মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:১৮ অপরাহ্ন
বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। তার মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বীর মুক্তিযোদ্ধা ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী জাফরুল্লাহ চৌধুরীর আত্মার শান্তি কামনা করেন। তিনি শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) রাত সাড়ে ১১টার দিকে মারা যান। প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।-খবর তোলপাড় ।
গুরুতর অসুস্থ হয়ে তিনি রাজধানীর ধানমন্ডির গণস্বাস্থ্য নগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ৮১ বছর বয়সী জাফরুল্লাহ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরে কিডনিসহ নানা রোগেও ভুগছিলেন।
জাফরুল্লাহ চৌধুরী একজন ভাস্কুলার সার্জন। তিনি মূলত জনস্বাস্থ্য চিন্তাবিদ। ১৯৮২ সালর ওষুধ নীতি দেশকে ওষুধে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ করে, ওই নীতি প্রণয়নের অন্যতম কারিগর ছিলেন জাফরুল্লাহ চৌধুরী। বহির্বিশ্বে তাঁর পরিচয় বিকল্প ধারার স্বাস্থ্য আন্দোলনের সমর্থক ও সংগঠক হিসেবে।
জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জন্ম ১৯৪১ সালের ২৭ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম জেলার রাউজান উপজেলার কোয়েপাড়া গ্রামে। তাঁর বাবা হুমায়ন মোর্শেদ চৌধুরী ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা। মা হাছিনা বেগম চৌধুরী ছিলেন গৃহিনী। মা–বাবার দশ সন্তানের মধ্যে জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন সবার বড়।
ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন তথ্যমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি প্রয়াত এই বীর মুক্তিযোদ্ধার রুহের শান্তি কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
ইউরোপ সফররত তথ্যমন্ত্রী তার শোকবার্তায় একাত্তরে ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা, জাতীয় ওষুধ নীতি প্রণয়ন ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তুলে কম খরচে দরিদ্রদের চিকিৎসা সেবায় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অবদানের কথা স্মরণ করেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরী ছিলেন প্রকৃত বীর। তার সারাটা জীবনই বীরত্বগাঁথা। তার ছিল দেশের প্রতি অসীম ভালোবাসা। যৌবনে অসীম সাহসিকতায় গেরিলা ট্রেনিং নিয়ে অংশ নেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। বাংলাদেশ ফিল্ড হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করে যুদ্ধাহত অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধার জীবন বাঁচিয়েছেন তিনি। পরে বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে চিকিৎসা সেবা দিতে ছুটে বেড়িয়েছেন দলবলসহ। প্রয়াত রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান পল্লীবন্ধু হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ দেশ পরিচালনার সময় ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর হাতেই জাতীয় ঔষধ নীতি প্রণয়ন করেন। সেই কারণেই প্রায় ২০০ দেশে ওষুধ রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। এখন দেশের চাহিদার ৯৬ শতাংশ ওষুধ দেশেই উৎপাদন হচ্ছে।
তিনি বলেন, জাফরুল্লাহ চৌধুরী ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে সত্যের পথে অবিচল ছিলেন। তিনি অসীম সাহসের সহিত সাদাকে সাদা এবং কালোকে কালো বলতেন। তার মৃত্যুতে জাতি দেশ প্রেমিক এক অভিভাবক হারাল। ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর শূন্যতা কখনও পূরণ হবার নয়।
তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেন, আমাদের সময়ের নায়ক ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। তিনি আর আমাদের মাঝে নেই। জাফরুল্লাহ ভাই এ দেশের গণমানুষের সংগ্রামের মাঝে বেঁচে থাকবেন।
এ ছাড়া ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন ১২ দলীয় জোটের নেতৃবৃন্দ। তারা বলেন, জাতির ক্রান্তিলগ্নে সবসময় তিনি অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তিনি মজলুমের জন্য আলোকবর্তিকা হয়ে হাজির হতেন। তার মৃত্যুতে বাংলাদেশ ও গণতন্ত্রের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি হলো।
এদিকে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীর জানাজার নামাজ কোথায় এবং কখন হবে তা এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে তার পরিবার এবং শুভাকাঙ্খীরা জানিয়েছেন। বার্ধ্যকজনিত কারণে ১২এপ্রিল রাত আনুমানিক সাড়ে ৩ঘটিকার দিকে পুটিকাটা গ্রামে তার নিজ বাসভবনে ইন্তেকাল করেছেন। (ইন্নানিল্লাহি—–রাজেউন)।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৯০বছর। তিনি স্ত্রী, ৩ছেলে, ৬মেয়ে, নাতি-নাতিনী, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধবসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বুধবার দুপুর আড়াইটার দিকে তার নামাজে জানাজা শেষে মিলেরপাড় কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হবে।
সাংবাদিকের পিতার মৃত্যুতে রাজারহাট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জাহিদ ইকবাল সোহরাওয়াদ্দী বাপ্পি, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংষ্কৃতিক নেতৃবৃন্দ এবং অনলাইন নিউজ পোর্টাল দৈনিক তোলপাড় পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক বিশিষ্ট সাংবাদিক প্রহলাদ মন্ডল সৈকতসহ রাজারহাট উপজেলার সকল সাংবাদিকবৃন্দ মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেছেন।