সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ১১:০১ পূর্বাহ্ন
শুভেচ্ছা বার্তা:
আলোকিত রাজারহাট একটি বহুল প্রচারিত প্রিন্ট পত্রিকা। এটি নিয়মিত প্রকাশ হয়ে আসছে। পত্রিকাটির পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা। আলোকিত রাজারহাট এর ওয়েবসাইট কয়েকদিনের মধ্যে আপনাদের মাঝে উন্মুক্ত হবে। আপনি গর্বিত সাইটটির সঙ্গে থেকে নিয়মিত খবর দেখুন ও পড়ুন। আমরা আপনার সঙ্গেই আছি। ধন্যবাদ।

অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ইটভাটা: কর্মহীন ৬ শতাধিক শ্রমিক

রিপোর্টারের নাম / ৭৮ টাইম ভিউ
Update : শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

সংবাদদাতা, কুড়িগ্রাম:

কৃষি জমির মাটি দিয়ে ইট ভাটার ইট পোড়ানোতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। যার ফলে দেশের অনেক ইটভাটা বন্ধ হয়ে গেছে। যার প্রভাব পড়েছে কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার ৪টি ইটভাটায়। এসব ইট ভাটা বন্ধ হওয়ায় প্রায় ৬ শতাধিক শ্রমিক কর্মহীন হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। শুধু তাই নয়, সরকারের এই সিদ্ধান্তে দিশেহারা ভাটার মালিকরা।

সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্র জানা গেছে, জেলার ৯ টি উপজেলায় সর্বমোট ১১৩টি ইটভাটা রয়েছে। যার মধ্যে চিলমারী উপজেলায় ৪টি ইট ভাটা অবস্থিত। এই শ্রম নির্ভর ইট ভাটায় কর্মরত প্রায় ছয় শতাধিকের মতো শ্রমিক মাটিকাটা ও শ্রমিক বহন কাজে নিয়োজিত, ট্রাক ড্রাইভার কর্মরত রয়েছেন। এ বছর ইট ভাটায় বিনিয়োগকারীরা অতিরিক্ত শীতের ফলে এমনইতেই লোকশানের মুখে পড়েছে। মালিকগণ ব্যাংক ঋণ করে ব্যবসায় বিনিয়োগ করে এখন সব মিলিয়ে দিশেহারা।

ভাটার মালিকগণ জানান, শ্রমিকরা ইট ভাটার মালিকদের কাছ থেকে আগাম দাদন নিয়ে খরচ করে ফেলেছে, যা মালিকদের ফিরিয়ে দেওয়া তাদের পক্ষে কোনভাবেই সম্ভব নয়। যদি তাদের শ্রম বিক্রি করে দিতে না পারে, সরকারের নীতি নির্ধারকদের এমন হীন সিদ্ধান্তহীনতায় মৌসুমের শেষ প্রান্তে এসেও তারা শ্রম বিক্রি করতে পারে নি। যার ফলে ঋণের দায় জর্জরিত হয়ে পড়েছে এই শ্রমিকরা।

সূত্রে আরও জানা যায়, ২০২৫ সালের পর থেকে কোনভাবেই কৃষি জমির মালিকরা টপ সয়েল মাটি কেটে ইট ভাটায় ইট পোড়াতে পারবে না মর্মে নির্দেশ জারি করেছে সরকার। যার ফলে আগামী বছর থেকে এমনিতেই এ সকল ইটভাটা বন্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু এবার লাইসেন্স নবায়নের পূর্বে কোন ধরনের নির্দেশনা না থাকায় ইট ভাটা শিল্পে উপজেলায় বিনিয়োগ করা হয়েছে প্রায় ৫ কোটি টাকার অধিক। সরকারের নীতি নির্ধারকদের সিদ্ধান্তহীনতার ফলে চরম ব্যবসায়িকভাবে লোকসানের মুখে পড়তে যাচ্ছে ইট ভাটা মালিকরা।

কর্মহীন হয়ে পড়া এসব শ্রমিকগণ তাদের শ্রেণীর কথা বিবেচনা রেখে সরকারের নীতি নির্ধারকদের প্রতি বিনীত আহ্বান জানিয়েছেন, তারা যে কোনো ভাবেই হোক এই মৌসুমে তাদের কাজ করার সুযোগ দিলে তারা ঋণের দায়ে জর্জরিত হবে না। পরিবার নিয়ে তাদের পথে বসতে হবে না।

ইটভাটার শ্রমিক নুরুন্নবী মিয়া বলেন, আমরা ইট ভাটার মালিকের কাছ থেকে অগ্রিম দাদন নিয়ে খরচ করে ফেলেছি। কিন্তু এখন ইটভাটা বন্ধ থাকায় আমরা কাজ করতে পারতেছি না। তাহলে কিভাবে মালিকের ঋণ পরিশোধ করব এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে দুবেলা দুমুঠো খাবো।

উপজেলার থানাহাট ইউনিয়নের বাসিন্দা মকবুল হোসেন, আমি দীর্ঘদিন থেকে ভাটায় কাজ করে আসছি। হঠাৎ সরকারি লোক এসে ইটভাটা বন্ধ করে দেয় সেদিন থেকে আমাদের কাজও বন্ধ হয়ে যায়। এখন আমরা খুব কষ্টে জীবনযাপন করতেছি। কাজ না হলে খাব কি বউ ছেলে-মেয়ে নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।

স্থানীয় কয়েকজন ঠিকাদার বলেন, বিভিন্ন স্থানে ভাটার কার্যক্রম চললেও হঠাতেই এই উপজেলায় বন্ধ করে দেয়ায় একে তো ইটের দাম বৃদ্ধি পাবে তার উপর সময় মতো পাওয়া মুশকিল হবে, বাঁধাগ্রস্থ হবে উন্নয়ন কাজে।

মেসাস ওবিএস ট্রেডার্স স্বত্বাধিকারী হাবিবুল ইসলাম অপু বলেন, ভাটা শুরু অবধি আমার সকল কাগজপত্র আপডেট করা থাকে। এ বছর পরিবেশ ছাড়পত্রের জন সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে যাহার টাকা জমাদানের রশীদও আমার কাছে। কিন্তু জুলাই অভ্যুত্থান কারণে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে ছাড়পত্র দেয়া হয়নি। তবে এই ভাটা বন্ধে আমার তেমন অসুবিধা না হলেও শ্রমিকরা পরছেন চরম বিপাকে।

এস.টি ব্রিকেসের মালিক মাহফুজার রহমান মঞ্জু জানান, ভাটা শুরুর আগে সরকারিভাবে ভ্যাট জমা প্রদান করে কার্যক্রম চালু করা হয় কিন্তু হঠাতেই প্রশাসনের ঘোষণা কারণে বন্ধ রাখা হয়েছে ফলে স্থানীয়ভাবে উন্নয়ন কাজ ব্যহত হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক জানান, অনুমতি না থাকায় উপজেলার ৪টি ভাটা বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর