সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ১০:৫৩ পূর্বাহ্ন
শুভেচ্ছা বার্তা:
আলোকিত রাজারহাট একটি বহুল প্রচারিত প্রিন্ট পত্রিকা। এটি নিয়মিত প্রকাশ হয়ে আসছে। পত্রিকাটির পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা। আলোকিত রাজারহাট এর ওয়েবসাইট কয়েকদিনের মধ্যে আপনাদের মাঝে উন্মুক্ত হবে। আপনি গর্বিত সাইটটির সঙ্গে থেকে নিয়মিত খবর দেখুন ও পড়ুন। আমরা আপনার সঙ্গেই আছি। ধন্যবাদ।

কুড়িগ্রামে চরাঞ্চলে পরীক্ষামূলকভাবে স্ট্রবেরী চাষ, সম্ভাবনার নতুন দূয়ার

রিপোর্টারের নাম / ৬৮ টাইম ভিউ
Update : বুধবার, ৫ মার্চ, ২০২৫

হুমায়ুন কবির সূর্য:
কুড়িগ্রামে এই প্রথম বাণিজ্যিকভাবে চরাঞ্চলে স্ট্রবেরী চাষ করে সফলতা পেয়েছে উদ্যোক্তরা। এতে করে লাভবান হাওয়ার পাশাপাশি চরাঞ্চলের জমিতে উচ্চ পুষ্টিমান সম্পন্ন উচ্চ মূল্যের ফলটি ভোক্তাদের চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি এই অঞ্চলের পিছিয়ে পরা জনগোষ্ঠীদের জন্য নতুন কর্মসংস্থানের দাঁড় উন্মোচন করবে বলে মনে করা হচ্ছে।

সরজমিন গিয়ে দেখা যায়, তিস্তা নদীর বিস্তির্ন চরাঞ্চলে ১২ একর জমিতে বাণিজ্যিকভিত্তিতে চাষ করা হয়েছে স্ট্রবেরী। হালকা সাদা, লাল, হলুদ, কমলা রঙের সাথে সবুজের সমারোহ চরাঞ্চলে যেন নতুন আবহ তৈরি করেছে। তপ্ত বালু রাশির মাঝে এই সবুজ চাদর যেন দৃষ্টিকে চরমভাবে আকর্স্মিত করছে। ঝলসানো রোদে যেন একটু পরম স্বস্থি।

স্থানীয় উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাক জানান, এখানকার মানুষ এসব জমিতে সাধারণত ভুট্টা চাষ করেন। সেচ এবং পরিবহন সমস্যার কারণে তারা বেশি লাভবান হতে পারেন না। আমরা এখানকার মাটি পরীক্ষা করে দেখেছি এখানে স্ট্রবেরী চাষ করা সম্ভব। পূজির অভাবে কাজ শুরু করতে দেরী হয়। পরে টাঙ্গাইলের প্রবাসী এক বন্ধুর সহযোগিতায় ১২ একর জমিতে ৩ লাখ স্ট্রবেরীর চারা রোপন করেছি। এতে আমাদের দেড় কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। সেচের অভাবে যাতে চারার কোন ক্ষতি না হয় এজন্য আধূনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা চায়না থেকে অটোমেটিক মেশিনের মাধ্যমে পানি সেচের কাজ করছি। এতে ব্যয় প্রচুর হচ্ছে। কিন্তু উচ্চ প্রোটিনযুক্ত এই ফলটি যদি আমরা লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী পাই, তাহলে ব্যবসায়ীরা লাভবান হবেন।

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার বজরা ইউনিয়নের চর সাতালস্কর গ্রামে তিস্তা নদীর বিস্তির্ন চরাঞ্চলে এই প্রথম বৃহৎ পরিসরে স্ট্রবেরী চাষ করা হয়েছে। ‘এ্যাসেট এগ্রো’ নামক একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এই কার্যক্রম শুরু করেছে।

প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার মাহবুব বিন মীর্জা জানান, গত বছরের নভেম্বর মাসে ৬টি জাতের তিনলক্ষ চারা রোপন করা হয়েছে। দেড় থেকে দুই মাসের মধ্যে ফলন শুরু হয়। আমরা কিছু স্ট্রবেরী উত্তোলন করেছি। বাজারে ৭শ’ থেকে ৮শ’ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। তবে আমাদের ৬টি জাতের মধ্যে ৪টি জাতের চারা ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় ফলন বিপর্যয় ঘটেছে। এতে কোম্পানী লোকসানে পরে গেছে। এখান থেকে আমাদের ১০ লক্ষ টন স্ট্রবেরীর উৎপাদন আশা করা হলেও অর্ধেক লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে কিনা সন্দেহ আছে। তবে এখানকার মাটি ও পরিবেশের কোন সমস্যা নেই। স্ট্রবেরী ঠান্ডা বালুযুক্ত পলি মাটিতে ভাল ফলন হয়। এখানকার পরিবেশ স্ট্রবেরীর জন্য ততটা চ্যালেঞ্জিং নয়।
উদ্যোক্তা আব্দুর রাজ্জাক আরও জানান, স্ট্রবেরী সাধারণত: বিদেশ থেকে আমদানী করা হয়। পুষ্টিমান সম্পন্ন এই উচ্চমূল্যের ফলটির দেশে প্রচুর চাহিদা রয়েছে। সঠিক বীজ ও চারা নির্বাচন করা গেলে এই অঞ্চলে স্ট্রবেরীর প্রসার ঘটানো সম্ভব। এতে করে এই এলাকায় নতুনভানে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে, এলাকার কৃষকরা সম্পৃক্ত হবেন এবং অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবেন।

এলাকার কৃষক আকবর আলী জানান, স্ট্রবেরীর নাম শুনছি। এবার প্রথম দেখলাম। খেতেও সুস্বাধু। ভাল চারা এবং সরকারি বেসরকারি সহযোগিতা পেলে আমরাও উৎপাদন করতে পারবো।

বিষয়টি নিয়ে কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এখানকার আবহাওয়া ও মাটি স্ট্রবেরী চাষের জন্য অনুকূল হলে এই অঞ্চলের কৃষকদের জন্য একটি লাভজনক ফল হিসেবে বিবেচিত হবে। কৃষি বিভাগ থেকে সার্বিকভাবে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে। সাফল্য পেলে এলাকার সবার জন্য কর্মসংস্থান ও এই এলাকার অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর