সুদিপা-তারিন-মাছরাঙ্গা টিভি ভনিতা না করে ক্ষমা চান
।। শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক।।
শিক্ষাদীক্ষা থাকলে তারিন কলকাতার সুদীপকে দিয়ে গরুর মাংস রান্না করতে দিতেন না, দিয়েছেন হয়তো এ কারণে যে তারিনের সাংস্কৃতিক মান অত্যন্ত নিচু, মানসিকতা নিন্মমানের। এটি ইচ্ছেকৃত, এঁকে ভুল বলার কোন সুযোগ নেই। বাংলাদেশের সমাজটা তারিনে ভরপুর। সুদিপা হয়তো তারিনের ‘গো-মাংস মার্কেটিং’-র শিকার।
সুদিপা ঢাকায় গিয়ে কিভাবে গরুর মাংস রান্না করতে হয়, তা দর্শকদের দেখান ও শেখান। অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা ইচ্ছে করেই একজন ব্রাহ্মণকে দিয়ে গরুর মাংস রান্না করান। এতে ব্রাহ্মণের জাত গেল, না গরুর মাংসের মর্যাদা বাড়লো তা স্পষ্ট নয়। বাংলাদেশের এক শ্রেণীর মানুষ ছলে বলে কৌশলে হিন্দুকে গরুর মাংস খাওয়াতে পারলে খুশি হ’ন!
কলকাতার মেয়ে সুদিপা ঢাকায় গিয়ে গরুর মাংস রান্না করেছেন, উল্টোটা কি সম্ভব? অর্থাৎ ঢাকার তারিন কলকাতায় গিয়ে লাইভে ‘শুয়র বা কচ্ছপের মাংস’ রান্না করবেন? আর যদি করেনও তাতে ঢাকার রাস্তার প্রতিক্রিয়াটি কি হবে? কলকাতায় সুদিপা সেটি টের পাচ্ছেন, ঢাকায় তারিন ভালই আছেন, কারণ তিনি অনেকের ভালোলাগায় সুড়সুড়ি দিয়েছেন।
সুদিপা বা তারিন কিসের মাংস রান্না করবেন তাতে কারো কিচ্ছু আসে-যায় না। আসে-যায় তখনি যখন তারিনরা এটিকে ‘জোশ’ হিসাবে ব্যবহার করেন। সমাজে একটি প্রচলিত ধারণা আছে যে, হিন্দুরা নিরামিষ এবং মুসলমানরা মাংস ভালো রান্না করেন। দিন পাল্টেছে, হিন্দুরা এখন একথা ভেবে খুশি হতে পারেন যে, তারিনরা এখন ব্রাহ্মণের কাছ থেকে গরুর মাংস রান্না শিখছেন।
সুদিপার ঘটনাটি তারিনদের হীন-মানসিকতা। সাংস্কৃতিক দৈন্যতা। এই দৈন্যতার কারণেই তারিনরা হিন্দুদের বাড়ীতে নিমন্ত্রণ করেও টেবিলে ‘গরুর মাংস’ রাখেন এবং বলেন, দাদা, ওটি নেবেন না, ওটি গরু। এ এক ধরনের আনন্দ। এটি করা যে ঠিক নয়, এবোধও অনেকের নেই? শিক্ষিত-অশিক্ষিত অনেকেই এ মানসিকতা থেকে এখনো মুক্ত হতে পারেননি।
ভারতে সোনাক্ষী-জহির বিয়ে হলো, ঢাকায় ঠিক উল্টো এমন একটি অনুষ্ঠান কি সম্ভব? মৈত্রেয়ী দেবীর কলকাতার বাড়ীতে জয়শ্রী-আলমগীরের বিয়ের জমকালো অনুষ্ঠান হয়, ঢাকায় আমরা উল্টোটা দেখিনা কেন? এ সময়ে কলকাতা, লন্ডনের মেয়র মুসুলমান, ঢাকায় একজন হিন্দু, করাচিতে একজন শিখ বা রিয়াদে একজন খৃষ্টান মেয়র কি আশা করা যায়? না, যায়না।
এ সময়ে কলকাতায় সুদিপা, ঢাকায় তারিন ইনিয়ে-বিনিয়ে নিজ নিজ পক্ষে সাফাই গাইছেন। মাছরাঙ্গা টিভি’র বক্তব্য শুনিনি। কথা হচ্ছে, এঁরা কি এদের দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারেন? না, পারেন না। তাই, তিন পক্ষকেই প্রকাশ্যে নি:শর্ত ক্ষমা চাওয়া উচিত। না চাইলে দর্শক তিন পক্ষকেই বয়কট করতে পারেন, বিজ্ঞাপন বন্ধ হতে পারে। রাস্তায় প্রতিবাদ হতে পারে।