‘এখন শুধু মোথাবাড়ী, সামনে হবে বাড়ী বাড়ী’-১

ইংরেজি ভার্ষণে গিয়ে ইংরেজিতে পড়তে পারেন
।। শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক।।
পশ্চিমবঙ্গের মোথাবাড়ী ঘটনার প্রেক্ষিতে লেখা আমার বই ‘ভারত ভাগ হয়েছে ধর্মের জন্যে’ (প্রকাশক: আনন্দ প্রকাশনী) প্রাসঙ্গিক মনে হলো, তাই এ লেখা, তবে বলা ভালো, ‘এখন শুধু মোথাবাড়ী, সামনে হবে বাড়ী বাড়ী’। পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু বুঝতে পারছেন না যে, তাঁদের সামনে মহাবিপদ ঘনিয়ে আসছে। ওহে হিন্দু, উদারতা ভাল, কিন্তু মুসলিম তোষণ করে স্বজাতির বিনাশ উদারতা নয়, ভীরুতা, কাপুরুষতা, দুর্বলতা। বাঁচতে হলে, পরবর্তী প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে ‘ওঠ, জাগো’, সময় আর হাতে বেশি নেই! পালিয়ে বাঁচা যায়না, বাঁচার আর এক নাম সংগ্রাম। শ্রীগীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বারবার বলেছেন, ‘ওঠ, যুদ্ধ কর’। এ লড়াই বাঁচার লড়াই। এ লেখা পশ্চিমবাংলার হিন্দু’র জন্যে-।
বাঙ্গালী হিন্দুর একটি গৌরবময় ইতিহাস আছে। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙ্গালী হিন্দু’র অবদান অতুলনীয়। বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্যে হিন্দুদের ত্যাগ ও অবদান অপরিসীম। অথচ বাংলাদেশে হিন্দুরা এখন নিজদেশে পরবাসী, অত্যাচারিত, নিপীড়িত। বিভিন্ন পরিসংখ্যান, তথ্য, উপাত্ত জানায়, ১৯৪৭’র পর থেকে এপর্যন্ত পূর্ব-বাংলা বা আজকের বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫কোটি হিন্দু হারিয়ে গেছে। এতবড় বিপর্যয় পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল, এটি ‘নীরব গণহত্যা বা নীরব হিন্দু হত্যা’। পশ্চিমবঙ্গ ধীরলয়ে সেইদিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানে হিন্দু নির্যাতনের কাহিনীর আলোকে ২০২৫-এ দাঁড়িয়ে একথা বলা যায় যে, পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুরা নিরাপদ নন।
আমরা ঘরপোড়া, তাই সিঁদুরের মেঘ দেখে টের পাই। পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু কমছে, মুসলিম বাড়ছে, সমস্যা বাড়ছে, আরো বাড়বে। বাংলাদেশে হিন্দু কমছে তো কমছেই, এখন ৮%। পাকিস্তানে <২%। নিরোদ সি চৌধুরী তাঁর ‘আত্মঘাতী বাঙ্গালী’ বইয়ে এই হতভাগ্য ‘হিন্দু-বাঙ্গালীর’ কথাই বলেছেন, বাঙ্গালী হিন্দু অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে তা বলা বাহুল্য। ভারত ভাগ হয়েছিলো ধর্মের ভিত্তিতে, পুরোপুরি জনসংখ্যা বিনিময় হওয়া উচিত ছিলো। তা হয়নি, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান আজ মুসলিম অধ্যুষিত রাষ্ট্র, হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায় নিশ্চিহ্নপ্রায়। ভারত সরাইখানা। যারা একদা বললো, ‘হিন্দুদের সাথে থাকা যায়না’, তাঁরা বহাল তবিয়তে ভারতে থাকলো। যারা ‘লড়কে লেঙ্গা পাকিস্তান’ নিয়ে ঘরে ফিরলো তাঁরা হিন্দুদের কঁচুকাটা করে বিদায় দিলো। কি চমৎকার তাই-না? একটি ছাগলকে বধ করার সময় পাশের ছাগলটি কাঁঠাল পাতা চিবায়, পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুর অবস্থা অনেকটা তাই, তারা বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে হিন্দু নিশ্চিহ্ন হতে দেখে ‘কাঁঠাল-পাতা’ চিবাচ্ছে। অবিভক্ত বাংলায় মুসলমান বারবার এককাট্টা হয়ে বিভক্ত হিন্দুদের পরাজিত করেছে। স্বাধীনতার পূর্বে অবিভক্ত বাংলায় কোন হিন্দু বাংলার মুখ্যমন্ত্রী/ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন না (একটু সংক্ষিপ্ত সময়ের জন্যে হলেও বাংলার প্রধানমন্ত্রী বলা হয়েছে), যারা ছিলেন তারা হচ্ছেন স্যার খাজা নাজিমুদ্দিন, এ,কে ফজলুল হক ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। ভারত স্বাধীন হলে হিন্দুরা সেই সুযোগ পায়, যদিও তা আর বেশিদিন ধরে রাখতে পারবেন বলে মনে হয়না। guhasb@gmail.com; ‘এখন শুধু মোথাবাড়ী, সামনে হবে বাড়ী বাড়ী’-২ ‘আমেরিকান থিঙ্কার’ জেনেট লেভি’র একটি নিবন্ধ ছাপিয়েছে, এর হেডিং ছিলো, ‘মুসলিম টেকওভার অফ ওয়েষ্ট বেঙ্গল’। আমার লেখাটি সেই আলোকে, বলা যায় জেনেট লেভি’র স্পষ্ট ও বাস্তব কথাবার্তা, আমাকে উৎসাহিত করেছে কিছু ঘটনা, বা প্রশ্নোত্তর চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিতে। লেভির প্রবন্ধটি প্রকাশিত হয়, ২২শে ফেব্রুয়ারী ২০১৫, প্রায় এক দশক, পরিস্থিতি এখন আরো ঘোলাটে হয়েছে, হিন্দুরা আরো কোনঠাসা হচ্ছে, কোথাও কোথাও হিন্দুদের অবস্থা বাংলাদশের হিন্দুদের চেয়েও খারাপ? বলে রাখা ভাল, আমি বাংলাদেশের মানুষ, থাকি আমেরিকায়, আমি বিজেপি নই, কংগ্রেস নই, আমার এসব কিচ্ছু হবার প্রয়োজন পড়েনা। আমি বাংলাদেশে যা দেখেছি, পশ্চিমবাংলায় এখন তাই দেখছি। বাংলাদেশ থেকে হিন্দুরা প্রতিনিয়ত বিতাড়িত হচ্ছে, তাঁদের ওপর অত্যাচারের ষ্টীমরোলার চলছে, কারণ, দেশটি কাগজে-কলমে গণপ্রজাতন্ত্রী হলেও আদতে ৯০% মুসলিম হওয়ার কারণে এটি একটি সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র, এবং কখনো-সখনো পাকিস্তান থেকে ভয়াবহ। পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের যাতে বাংলাদেশের হিন্দুদের ভাগ্য বরণ করতে না-হয়, সেজন্যেই এ লেখা। পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুদের যদি বোধোদয় হয় ভালো, নাহলে কিচ্ছু করার নেই? কেউ হয়তো প্রশ্ন করতে পারেন, মুসলিম টেকওভার হলে ক্ষতি কি? বিশ্বে এসময়ে ৫০+ মুসলিম দেশ আছে, এর কোনটিই বসবাসযোগ্য নয়, আপনি সেখানে থাকতে চাইবেন না, চাইলেও আপনাকে থাকতে দেয়া হবেনা। অন্য দেশের মুসলমানরা যদি সেখানে গিয়ে থাকতে চান, তাও নয়? বিশ্বে এখন ৮৬% শরণার্থী মুসলমান, এঁরা কেউই সৌদি আরব, পাকিস্তান, ইরান, আফগানিস্তান বা অন্য কোন মুসলিম দেশে আশ্রয় চাননা, চাইলেও নেবেনা। এঁরা সবাই উন্নত বিশ্বে যেতে চায়, এবং সেখানে গিয়ে সমস্যার সৃষ্টি করে, এবং ঐসব দেশগুলোকে শরিয়া রাষ্ট্র বানাতে চায়। এরপর আসুন ভারতের একমাত্র মুসলিম রাজ্য কাশ্মীরের কথায়। সেখানে গত সাত দশক কি দেখেছেন? শুধু মারামারি, কাটাকাটি, সন্ত্রাস, বোমাবাজি। পার্শ্ববর্তী দেশ পাকিস্তান ও বাংলাদেশের দিকে তাঁকান, শান্তি নেই! এঁরা শুধু ভারত-বিরোধী তা নয়, এঁরা হিন্দু-বিরোধী। সম্প্রতি কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বক্তব্যে যদি আপনার কানে জল না যায়, তাহলে কিচ্ছু করার নেই, আপনি ইসলামী শাসনের জন্যে তৈরী থাকুন। ফিরহাদ হাকিম তার মনের কথা বলেছেন, শিক্ষিত-অশিক্ষিত সকল হাকিমের’ই এটি মনের কথা, সামান্য কিছু ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়, আছে, তবে ব্যতিক্রম তো শুধুই ব্যতিক্রম। (আমার বই ‘ভারত ভাগ হয়েছে ধর্মের জন্যে’, , প্রকাশক: আনন্দ প্রকাশনী অনুকরণে)। guhasb@gmail.com; ‘এখন শুধু মোথাবাড়ী, সামনে হবে বাড়ী বাড়ী’-৩ জেনেট লেভি তার নিবন্ধে তসলিমা নাসরিনের বিরুদ্ধে কলকাতার মুসলিমদের বিশাল বিক্ষোভের প্রসঙ্গ টেনেছেন। আমি সেদিকে যেতে চাইনা। রাজনৈতিক কারণে, বা তসলিমাকে গালি দিয়ে ‘বড়-কবি’ হবার প্রচেষ্টায় কিছু হিন্দু তসলিমার বিরুদ্ধে থাকলেও বিক্ষোভটি করেছিলো মূলত: মুসলমানরা, ফলশ্রুতিতে ‘লজ্জা’ বইটি নিষিদ্ধ হয়। বাংলাদেশে লজ্জা নিষিদ্ধ হয় ৯০% মুসলিম এবং মুসলিম শাসকের কারণে, পশ্চিমবঙ্গে বইটি নিষিদ্ধ হয় হিন্দু’র হাতে, মুসলমানের চাপে। লজ্জ্বায় কি আছে? তেমন কিচ্ছু না, সামান্য হিন্দু-অত্যাচারের কাহিনী, বাস্তবে চিত্রটি অনেক ভয়াবহ। জ্যোতিবসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য্যরা সাড়ে তিন দশক কম্যূনিষ্ট শাসন চালিয়ে কিছু হিন্দুকে ‘সমাজতান্ত্রিক পিল’ খাওয়াতে সফল হলেও মুসলমান সেই নিষিদ্ধ পিল খায়নি। মুসলমান কমিউনিষ্ট হয়না। সোভিয়েত ইউনিয়ন সাত দশক কমিউনিষ্ট শাসনেও মুসলমান কমিউনিষ্ট হয়নি। চীনের উইঘুর মুসলমান এতো অত্যাচারের পরও কমিউনিষ্ট হয়নি। এদের বেশিরভাগ মানুষের চিন্তাধারা ১৪শ’ বছরের পুরানো, এথেকে তারা বেরিয়ে আসতে পারেনি, বেরিয়ে আসতে চায় না, আগামীতে চাইবে সেই সম্ভবনা দেখা যাচ্ছেনা। ঘরের পাশে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু হলে কলকাতায় পার্ক-সার্কাসে মুসলিমরা বিশাল সমাবেশ করেছিলো। এই যুদ্ধাপরাধীরা ৩০লক্ষ মানুষ হত্যা, ২লক্ষ মা-বোনের ইজ্জ্বত লুন্ঠনকারী, এদের পক্ষে যাঁরা সমাবেশ করে তাদের চরিত্রটা কেমন হতে পারে? সিনেটর টেড কেনেডী ১৯৭২ সালে তার রিপোর্টে বলেছেন, বাংলাদেশে ভিকটিমদের ৮০% হিন্দু, টার্গেট করে হিন্দুদের হত্যা করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে পশ্চিমবঙ্গের মুসলমানরা যতবড় সমাবেশ করেছিলো, বাংলাদেশেও তা হয়নি। সেইসব যুদ্ধাপরাধীর বিচার হয়েছে, অনেকের রায় কার্যকর হয়েছে, বিচার এখনো চলছে। জেনেট লেভি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের মুসলিম তোষণের দিকটিও তুলে ধরেছেন। জ্যোতি বসু থেকে মমতা ব্যানার্জী পর্যন্ত শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকতে যেভাবে মুসলিম তোষণ করছেন, তা লজ্জ্বাজনক। আপনা ভালো পাগলেও বুঝে, বুঝেনা শুধু পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু। বাংলাদেশ ও পাকিস্তান থেকে হিন্দু বিতারণকে এরা শুধু দেশভাগের কুফল হিসাবে বিবেচনা করেছে। একবারও ভাবেনি যে, শুধুমাত্র দেশভাগই যদি কারণ হতো, তাহলে ভারত বা পশ্চিমবঙ্গ থেকে মুসলমানরা বিতাড়িত হয়নি কেন? দেশভাগ এর মূল কারণ হলেও পশ্চিমবঙ্গ ও ভারত সরকার এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠী হিন্দুরা মেরে-কেটে মুসলিমদের তাড়িয়ে দেয়নি। পক্ষান্তরে পাকিস্তান ও বাংলাদেশে সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থনে, এবং বৃহত্তর মুসলিম জনগোষ্ঠীর একটি বৃহৎ অংশ হিন্দুদের মেরেকেটে, ধর্ষণ, লুট, জমিজমা, ব্যবসাপাতি জবরদখল করে একবস্ত্রে বিতাড়ন করেছে। ‘হিন্দু-মুসলিম ভাই-ভাই’- এ শ্লোগান শুধু হিন্দুরা দেয়, মুসলমানরা দেয়না, ইসলাম মানলে হিন্দু একজন মুসলমানের ভাই হতে পারেনা। ইসলাম শেখায় হিন্দুরা বিধর্মী, বিধর্মী ভাই-বন্ধু হতে পারেনা। তাহলে কি হিন্দু-মুসলমান বন্ধু হতে পারেনা? পারে, এবং বন্ধুত্ব আছে, ছিলো, কিন্তু মাঝখানে একটি দেয়াল আছে, যা আপনি দেখতে পাচ্ছেন না, বা আপনি দেখতে চাচ্ছেন না? ‘ঈশ্বর-আল্লাহ তেরি নাম, সবকো সুমতি দে ভগবান’-এটিও শুধু হিন্দুরাই বলে, মুসলমানরা তা কখনোই বলেনা। তাঁরা তাঁদের হিসাব বুঝে, আল্লাহ’র সাথে ঈশ্বরকে শরিক করতে তাঁরা রাজি নন, তাঁরা রাজি থাকবেন কেন, তারা তো বলেন, ‘লা-শরিক আল্লাহ’, অর্থাৎ আল্লাহ’র কোন অংশীদার নেই। বাংলায় বা ভারতে হিন্দু-মুসলমান মিলনের যাকিছু আছে সবই হিন্দুদের জন্যে, হিন্দুরা তা মান্য করেছে, মুসলমান তা কখনো মানেনি, বিশ্বাস করেনি। হিন্দু সেটি বুঝেও না বোঝার ভাণ করে, ‘সেক্যুলার’ হবার ভনিতা দেখায়। তেল ও জল মিলে না, ব্যাস্তবতা হচ্ছে, হিন্দু-মুসলমান এক নয়? মুসলমানরাই বলেছিলো, ‘হিন্দুদের সাথে থাকা যায়না’-তাই পাকিস্তান সৃষ্টি। ভাতের জন্যে ভারত ভাগ হয়নি, ভারত ভাগ হয়েছে ধর্মের জন্যে। (আমার বই ‘ভারত ভাগ হয়েছে ধর্মের জন্যে’, , প্রকাশক: আনন্দ প্রকাশনী অনুকরণে)। guhasb@gmail.com; ‘এখন শুধু মোথাবাড়ী, সামনে হবে বাড়ী বাড়ী’-৪ সব ধর্ম সমান; সব ধর্ম শান্তির পক্ষে কথা বলে- এ আপ্তবাক্যও শুধু হিন্দুরাই বলে। মুসলমানরা তা বলেনা, তারা বলেন, ‘ইসলাম সর্বশ্রেষ্ট ধর্ম’, এবং তারা অন্যধর্মকে ‘মিথ্যা’ হিসাবে বর্ণনা করেন। মেয়র ফিরহাদ হাকিম তো তাই বলেছেন? সব ধর্ম শান্তির কথা বলেনা। শান্তির সংজ্ঞা একেক ধর্মে একেক রকম। হিন্দু মন্দিরের সামনে মুসলমান নামাজ পড়তে পারে, পূজা প্যান্ডেল থেকে মুসলমান আযান দিতে পারেন, কিন্তু কোন মসজিদে কি ‘হনুমান চালিশা’ পাঠ হয়েছে বলে শুনেছেন? মসজিদ প্রাঙ্গনে দুর্গাপূজা হবার কথা ভাবতে পারেন? বলছি যে, এসব ভণ্ডামির আদৌ কি কোন প্রয়োজন আছে? হিন্দু হিন্দুর ধর্ম পালন করবে, মুসলমান তার ধর্ম পালন করবে। প্রগতিশীল সাজতে গিয়ে, সেক্যুলার হতে গিয়ে হিন্দু রাস্তায় দাঁড়িয়ে গরু খায়, মন্দিরে মুসলমানকে ডেকে আনে। মুসলমান তা করেনা, তারা হিন্দুদের তোষণ করেনা, হিন্দুকে মসজিদে ডেকে আনে না, বরং মমতা ব্যানার্জীকে হিজাব পড়ায়, রমজানে হিন্দু টুপি পরে ইফতার খায়। ফিরহাদ হাকিমের মা হিন্দু, তিনি কিন্তু কট্টর মুসলমান, এবং এন্টি-হিন্দু। কিছু বোঝা গেলো? শর্মিলা ঠাকুরের সন্তান সব মুসলমান। বিষয়টি তা-ই! হিন্দু মন্দিরে নামাজ পড়তে দেয়াটা উদারতা নয়, ‘তোষামোদী’। উদারতা ভালো, যত্রতত্র উদারতা মানায় না? আপনি যাকে বন্ধু ভাবেন,তিনি আপনাকে ‘কাফের’ ভাবে, আপনার বোন বা কন্যাটিকে মুসলিম বানাতে সচেষ্ট থাকে। আমি বাংলাদেশের মানুষ, আমার সকল বন্ধুবান্ধব মুসলমান, তারা আমায় পছন্দ করে, ভালবাসে। এসবই ব্যক্তিগত পর্যায়ে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে তারা কেউ ভারতকে পছন্দ করেনা, সবাই এন্টি-ইসরাইল, প্রো-হামাস, পিএলও সমর্থক। আমেরিকা-ইউরোপ বাস করেও তারা এন্টি-আমেরিকান, এন্টি-ইউরোপ। এঁরা সবাই প্রো-এরদোগান, কারণ তিনি মুসলমানের পক্ষে কথা বলেন, তিনি এন্টি-আমেরিকান। জার্মানীতে সদ্য বামপন্থীরা নির্বাচনে জিতেছে, মুসলমানরা একচেটিয়া তাদের ভোট দিয়েছে, কারণ তারা জানে কট্টরপন্থীরা ক্ষমতায় এলে তাদের সমস্যা হবে, বামরা এলে তারা ভালো থাকে, কিন্তু বাম হবেনা। ভারতে মোদী এবার কম সংখ্যক আসন জিতেছেন, কারণ মুসলমানরা তাকে বয়কট করেছে, তারা বোঝে মোদী থাকলে ‘ইউনিফর্ম সিভিল কোড’ আসবে। পশ্চিমবঙ্গে মমতা ব্যানার্জী একচেটিয়া মুসলিম ভোট পান, বিজেপি ভোট পায়না। মমতাকে মুসলমানরা ভালবাসে? মোটেও না, মমতাকে তাঁরা ক্ষমতায় রাখছে, কারণ তারা জানে মমতা হিন্দুত্বের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে মুসলমানের স্বার্থ রক্ষা করবে, করছে। বাংলাদেশের হিন্দু মমতাকে মোটেই পছন্দ করেনা, তিস্তার জল না দিলেও মুসলমানরা তাঁকে পছন্দ করে, কারন তাঁর মুসলিম-প্রীতি। মুসলমান তার স্বার্থ বুঝে, হিন্দু বুঝে না। মমতাকে তারা ততক্ষন ব্যবহার করবে, যতক্ষন তিনি তাদের স্বার্থ রক্ষা করবেন। প্রয়োজন শেষে তারা মমতাকে ছুঁড়ে ফেলে দেবেন। ১৯৪৭ সাল থেকে মুসলমানরা রাজনীতিতে বারবার হিন্দুদের ধরাশায়ী করেছে, নেহেরু থেকে মমতা পর্যন্ত সবাই তাঁদের হাতের ক্রীড়নক মাত্র। (আমার বই ‘ভারত ভাগ হয়েছে ধর্মের জন্যে’, , প্রকাশক: আনন্দ প্রকাশনী অনুকরণে)। guhasb@gmail.com; ‘এখন শুধু মোথাবাড়ী, সামনে হবে বাড়ী বাড়ী’-৫ আপনি নিশ্চয় লক্ষ্য করেছেন, কিছু হিন্দু, বামপন্থী বা তথাকথিত বুদ্ধিজীবী বেশ জোর দিয়েই বলেন, ‘ঈশ্বর বলে কিছু নেই। এঁরা কিন্তু বলেনা যে, ‘আল্লাহ বলে কিছু নেই’? মুসলমান যারা নিজেদের প্রগতিশীল ভাবতে পছন্দ করেন, তারাও কিন্তু ঈশ্বরের বিরুদ্ধে কথা বলেন, আল্লাহ’র বিরুদ্ধে নয়? ভেবেছেন, কেন? মসজিদে নিরাপত্তার প্রয়োজন হয়না, মন্দিরে নিরাপত্তা লাগে, কেন? বাংলাদেশে পুলিশ প্রহরা ব্যতীত দুর্গাপূজা সম্ভব নয়, ভারতে ঈদের নামাজে কি পুলিশ লাগে? কেন লাগে না? ভারতে কখনো হজ্ব যাত্রীদের ওপর হামলা হয়নি, কিন্তু অমরনাথ যাত্রীদের ওপর ২৭ বছরে ৩৬ বার আক্রমণ হয়েছে। ওহে উদার হিন্দু, কখনো ভেবেছো কি যে, পূর্ব-বাংলার ২৯.৭% (১৯৪৭) কেন আজ মাত্র ৮% এবং একই সময়ে পশ্চিমবঙ্গের ৮% মুসলমান কেন আজ ২৭%? ঠিক এ সময় (১৭ই জুলাই ২০২৪) বাংলাদেশে কোটা-বিরোধী আন্দোলন হচ্ছে, পশ্চিমবঙ্গের কিছু মানুষ তাঁদের সমর্থনে বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সামনে আন্দোলনকারীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে সমাবেশ করে। অথচ পশ্চিমবঙ্গে মুসলিম কোটা, ওবিসি কোটার বিরুদ্ধে টু-শব্দটি করেনা? বাংলাদেশে কিন্তু হিন্দুদের জন্যে কোন কোটা নেই! আপনি কি জানেন, ভারত ছাড়া গণতান্ত্রিক বিশ্বে কোথাও ‘পার্সোনাল ল বোর্ড’, ‘ওয়াকফ বোর্ড’ নেই! ভারতে, বিশেষত: পশ্চিমবঙ্গে সংখ্যালঘু বলে মুসলিমদের সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে, আর ধর্মনিরপেক্ষতার টুপি পড়িয়ে হিন্দুদের অধিকার কেঁড়ে নেয়া হয়েছে। তুরস্কের নেতা তায়িপ এরদোগান বলেছেন, “The mosques are our barracks, the domes are our helmets, the minarets are our bayonets and the faithful soldiers..” তিনি আরো বলেছেন, “The term moderate Islam is ugly and offensive, there is no moderate Islam, Islam is Islam.” অতি সম্প্রতি লোকসভায় দাঁড়িয়ে বিরোধী দলীয় নেতা রাহুল গান্ধী সগর্বে হিন্দুদের ‘হিংস্র’ বলেছেন। মহাত্মা ডেভিড ফ্রলে অনেক আগেই বলে রেখেছেন যে, “You cannot criticize Islam in Pakistan because it is the majority. You cannot criticize Islam in India because it is a minority. Yet you can criticize Hinduism in India because it is a majority and in Pakistan because it is a minority. Yet Hindus are said to be intolerant. পক্ষান্তরে দেখুন, হিন্দুদেরপ্রায় সকল দেবদেবী যুদ্ধ করেছেন, তাদের সবার হাতে অস্ত্র। গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বারংবার বলেছেন, ‘ওঠ, যুদ্ধ কর’। আর হিন্দু সকল অস্ত্র দেবতার হাতে দিয়ে নিজে নিরস্ত্র হয়ে বসে আছে। হিন্দুরা চক্রধারী শ্রীকৃষ্ণের পূজা করতে ভুলে গেছে, শীবের ত্রিশূল কেঁড়ে নিয়ে হাতে ‘বেলপাতা’ ধরিয়ে দিয়েছে।(আমার বই ‘ভারত ভাগ হয়েছে ধর্মের জন্যে’, , প্রকাশক: আনন্দ প্রকাশনী অনুকরণে)। guhasb@gmail.com; ‘এখন শুধু মোথাবাড়ী, সামনে হবে বাড়ী বাড়ী’-৬ ভারতকে আমরা বিশ্বের ‘বৃহত্তম গণতন্ত্র’ বলে থাকি। ভারতে ততদিন গণতন্ত্র থাকবে যতদিন হিন্দুরা সংখ্যাগরিষ্ট থাকবে। এলাহাবাদ হাইকোর্ট ক’দিন আগে এক মামলার শুনানিকালে বলেছেন, এইভাবে ভারতবর্ষ যদি গণহারে ধর্মান্তকরণ হতে থাকে তাহলে এক সময় হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে যাবে, তাই বলপূর্বক ধর্মান্তকরণ বন্ধ হওয়া দরকার। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল মোশাররফ হোসেন একবার বলেছিলেন যে, ভারতকে নিয়ে আমাদের কোন দু:শ্চিন্তা নেই, কারণ আমরা যা চাই ভারতের ভেতরের মুসলমানরাই একদিন তা করে দেবে। বেশিদিন হয়নি, পাকিস্তানের এক বুদ্ধিজীবী বলেছেন, ভারতে মুসলমান না থাকলে ভারত আমেরিকার থেকে উন্নত হতো। এটি তো ঠিক যে, ভারতীয় সভ্যতা মুসলিম শাসনের আগে রচিত হয়েছে। সমগ্র বিশ্ব যখন অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিলো ভারতীয় মুনিঋষিরা তখন বেদ লিখেছেন, খালি চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে পৃথিবী থেকে চন্দ্র-সূর্য্যের দুরুত্ব মেপেছেন। এটিও সত্য যে, একটি বিশাল পশ্চাদপর জনগোষ্ঠী নিয়ে আপনি সামনে এগিয়ে যেতে পারেন না, কারণ এঁরা আপনাকে পেছন থেকে টেনে ধরছে। আপনি কি করবেন? ডুবন্ত মানুষের সাথে ডুবে যাবেন, নাকি হাত ছিটকে জলের ওপর ভেসে উঠবেন? জঙ্গলের নীতি ‘সারভাইভাল অফ দি ফিটেষ্ট’ কিন্তু লোকালয়েও প্রযোজ্য। আসুন আমরা ভারতে মুসলিম নেতৃবৃন্দের কিছু মূল্যবান বক্তব্য শুনি। এগুলো আপনারা শুনেছেন, পাত্তা দেননি, ভাবছেন পাগলের প্রলাপ, বুঝতে পারেননি যে, ওগুলো ওদের মনে কথা, ওঁরা তাই চায়। জাকির নায়েক বলেছেন, মুসলমানরা ১১শ’ বছর ভারত শাসন করেছে, লক্ষ লক্ষ হিন্দুর মাথা কেটেছে, কোটি কোটি হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করেছে, আমরা ভারতকে ভাগ করে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ বানিয়েছি, আমরা ২হাজার মন্দির ধ্বংস করে সেগুলোকে মসজিদে রূপান্তরিত করেছি, আমাদের ভয়েই হিন্দুরা বলে, ‘হিন্দু-মুসলমান ভাই-ভাই’, এটিই আমাদের শক্তি। মিম নেতা লোকসভা সদস্য আসাদউদ্দিন ওয়েসি বলেছেন, ভারতের মুসুলমান পাকিস্তানের মুসলমানদের থেকে পৃথক, হিন্দুরা এ ভুল করাটা ঠিকনা, ভারত পাকিস্তান আক্রমন করলে সঠিক সময়ে ভারতের ২৫কোটি মুসলমান পাকিস্তানের পক্ষে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। এআইমিম নেতা মাওলানা বদরুদ্দীন আজমল বলেছেন, পাকিস্তান ও আরব দেশসহ ৫৬টি মুসলিম দেশে হিন্দুদের ভোটাধিকার নেই, আমি চ্যালেঞ্জ করছি ভারতে হিন্দুরা মুসলমানের ভোটাধিকার বন্ধ করে দেখুক। সমাজবাদী দলের নেতা আজম খান বলেছেন, হিন্দু নেতারা হাজারবার মুসলমানের টুপি পড়তে পারেন, কিন্তু আমরা মুসলমান নেতারা কখনো মাথায় তিলক পড়বো না; হিন্দু নেতারা আমাদের নামাজের প্রতি সন্মান দেখতে পারেন, কিন্তু আমরা মুসলমানরা ‘বন্দে-মাতরম’ বয়কট করবো, কারণ ধর্মনিরপেক্ষতা ও দেশপ্রেম ইসলামে হারাম। কলকাতার টিপু সুলতান মসজিদের শাহী ইমাম নুরুর রহমান বরকতী বলেছেন, হিন্দুরা গরুকে ‘মা’ ডাকতে পারেন, কিন্তু আমরা গরু কাটবো, কারণ গরু কাটা আমাদের ধর্মীয় অধিকার। কোন ‘মায়ের পুত’ বাধা দিলে আমরা তা প্রতিহত করবো, কিন্তু আমরা গরু কাটবো। আসামের এআইইউডিএফ নেতা মাওলানা বাহার উদ্দিন আজমল বলেছেন, হিন্দুদের ক্ষমতা নেই, বাংলাদেশ থেকে আমাদের মুসলিম ভাইদের আসামে প্রবেশ ঠেকায়, আমরা আসতেই থাকবো। (আমার বই ‘ভারত ভাগ হয়েছে ধর্মের জন্যে’, প্রকাশক: আনন্দ প্রকাশনী অনুকরণে)। guhasb@gmail.com; ‘এখন শুধু মোথাবাড়ী, সামনে হবে বাড়ী বাড়ী’-৭ ভারতে কিছু হলে উপমহাদেশে মুসলমানের ঘুম নষ্ট হয়, কারণ তাঁরা ভারতকে ‘হিন্দুস্থান’ হিসাবে দেখে। বিরোধটা তাদের হিন্দুর সাথে। ভারতে মুসলমানের কিছু হলে এজন্যে তাঁদের জ্বলে! অথচ সৌদি আরব হাজার হাজার ইয়েমেনি মুসলমান মারছে, তারা টু-শব্দ করেনা। তুরস্ক কিছুদিন আগে কয়েকশ’ সিরীয় সৈন্য মারলো, ওঁরা তা দেখেনা। চীন দশ লক্ষ উইঘুর মুসলমানকে অত্যাচার করছে, নুতন করে কোরান লিখছে, তাতে ওদের ভ্রূক্ষেপ নেই? শিয়াদের হাতে সুন্নি এবং সুন্নিদের হাতে শিয়া মুসলমান হরদম মরছে, ওটা ভাই-ভাই ফাইট, তাতে সমস্যা নেই? কিন্তু ভারত কাশ্মীরে কি করলো এনিয়ে তাদের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। কাশ্মীরে ৩৭০/৩৫এ জারি হলে এক টিভি শো-তে বলেছিলাম, সত্তর বছর ধরে কাশ্মীরে সন্ত্রাস ছাড়া আর কিছু জন্মায়নি। যে ব্যবস্থা শুধু সন্ত্রাসের জন্ম দেয় তা পাল্টানো প্রয়োজন ছিলো, ৩৭০/৩৫এ হয়তো তাই। কাশ্মীরে এখন হয়তো শান্তি আসবে, মুসলমানরা ভালো থাকবেন। কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে হয়তো পাকিস্তানী রাজনীতি শেষ হবে? বাংলাদেশে একদা মৌলবাদীদের প্রধান ইস্যু ছিলো ‘ফারাক্কা’। শেখ হাসিনা প্রথমবার ক্ষমতায় এসে ফারাক্কা সমস্যার সমাধান করে দেন। মৌলবাদীরা দিশেহারা হয়ে পড়ে? মোদী হয়তো, মুসলমানদের নিয়ে রাজনীতি করার একটা ইস্যু বন্ধ করে দিয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের মোল্লাদের কাশ্মীর নিয়ে উত্তেজনা কমেনি। মাওলানা কাসেমী তো যুদ্ধ করার জন্যে কাশ্মীর যেতে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। বাংলাদেশিদের ভারত বিরোধিতা যতটা না ‘মুসলমানদের পক্ষে’, এরচেয়ে ঢের বেশি, হিন্দুদের বিপক্ষে (ভারতের বিপক্ষে)। জেনেট লেভি তার নিবন্ধে দাবি করেছেন যে, বাংলা শিগগিরই একটি পৃথক মুসলিম রাষ্ট্র হিসাবে আত্মপ্রকাশ করবে। তারমতে এরআগে গৃহযুদ্ধ হবে, কাশ্মীরের ঘটনাবলীর পূনরাবৃত্তি ঘটবে। জেনেট লেভি দেশটি’র নাম দিয়েছেন, ‘মোগলিস্তান’, তারমতে তলোয়ারের জোরে ভারত আবার ভাগ হবে, হিন্দুরা ম্যাসাকার হবেন। তিনি বলেছেন, ভারত ভাগের সময় পশ্চিমবঙ্গে ১২% মুসলিম ছিলেন, এখন ২৭%। পক্ষান্তরে পূর্ববাংলা বা বর্তমান বাংলাদেশে ৩০% হিন্দু কমে এখন ৮%। জেনেট লেভির মতে, এবার পশ্চিমবাংলার পালা। নিবন্ধে জেনেট লেভি অন্যান্য দেশ যাঁরা মুসলিমদের শরণার্থী হিসাবে জায়গা দিচ্ছেন, তাদেরও সতর্ক করেছেন। তারমতে জার্মানী ও ইংল্যান্ড শিগগিরই এই সমস্যায় পড়বে। তিনি বলেছেন, মমতা ব্যানার্জী বারবার মুসলিম ভোটে জিতছেন। জেনেট লেভির মতে পশ্চিমবঙ্গে প্রায় ১০হাজার মাদ্রাসায় অমুসলমানদের প্রতি ঘৃণা শিক্ষা দেয়া হয়? মাদ্রাসায় টাকা আসে সৌদি আরব থেকে, সেখানে জ্বিহাদ শেখানো হয়! তিনি সন্ত্রাসবাদের জন্যে মুসলমানদের দায়ী করেন, তিনি দেখিয়েছেন, যেখানেই মুসলিমরা সংখ্যায় বেড়েছে, সেখানেই সন্ত্রাসী কর্মকান্ড বেড়েছে? তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গে এমন অনেক মেডিকেল, টেকনিকেল, নার্সিং স্কুল প্রতিষ্ঠা হয়েছে যেখানে মুসলিম শিক্ষার্থীরা প্রাধান্য পাচ্ছে। এমনও হাসপাতাল আছে যেখানে শুধু মুসলিম রোগীরা চিকিৎসা পাচ্ছে। এমন প্রকল্প আছে, যেখানে মুসলিম ছাত্ররা ল্যাপটপ পাচ্ছে, ছাত্রীরা পাচ্ছেনা। তার মতে মমতা ব্যানার্জী ইমামদের এমনসব সুযোগ দিয়েছেন যা হিন্দুরা পাচ্ছেনা। জেনেট লেভি ২০০৭ সালে তসলিমা বিরোধী দাঙ্গার প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন যে, ঐ প্রথম মুসলিম সংগঠনগুলো পশ্চিমবঙ্গে ব্ল্যাসফেমি আইন প্রয়োগের দাবি করে। ভারতের ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেন। তসলিমার ‘লজ্জা’ উপন্যাসের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মুসলমানরা তাকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান ও বিতারণ করে; অথচ আশ্চর্য যে, ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ভারতে মুসলমানরা তার মাথার মূল্য ঘোষণা করে এবং অনেক জায়গায় তিনি লাঞ্ছিত হন। মমতা মুসলিম ভোট হারাবার ভয়ে মোল্লাদের সমর্থন করে যাচ্ছেন। তারমতে ২০১৩ সালে প্রথম ‘মোগলিস্তান’ দাবিটি উত্থাপিত হয়, তখন হিন্দুদের বিরুদ্ধে দাঙ্গা ঘটে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ জেলা থেকে হিন্দুদের বিতাড়িত করা হয়। সরকার দাঙ্গাকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নিতে বারণ করেন। মালদা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুরে মুসলিমরা হিন্দুদের ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বয়কট করে। হিন্দুরা অন্যত্র সরে যায়? জেনেট লেভি সরাসরি মমতা ব্যানার্জীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ২০১৪-তে মমতা তারদল তৃণমূল কংগ্রেস থেকে ‘সন্ত্রাসী’ আহমেদ হাসান ইমামকে রাজ্যসভায় এমপি পাঠায়। অথচ হাসান এমাম নিষিদ্ধ ‘সিমি’র কো-ফাউন্ডার! লেভির মতে ভারত থেকে বাংলা ভাগের দাবি অচিরেই উঠবে। জেনেট লেভির নিবন্ধকে যেকেউ ‘অতিরঞ্জিত’ বা ‘ইসলামোফোবিক’ বলতে চাইবেন। কথায় বলে ‘নিজের ভালো পাগলেও বুঝে’, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু তা বুঝতে অপারগ। লেভির বিশেষণ ‘হাসিয়া উড়াইয়া’ দেয়ার সুযোগ নেই, তাঁর কথাগুলো সত্য। পশ্চিমবঙ্গের হিন্দু পাকিস্তান ও বাংলাদেশ দেখে শিখেনি যে, মুসলমানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলে অন্যদের সেখানে থাকতে দেয়া হয়না। তাড়িয়ে দেয়া হয়, অথবা ধর্মান্তরিত করা হয়? বিশ্বের মানচিত্রের দিকে তাকালে দেখা যাবে, মুসলিম দেশগুলো শুধু মুসলমানদের জন্যে, অমুসলমান দেশগুলো সবার জন্যে, মুসলিমদের জন্যেও, এবং তাঁরা সেখানে বসে গণতন্ত্রের সুযোগ নিয়ে সেদেশ দখলের চেষ্টা চালায়। পশ্চিমবঙ্গ এদের পরবর্তী লক্ষ্য। অনেকেই বলেন, মধ্যপ্রাচ্যে অনেক ভারতীয় বাস করে। কথা সত্য। কিন্তু তারা বছর বছর ‘রেসিডেন্সি’ ও ‘ওয়ার্ক পারমিট’ নবায়ন করে? সেখানে স্থায়ীভাবে থাকার সুযোগ নেই, নাগরিকত্ব, বা ভোটাধিকারের প্রশ্নই উঠেনা। শুধু ভারতীয় কেন, অন্য দেশের মুসলমানদেরও ওঁরা জায়গা দেয়না, কিছুটা হয়তো খাতির করে, অধিকার দেয়না। ওঁরা জাতে মাতাল তালে ঠিক, পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুর মত নিজের দেশ অন্যদের হাতে তুলে দেয়না। (আমার বই ‘ভারত ভাগ হয়েছে ধর্মের জন্যে’, প্রকাশক: আনন্দ প্রকাশনী অনুকরণে)।