মঙ্গল শোভাযাত্রায় থাকছে দু’হাত মেলে দাঁড়িয়ে থাকা আবু সাঈদের মোটিফ

পহেলা বৈশাখে এবারের মঙ্গল শোভাযাত্রায় গণঅভ্যুত্থানকে প্রতিফলিত করে দুই হাত প্রসারিত করে দাঁড়িয়ে থাকা আবু সাঈদের একটি মোটিফ রাখা হবে। পাশাপাশি প্রধান আরো তিনটি মোটিফ থাকবে এতে। এগুলো হলো- একটি ফ্যাসিস্ট মুখচ্ছবি, শান্তির বার্তা নিয়ে পায়রা আর সোনারগাঁ লোকশিল্প জাদুঘরের কাঠের বাঘ।-খবর তোলপাড়।
আগামী ১৪ এপ্রিল পহেলা বৈশাখকে বরণ করে নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলায় প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। সেখানে চলছে মোটিফ, মুখোশসহ অন্যান্য অনুষঙ্গ তৈরির কাজ।
এবার দুই দিনব্যাপী উদযাপিত হবে পহেলা বৈশাখ। এবারের প্রতিপাদ্য রাখা হয়েছে- ‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’।
গতকাল সোমবার বাংলা নববর্ষ-১৪৩২ উদযাপনের কর্মসূচি প্রণয়নের লক্ষ্যে এক সভায় বর্ষবরণের যাবতীয় আলোচনা হয়। এতে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মুস্তফা সরওয়ার ফারুকী অংশ নেন।
মঙ্গলবার জানতে চাইলে চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজাহারুল ইসলাম শেখ সমকালকে বলেন, এবার চারটি প্রধান মোটিফ থাকবে শোভাযাত্রায়। গণঅভ্যুত্থানকে তুলে ধরতে আবু সাঈদের দুই হাত মেলে দাঁড়িয়ে থাকা চিত্রটির একটি মোটিফ, সোনারগাঁ লোকশিল্প জাদুঘরের একটি কাঠের বাঘ, একটি ফ্যাসিস্টের মুখচ্ছবি আর একটি শান্তির পায়রা।
আবু সাঈদের মোটিফ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেককে কথা বলতে দেখা গেছে। ধর্মীয় বিধিনিষেধের জায়গাটিও অনেকে বলছেন। এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে চারুকলার ডিন বলেন, এরকম কোনো আপত্তি এখনও আমাদের জানা নেই। আমরা চিন্তা করে কাজও শুরু করেছি। যদি পরিবারের আপত্তি থাকে তাহলে আমরা কথা বলে নেব প্রয়োজনে।
তিনি বলেন, আবু সাঈদকে নিয়ে কোনো বাস্তবিক স্ট্যাচু, ভাস্কর্য বা চিত্র হচ্ছে না। গণঅভ্যুত্থানের প্রতীক হিসেবে তার ঐতিহাসিক হাত মেলে দাঁড়িয়ে থাকা ড্রয়িং- সেটিকে প্রতীকীভাবে তুলে ধরবো আমরা।
মঙ্গলবার চারুকলায় ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষার্থীরা কাজ করছেন। মাঠে বাঁশের কঞ্চি দিয়ে তৈরি হচ্ছে মোটিফগুলো। অন্যদিকে জয়নুল গ্যালারি এবং অনুষদের বিভিন্ন কক্ষে বিভিন্ন ধরনের মুখোশ, মাটির সরায় ফুল, পাতার নকশা আঁকা হচ্ছিল। শিক্ষার্থীরা বলেন, এগুলো সুলভে বিক্রি করে শোভাযাত্রার খরচ মেটানো হবে।
প্রস্তুতি নিয়ে আজাহারুল ইসলাম বলেন, প্রস্তুতি কেবল শুরু হয়েছে। ১৩ তারিখের আগে শেষ করতে হবে। আমাদের কাজ চলছে। ছুটির কারণে একটু মুশকিল হয়েছে। ছুটির পর শিক্ষার্থীরা ফিরলে পুরোদমে কাজ শুরু হবে।
১৯৮৯ সাল থেকে পয়লা বৈশাখে শোভাযাত্রা করে আসছে। শুরুতে নাম ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা। নব্বইয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পটভূমিতে অমঙ্গলকে দূর করে মঙ্গলের আহ্বান জানিয়ে শোভাযাত্রার নামকরণ হয় মঙ্গল শোভাযাত্রা।