শেখ সমশের আলী, পীরগঞ্জ(ঠাকুরগাঁও):

পীরগঞ্জ উপজেলার ভাকুড়া ধনিপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও আওয়ামীলীগ সমর্থিত উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আখতারুল ইসলামের বিরুদ্ধে আয় বর্হিরভুত সম্পদ অর্জন করা, ব্যাপক আর্থিক অনিয়ম ও দূর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ নিয়ে বিচারের দাবীতে পীরগঞ্জ উপজেলার আমজনতা ফুসে উঠেছে। তবে বর্তমানে তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন।

জানা গেছে, পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঠাকুরগাঁও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি পদে বহাল রয়েছেন তিনি। পীরগঞ্জ ৬নং ইউনিয়ন পরিষদের প্রথম নির্বাচন করা কালীন সময়ে নির্বাচনী হলফনামায় তার তথ্য বিবরণীতে তার নগদ ৫ হাজার ৫শ টাকা, একটি কঠা ঘর, একটি বাইসাইকেল ও ৩০ শতক কৃষি জমি বর্ননা করা হয়। ৬০০ টাকা চেয়ারম্যানের মাসিক সম্মানী ভাতা দিয়ে শুরু করেন চেয়ারম্যানের কার্যক্রম। তিনি মোট ৪ বার ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন করেছেন এবং উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান হিসেবে দুই বার নির্বাচিত হন।

তার এই সামান্য সম্পদ দিয়ে তিনি কোটি কোটি টাকার সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার আয়ের উৎস গুলোর মধ্যে পীরগঞ্জ ডিএন ডিগ্রি কলেজ, আমবালা দাখিল মাদরাসা, ভেলাতৈড় দবরগাজী দাখিল মাদরাসা ও ভাকুড়া গালর্স স্কুলের সভাপতির দায়িত্ব পালন করে উক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোতে জনবল নিয়োগ দিয়ে কোটি কোটি টাকার দূর্নীতি করেছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শাসনামলে এ উপজেলায় ২ হাজারের বেশি ভূমিহীনদের জন্যে আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের নির্মিত সেমিপাকা ঘর বরাদ্দ দেওয়ার নামে দালাল নিযুক্ত করে মোটা অংকের টাকা আয় করেন।

এ উপজেলার সাবেক ইউএনও রেজাউল করিম ও সাবেক ইউএনও শাহরিয়ার নজিরের সময় কালে তিনি ওই দুই ইউএনও কে দিয়ে মানুষের অধিনে থাকা খাস জমিতে লাল ফ্লাগ লাগিয়ে অনেক মানুষের জমি প্রশাসনকে দিয়ে কৌশলে দখল করে নেন। পরবর্তীতে তিনি ওই সব জমির দখলদারদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে জমি থেকে লাল ফ্লাগ উঠিয়ে ফেলেন। এরুপ ঘটনার উদাহারণ ৬নং পীরগঞ্জ ইউনিয়নের বেগুনগাঁও, পয়েন্ধা, বিশমাইল, চন্ডিপুর গ্রামে এবং বেতুরা গ্রামের আব্দুর রহমানের প্রায় ১০ একর জমিতে প্রশাসন দিয়ে লাল ফ্লাগ লাগিয়ে মোটা অংকের টাকা উপার্জন করেছেন তিনি। পরবর্তীতে ওইসব জমিতে লাল ফ্লাগ দেখা যায়নি। এছাড়া দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গা থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করে আজ তিনি গা ঢাকা দিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে দালাল নিযুক্ত করে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে জোয়ার আসার বসিয়ে মোটা অংকের টাকা উপার্জন করতেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এসব কর্মকান্ডে অনেক মানুষ তাকে উপজেলা পরিষদের দরবেস বাবাজি উপাধি দিয়েছেন।

এছাড়া ৪ আগষ্ট ২০২৪ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলনে আখতারুল ইসলাম ও তার বাহিনী পীরগঞ্জ পূর্ব চৌরাস্তার মোড়ে বেপোরোয়া হয়ে ছাত্র জনতার উপর লাঠি চার্জ করা সহ অনেক ছাত্রকে মারপিট করেছেন। ফলে তার এহেন অপরাধ জনক কাজের প্রতি ছাত্র জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে গণপিটুনি দেন। বর্তমানে তিনি গা ঢাকা দিলেও এলাকার সুশীল সমাজ ও আম জনতা তার শাস্তি দাবী করেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আখতারুর ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেননি। ফলে মতামত নেওয়া সম্ভব হয়নি। আখতারুল ইসলাম ওরফে দরবেস বাবাজি কে দ্রুত আইনের আওতায় আনার জন্যে এলাকার অভিজ্ঞ মহল সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরী হস্তেক্ষেপ কামনা করেছেন।