রবিবার, ১৮ মে ২০২৫, ০১:১৩ পূর্বাহ্ন
শুভেচ্ছা বার্তা:
আলোকিত রাজারহাট একটি বহুল প্রচারিত প্রিন্ট পত্রিকা। এটি নিয়মিত প্রকাশ হয়ে আসছে। পত্রিকাটির পরিবারের পক্ষ থেকে সবাইকে শুভেচ্ছা। আলোকিত রাজারহাট এর ওয়েবসাইট কয়েকদিনের মধ্যে আপনাদের মাঝে উন্মুক্ত হবে। আপনি গর্বিত সাইটটির সঙ্গে থেকে নিয়মিত খবর দেখুন ও পড়ুন। আমরা আপনার সঙ্গেই আছি। ধন্যবাদ।

উলিপুরের জনপ্রিয় ক্ষীরমাহন

রিপোর্টারের নাম / ৭৯ টাইম ভিউ
Update : মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫
Oplus_131072

আব্দুল মালক:

ভোজন রসনায় কুড়িগ্রামের উলিপুরে অনন্য এক মিষ্টান্নের নাম ‘ক্ষীরমোহনথ। এটি আদি মিষ্টি না হলেও পঞ্চাশ দশকের শেষ ও ষাটের দশকের শুরুতে তৈরি ও বিপনন শুরু হয়। ওই সময় এ অঞ্চলের মানুষজনের আর্থিক স্বচ্ছলতা কম থাকায় তা কিনে খাওয়া সাধাররণ মানুষের নাগালের বাইরে ছিল। তখন একটি ক্ষীরমোহনের দাম ছিল ৬ আনা। কারণ তখন রেস্টুরেন্ট ও বাড়ির টেবিলে এই মিষ্টান্নটি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেনি। তবে এর স্বাদ ও গন্ধ তখন থেকেই ছিল জিভে পানি আসার মতো। আশির দশক থেকে জনপ্রিয় এই মিষ্টির সুখ্যাতি ছড়িয়ে পড়ছে দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বাইরের বিভিন্ন দেশে।

জানা যায়, ব্রিটেনের রাণী এলিজাবেথ এই মিষ্টি খেয়ে ভুঁয়সী প্রশংসা করেছেন। ক্ষীরমোহন তৈরির ইতিহাস প্রসঙ্গ প্রবীণদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ১৯৫৮ সালে ফরিদপুরর গোয়ালন্দ থেকে সুধীর সরকার (ওরফে সুধীর ময়রা) নামে এক ব্যক্তি উলিপুরে আসেন। তিনি মিষ্টির কারিগর হিসেবে চাকুরি নেন কছির মিয়ার রেস্টুরেন্টে। চাকুরির শর্ত ছিল, তিনি এমন মিষ্টি বানাবেন যা দিয়ে দোকানের খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। রাজি হন সুধীর ময়রা। তিনি চাকুরির শুরুতে এই এলাকায় প্রথম ক্ষীরমোহন তৈরি করে বাজিমাত করে ফেলেন। তারই দেখা, উলিপুরের প্রখ্যাত মিষ্টান্নের কারিগর মনমোহন হালাই তৈরি করেন ক্ষীরমোহন।

নদ নদী বেষ্টিত উলিপুর উপজেলার গ্রামাঞ্চলে প্রাকৃতিক উপায় বেড়ে ওঠা সবুজ ঘাস, লতা-পাতাসহ নানান গো-খাদ্য বাড়িতে পালা গাভিকে খেতে দেয়া হতো। তাই ওই সময় গরুর দুধ ছিল খাঁটি দুধের গুনাগুণ সমদ্ধ। সেই দুধ থেকে তৈরি ক্ষীরমোহন স্বাদ-গন্ধ ছিল অনন্য। এখনকার চেয়ে দেখতে একটু লম্বাট এই মিষ্টি ক্ষীরের প্লেট ভরিয়ে টেবিল উপস্থাপনের আগই ‘ঘ্রাণন অর্ধ ভোজনথ হয়ে যেতা। এখন দেখি উলিপুর শব্দ উচারিত হল তার সাথে উচারিত হয় অসাধারণ এই মিষ্টির নাম ‘ উলিপুরের ক্ষীরমোহনথ।

খাঁটি ছানা থেকে তৈরি মিষ্টি প্রথম গরম চিনির রস জ্বাল দেয়া হয়। মিষ্টি হয়ে এল তা থেকে রস ঝরিয়ে নিয়ে দুধ জ্বাল দেয়া হয়। দুধ ক্ষীর পরিণত হলো ও মিষ্টির ভিতর ক্ষীর ঢুকে গলে তৈরি হয় লোভনীয় ‘ক্ষীরমোহনথ। সাধারণত এক মণ দুধ জ্বাল দিয়ে ১৭ থেকে ১৮ কেজি ক্ষীর তৈরি করা হয়। এতে যুক্ত হয় ২৫০ গ্রাম ঘী। এর সাথে ৮ কেজির মতো মিষ্টি ক্ষীর জ্বাল দিয়ে ২৪/২৫ কেজি ক্ষীরমোহন বানানা হয়। উলিপুরের সব রেস্টুরেন্টে এই মিষ্টি পাওয়া গেলেও নির্দিষ্ট কিছু দোকানের ক্ষীরমোহন উন্নতমানের। সাইজ আগের চেয়ে একটু ছোট হলেও এর স্বাদ নিতে চান ছোট-বড় সকলই। এখন প্রতিটি ক্ষীরমোহন হোটেল এন্ড রেস্টুরেন্টে ৪০ টাকা ও প্রতি কেজি ৪৮০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা দরে পাওয়া যায়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর