বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০১:২৩ পূর্বাহ্ন
সংবাদদাতা, মৌলভীবাজার :
গ্রাম্য মোড়লদের না জানিয়ে বিয়ে করায় আত্মগোপনে রয়েছেন নবদম্পতি। তারা মোড়লদের ভয়ে নিজ বাড়িতে যেতে পারছেন না। ঘটনাটি ঘটেছে মৌলভীবাজার সদর উপজেলার আপার কাগাবালা ইউনিয়নের উত্তর কাগাবলা গ্রামে। এ ঘটনার প্রতিকার চেয়ে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন কনে পলি আক্তার।
জানা গেছে, গত ১৯ মার্চ ইমন মিয়ার সঙ্গে বিয়ে হয় সাতবাক গ্রামের পলি আক্তারের। ৪ লাখ টাকা কাবিনে তাদের রেজিস্ট্রি বিয়ে সম্পন্ন হয়। তবে বিয়ের কথা এলাকায় জানাজানি হওয়ার পর বাধা হয়ে দাঁড়ান স্থানীয় মুরব্বিরা। পরে এ বিষয়ে গত শনিবার ফেসবুকে পোস্ট দেন পলি আক্তার। এরপরই বিষয়টি আলোচনায় আসে।
পলি আক্তার বলেন, আমার মা শিল্পী বেগম একজন সহজ-সরল নারী। তিনি আমার বিয়ের বিষয়ে আমার দুঃসম্পর্কের আত্মীয় ও এলাকার মুরব্বিদের জানালে তারা আমার বিয়েকে অস্বীকার করেন। বরং আমার স্বামী আমাকে অপহরণ-ধর্ষণ করেছেন বলে মিথ্যা মামলা করার জন্য আমার মাকে কুমন্ত্রণা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। আমার স্বামীর আত্মীয়-স্বজনকেও বিভিন্নভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। এমনকি তারা আমার স্বামীকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে বলে আমার মাকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিয়ের পর থেকে আমরা খুব কষ্টে আছি। গ্রামের মোড়লদের হুমকি-ধমকির কারণে আমি ও আমার স্বামী আত্মগোপনে আছি। আমি আমার স্বামীর বাড়িতে যেতে চাই। এ ঘটনায় আপার কাগাবলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি খলকু মিয়া, আগিহুন গ্রামের রুজিনা আক্তার ও সাতবাক গ্রামের বশির আহমদ সুনু মিয়াকে অভিযুক্ত করে পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন পলি আক্তার।
পলি আক্তারের স্বামী ইমন মিয়া বলেন, বিয়ের পর আমাদের পাশের গ্রাম ও বাজারের কিছু মোড়লদের বাধায় পড়েছি। তারা আমাকে ও আমার পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন। যে কারণে আমি আমার স্ত্রীকে নিয়ে ঘরে উঠতে পারছি না।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আপার কাগাবলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি খলকু মিয়া বলেন, এখানে দুটি আলাদা সমাজ আছে। বিয়ে হলে তাদের মধ্যে ঝামেলা আসবে। কনেপক্ষ আমার কাছে এসেছিল। আমি তাদের সান্ত্বনা দিয়েছি। তবে হুমকি-ধমকির বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি। আপার কাগাবলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইমন মোস্তফা বলেন, বিষয়টি জেনেছি। এখানে সামাজিক বাধা আছে। বিষয়টি সমাধানের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি।
মৌলভীবাজার মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুনুর রশীদ চৌধুরী বলেন, থানায় এসে অভিযোগ দিলে এ বিষয়ে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেবো। মৌলভীবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন বলেন, ওই দম্পতি আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমি তাদের থানায় গিয়ে আইনের আশ্রয় নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছি। আমরা তাদের সহযোগিতা করবো।