শাবান মাসে ৩ আমল

আরবিতে শাবান মাসের পরের মাসই হলো রমজান মাস। তাই মাসটির অনেক গুরুত্ব রয়েছে। আল্লাহর রাসূল (সা.) মাসটিতে অন্য মাসের তুলনায় বেশি রোজা রাখতেন। এছাড়াও মাসটিতে অনেক ইবাদত করতেন তিনি।
রাসূল (সা.) যেসব নফল ইবাদত করতেন তার অন্যতম একটি হলো- সপ্তাহের দুই দিন অর্থাৎ সোম ও বৃহস্পতিবারের রোজা।-খবর তোলপাড়।
হযরত আবু কাতাদা আনসারি (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে, রাসূল (সা)-কে সোমবার দিনে রোজা রাখার কারণ জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, এদিন আমি জন্ম নিয়েছি, আর এদিনই আমার উপর কোরআন নাজিল হয়েছে। (মুসলিম, হাদিস, ২৮০৭; ইবনে খুজাইমা, হাদিস, ২১১৭; মুসনাদে আহমাদ, হাদিস, ২২৫৫০; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস, ২৪২৮)
হযরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সা) বলেন, সোমবার ও বৃহস্পতিবার আল্লাহর কাছে আমল উপস্থাপন করা হয়। তাই রোজা থাকা অবস্থায় আমার আমল উপস্থাপন করা হোক- এটা পছন্দ করি।’ (তিরমিজি, হাদিস, ৭৪৭; সুনানে নাসায়ি, হাদিস, ২৬৬৭)
রাবিআ ইবনুল গাজ (রহ.) থেকে বর্ণিত, তিনি আয়শার (রা) কাছে রাসূল (সা)-এর রোজা রাখার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করেন। তখন তিনি জবাবে বলেন, রাসূল (সা) সোমবার ও বৃহস্পতিবারে রোজা রাখার ব্যাপারে খুবই মনোযোগী ছিলেন। (ইবনে মাজাহ, হাদিস, ১৭৩৯; ইবনে হিব্বান, হাদিস, ৩৬৪৩)
আইয়ামে বিজের রোজা
আইয়াম শব্দটি আরবি, যা ইয়াওম শব্দের বহুবচন। এর অর্থ হলো দিনগুলো। আর বিজ শব্দের অর্থ সাদা, শুভ্র। আইয়ামে বিজ দ্বারা চন্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ বোঝানো হয়। এই তারিখগুলোতে জ্যোৎস্নায় রাতগুলো শুভ্র ও আলোকিত হয়। বিশেষত মরুভূমিতে এটি বেশি দৃষ্টিগোচর হয়। এ কারণে তারিখগুলোকে একসঙ্গে বোঝাতে ‘আইয়ামে বিজ’ নামকরণ করা হয়েছে।
হযরত আবু যার (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা) বলেন, হে আবু যার! যখন তুমি মাসের মধ্যে তিন দিন রোজা রাখবে; তবে ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখবে।’ (তিরমিজি, নাসাঈ, মিশকাত)
আয়েশা (রা.) বলেন, রাসূল (সা) মাসের যেকোনো দিনে তিনটি সিয়াম রাখতেন। (মুসলিম হা/২৮০১; মিশকাত হা/২০৪৬)
আব্দুল্লাহ ইবনে আ’মর ইবনে আ’স (রা.) হতে বর্ণিত: রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘প্রতি মাসে তিনটি করে রোজা পালন, সারা বছর ধরে রোজা পালনের সমান’। (বুখারি শরীফ)
দোয়া পড়া
রাসূল (সা.) রজব ও শাবান মাসে রমজানের প্রস্তুতিমূলক কিছু বিশেষ আমল করতেন। মাস দুটিতে তিনি এই দোয়া পড়তেন,
উচ্চারণ: ‘আল্লাহুম্মা বারিকলানা ফি রাজাবা ওয়া শাবানা, ওয়া বাল্লিগনা রমাদান।’
অর্থ : ‘হে আল্লাহ! আমাদের জন্য রজব ও শাবান মাসকে বরকতময় করে দিন। আর আমাদের রমজান মাস পর্যন্ত পৌঁছে দিন।’ ( সুনানে নাসায়ি ও মুসনাদে আহমাদ)