হিমাচলে টানা বৃষ্টিতে সৃষ্ট বন্যায় বন্যায় ৬৯ জনের মৃত্যু, নিখোঁজ ৩৭

ভারতের হিমাচল প্রদেশে টানা ভারী বর্ষণ ও তার ফলে সৃষ্ট বন্যা ও ভূমিধসে প্রাণ গেছে অন্তত ৬৯ জনের। নিখোঁজ রয়েছেন আরও ৩৭ জন। আহত হয়েছেন ১১০ জনের বেশি। রাজ্যজুড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি ধসে গেছে বহু সেতু ও বাড়িঘর। নিখোঁজদের সন্ধানে চলছে উদ্ধার অভিযান। খবর এনডিটিভি/তোলপাড়।
শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু জানান, বর্ষা মৌসুম শুরুর পর থেকে হিমাচলে ১৪টি পৃথক ক্লাউডবার্স্ট (মেঘভাঙা বৃষ্টি) হয়েছে। এর ফলে পানীয় জল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সহায়তার আশ্বাস দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রতি পরিবারকে ঘরভাড়ার সহায়তা হিসেবে দেওয়া হবে ৫ হাজার রুপি। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলা মান্ডিতে চলছে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম।
আগামী সোমবার (৭ জুলাই) পর্যন্ত হিমাচলের সব জেলায় ভারী বর্ষণের সতর্কতা জারি করেছে প্রশাসন।
এদিন সকালে ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ মুখ্যমন্ত্রী সুখুর সঙ্গে কথা বলেন। তিনি জানান, শুধু হিমাচল নয়, বর্ষার ক্ষয়ক্ষতিগ্রস্ত গুজরাট, রাজস্থান, উত্তরাখণ্ড ও ছত্তিশগড় রাজ্যগুলোর মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গেও তিনি কথা বলেছেন। শাহ বলেন, “যথাযথ সংখ্যক এনডিআরএফ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরও সহযোগিতা পাঠানো হবে। কেন্দ্র সরকার সর্বোচ্চ সহায়তা নিশ্চিত করবে।”
বর্ষা মৌসুম ২০ জুন হিমাচলে প্রবেশ করে। এবারও বরাবরের মতো ব্যাপক ধ্বংস নিয়ে এসেছে। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, শুধুমাত্র মান্ডি জেলায় মারা গেছেন অন্তত ১৪ জন, কাংলায় ১৩, ছাম্বায় ৬ এবং শিমলায় ৫ জন।
মান্ডির থুনাগ ও ব্যাগসায়েড এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এলাকাগুলো সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও বিরোধী নেতা জৈরাম ঠাকুরের নির্বাচনী এলাকার অন্তর্গত। এছাড়াও কারসগ ও ধরমপুরেও বড় ধ্বংসযজ্ঞের খবর মিলেছে।
এখন পর্যন্ত শুধু মান্ডি জেলাতেই নিখোঁজ রয়েছেন ৪০ জনের বেশি।
বিলাসপুর, হামিরপুর, কিন্নাওর, কুলু, লাহুল-স্পিতি, সিরমৌর, সোলান ও উনা জেলা থেকেও মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন রাজ্যজুড়ে শতাধিক মানুষ।
বন্যায় ধ্বংস হয়েছে শতাধিক বাড়িঘর, ভেঙে পড়েছে অন্তত ১৪টি সেতু। মারা গেছে প্রায় ৩০০টি গবাদিপশু, যার মধ্যে ১৬৪টি গরু রয়েছে।