঁড়িয়েছে দেশটি।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) সকালে রাজধানী বেইজিংয়ে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দপ্তরে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র গুয়ো জিয়াকুন বলেন, “চীন বিশ্বাস করে, বিশ্ব মানবতা রক্ষার স্বার্থে এমন একটি স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা থাকা উচিত, যার ভিত্তি হলো বিভিন্ন দেশ ও জাতির মধ্যকার আদান-প্রাদন। ডব্লিউএইচও এই দায়িত্বটি পালন করছে এবং এ কারণে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতি চীনের সমর্থন সবসময় অব্যাহত থাকবে। অদূর ভবিষ্যতে বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংস্থা দুর্বল নয়, বরং শক্তিশালী হবে।-খবর তোলপাড়।
প্যারিস চুক্তির প্রতি চীনের সমর্থন থাকবে উল্লেখ করে জিয়াকুন বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন হলো এমন একটি চ্যালেঞ্জ, যা মোকাবিলার দায়িত্ব বিশ্বের সব দেশের, সব জাতির, সব মানুষের। এটি এমন একটি চ্যালেঞ্জ, যার ফলে কোনো একক দেশ যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, তেমনি কোনো একটি দেশের পক্ষে এটির সমাধান বের করাও সম্ভব নয়।
“তাই জলবায়ু পরিবর্তন নামের এ বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় চীন সবার সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার পক্ষপাতী।”
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতি অবশ্য ট্রাম্পের ক্ষোভ পুরোনো। ২০২০ সালে বিশ্বজুড়ে কোভিড মহামারির সময় ট্রাম্প অভিযোগ তুলেছিল, করোনা ভাইরাস চীনের উহানের জৈব গবেষণাগারে তৈরি করা হয়েছে এবং ল্যাবকর্মীদের অসাবধানতার কারণে এটি ছড়িয়ে পড়েছে। ডব্লিউএইও এ অভিযোগে সমর্থন না জানানোয় ক্ষুব্ধ হন ট্রাম্প এবং বৈশ্বিক এ সংস্থায় অর্থায়ন বন্ধ করেন। প্রসঙ্গত, বিশ্ব সংস্থার সবচেয়ে বড় দাতাদেশ যুক্তরাষ্ট্র। এ সংস্থার মোট বাৎসরিক চাঁদার ১৫ শতাংশই আসে ওয়াশিংটনের তরফ থেকে।
অন্যদিকে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ন্ত্রণ এবং উষ্ণতা বৃদ্ধি রোধের জন্য ২০১৫ সালে প্যারিসে জলবায়ু চুক্তি স্বাক্ষর করে যুক্তরাষ্ট্রসহ জাতিসংঘের ১৯৬টি সদস্যরাষ্ট্র। বারাক ওবামা তখন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
২০১৭ সালে নির্বাচিত হন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং জলবায়ু পরিবর্তনকে পরিবেশবাদীদের ‘বাগাড়ম্বর’ উল্লেখ করে ২০১৮ সালে এ চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে বের করে আনেন তিনি।
২০২০ সালে ডেমোক্র্যাট পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনের কাছে ক্ষমতা হারে ট্রাম্প। তিনি ক্ষমতা গ্রহণের পর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে ফের চাঁদা প্রদান শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র, প্যারিস জলবায়ু চুক্তিতেও আবার অন্তর্ভুক্ত হয়।
২০২৪ সালের নির্বাচনে জিতে গতকাল ২০ জানুয়ারি সোমবার ফের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের শপথ গ্রহণ করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শপথ গ্রহণের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ডব্লিউএইচও এবং প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিলেন তিনি।
সূত্র : এএফপি।