মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:৫৫ অপরাহ্ন

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল:৪জনের মৃত্যু, দুর্বল হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপে পরিণত

রিপোর্টারের নাম / ৮৫ টাইম ভিউ
Update : সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় রেমাল দুর্বল হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপ পরিণত হয়েছে। সমুদ্রবন্দরগুলোকে বিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। আজ সোমবার (২৭ মে) সকাল পৌনে ১১টায় আবহাওয়ার ১৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। সোমবার(২৭মে) বেলা ১১টা পর্যন্ত পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা, ভোলা, চট্টগ্রামে মোট ৪ জনের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

এতে বলা হয়, কয়রা ও খুলনায় অবস্থানরত প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উত্তর দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপ হিসাবে বর্তমানে যশোর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমেই বৃষ্টিপাত ঝরিয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হবে।-খবর তোলপাড় ।

এ অবস্থায় পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। একইসঙ্গে কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত নামিয়ে তার পরিবর্তে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে মঙ্গলবার (২৮ মে) সকাল পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে এবং সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।

এদিকে, ঘূর্ণিঝড় রেমালে ৪জন মারা গেছে।

ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ উপকূল অতিক্রম করে বর্তমানে কয়রা, খুলনার কাছে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমশ বৃষ্টিপাত ঝরিয়ে পরবর্তী ২-৩ ঘণ্টার মধ্যে কিছুটা দুর্বল হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। তবে আবহাওয়া অফিস বলছে, এই ঘূর্ণিঝড়টির পুরোপুরি প্রভাবমুক্ত হতে আরও ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।

এদিকে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট এই ঘূর্ণিঝড়টি রোববার রাত ৮টার দিকে উপকূলে আঘাত করে। এই ঝড়ের প্রভাবে গতকাল থেকে আজ সোমবার বেলা ১১টা পর্যন্ত পটুয়াখালী, সাতক্ষীরা, ভোলা, চট্টগ্রামে মোট ৪ জনের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আামদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবরে বিস্তারিত।
মেট্রোরেল চলাচল স্বাভাবিক

পটুয়াখালী: গতকাল রোববার দুপুরে পটুয়াখালী কলাপাড়ায় ঘূর্ণিঝড় রেমালের হাত থেকে ফুপু ও বোনকে রক্ষা করতে গিয়ে মো. শরীফ (২৭) নামের এক যুবক মারা গেছেন।

জানা গেছে, শরীফের ফুপু মাতোয়ারা বেগম কাউয়ারচর এলাকায় বসবাস করেন। ওই বাড়িতে তার বোনও ছিলো। বেলা ২টার দিকে অনন্তপাড়া থেকে শরীফ তার বড় ভাই ও ফুপাকে নিয়ে বোন ও ফুপুকে উদ্ধারে যায়। এসময় সমুদ্রের পানিতে কাউয়ারচর এলাকা ৫ থেকে ৭ ফুট পানিতে প্লাবিত ছিলো। সাঁতার কেটে তারা ফুপুর ঘরে যাওয়ার সময় ঢেউয়ে শরীফ হারিয়ে যায়। পরে এক ঘণ্টা পর ওই স্থান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে স্থানীয়রা।

মহিপুর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন তালুকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সাতক্ষীরা: রোববার সন্ধ্যায় সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নাপিতখালী আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পথে শওকত আলী মোড়ল (৭০) নামের এক বৃদ্ধ মারা যান। তিনি শ্যামনগর উপজেলার গাবুরা ইউনিয়নের নাপিতখালী গ্রামের মৃত নরীম মোড়ের ছেলে। গাবুরা ইউপি চেয়ারম্যান জিএম মাসুদল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ভোলা: ভোলায় ঘরচাপা পড়ে মনেজা খাতুন (৫০) নামে এক নারী মারা গেছেন। তিনি লালমোহনের পশ্চিম চরউমেদ ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চরউমেদ গ্রামের তেলী বাড়ির আব্দুল কাদেরের স্ত্রী। লালমোহন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।

চট্টগ্রাম: বৃষ্টিপাত ও জলাবদ্ধতার কারণে চট্টগ্রামের বায়েজিদ এলাকায় দেয়াল ধসে সাইফুল ইসলাম হৃদয় নামের এক যুবক মারা গেছেন। আজ সোমবার সকালে এই ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে।

এদিকে সোমবার (২৭) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরগুলোকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হলো। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ী অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধ্বস হতে পারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর