ইরাকে প্রয়াত আইএস নেতা বাগদাদির স্ত্রীর মৃত্যুদণ্ড
ইরাকে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের সঙ্গে কাজ করা এবং ইয়াজিদি নারীদের নিজ বাড়িতে আটকে রাখার জন্য দলটির প্রয়াত নেতা আবু বকর আল-বাগদাদির স্ত্রী আসমা মোহাম্মদকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বৃহস্পতিবার ১১ জুলাই রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানায়, বুধবার (১০ জুলাই) ইরাকের বিচার বিভাগ এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকটি বিচারিক সূত্র এএফপিকে বলেছে, তুরস্কে আটক হওয়া আসমা মোহাম্মদকে ইতিমধ্যে ইরাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ২০১৯ সালের নভেম্বরে তুরস্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা ২০১৮ সালের জুনে বাগদাদির এক স্ত্রীকে গ্রেপ্তার করেছে। তুরস্কের সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে ওই নারীর নাম আসমা ফাউজি মোহাম্মদ আল কুবায়সি বলে জানানো হয়।-খবর তোলপাড় ।
ইরাকের সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল বলেছে, ইসলামিক স্টেটের সদস্যরা ইয়াজিদি নারীদেরকে নিনেভেহ গভর্নরেটের পশ্চিমে সিনজার জেলায় অপহরণ করেছিল। অপহরণের পর মসুলে বাগদাদির স্ত্রী তাদেরকে বাড়িতে আটকে রেখেছিলেন।
আদালতের একজন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ এবং ইয়াজিদি জনগণের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে সহযোগিতার জন্য ফৌজদারি আদালত বাগদাদির স্ত্রীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুর সাজা ঘোষণা করেছে। তবে এই দণ্ড কার্যকরের জন্য ইরাকি আপিল আদালতের অনুমোদন লাগবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হওয়ার অভিযোগে ইরাকের আদালতে দণ্ডবিধির আওতায় কয়েক বছরে কয়েক শ মানুষকে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। আইএসে যোগদানের অভিযোগে ইরাকে ৫০০ জনের বেশি বিদেশি নারী ও পুরুষকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ইরাক ঘোষণা দেয়, তারা বাগদাদির পরিবারকে ফিরিয়ে আনার বিষয়টি নিশ্চিত করতে পেরেছে। বিচারিক একটি সূত্র এএফপিকে বলেছে, তুরস্কে আটক হওয়ার পর বাগদাদির স্ত্রীকে ইরাকে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। তার সঙ্গে সন্তানেরাও ফিরেছেন। ওই সময় সৌদি মালিকানাধীন টিভি চ্যানেল আল আরাবিয়াতে বাগদাদির স্ত্রীর এক সাক্ষাৎকারও প্রচারিত হয়। সেখানে বাগদাদির স্ত্রীর নাম আসমা মোহাম্মদ বলে উল্লেখ করা হয়।
এর আগে ২০১৪ সালে সিরিয়া ও ইরাকের কিছু অংশ দখলে নিয়ে সেখানে খিলাফত ঘোষণা করেছিলেন বাগদাদি। ২০১৯ সালের নভেম্বরে সিরিয়ার উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের বিশেষ অভিযানে তিনি নিহত হন। এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন হামলায় ইসলামিক স্টেটের নিয়ন্ত্রণ ভেঙে পড়ার আগে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ইরাক ও সিরিয়ার বিশাল অঞ্চলে আধিপত্য ধরে রেখেছিলেন বাগদাদি।