পাকিস্তানে বন্যা-ভূমিধস, নিহত ৩৫
পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চল প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে দেশটির উত্তরাঞ্চল আকস্মিক বন্যা দেখা দেখা দিয়েছে। বহু এলাকা ভেসে গেছে এবং ভূমিধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে গেল দুই দিনে অন্তত ৩৫ জন নিহত হয়েছেন।
কর্মকর্তা ও স্থানীয়দের বরাত দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।-খবর তোলপাড়।
বার্তাসংস্থাটি বলছে, বৃষ্টির পানির প্রবাহ উত্তর-পশ্চিম খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মনোরম চিত্রাল জেলার বিভিন্ন অংশে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে। সেখানে ভারী বৃষ্টিপাত এবং আকস্মিক বন্যা গত বুধবার বহু বাড়িঘর, সেতু এবং গবাদি পশুকে ভাসিয়ে নিয়ে গেছে এবং শহরের সঙ্গে বহু শহরতলি ও গ্রামের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে।
ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভূমিধসও হয়েছে এবং কাদার স্রোত ভেসে এসেছে। এতে করে বিভিন্ন পয়েন্টে রাস্তা অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
স্থানীয় ইসরার আহমেদ ফোনে আনাদোলুকে বলেন, ‘পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। আল্লাহর রহমতে, বৃষ্টি এবং আকস্মিক বন্যার কারণে সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞের তুলনায় মানুষের ক্ষয়ক্ষতি তেমন বড় নয়।’ তবে, প্রচুর অবকাঠামোগত ক্ষতি হয়েছে বলে জানান তিনি।
খাইবার পাখতুনখাওয়ার প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মতে, গত ৪৮ ঘণ্টায় প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টিজনিত দুর্ঘটনায় ১৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন এবং ১৫ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার কোহাট জেলায় একটি বাড়ির বেসমেন্ট বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় একই পরিবারের প্রায় ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। মঙ্গলবার দক্ষিণ থর মরুভূমিতে বজ্রপাতে আরও আটজন প্রাণ হারিয়েছেন।
এছাড়া আকস্মিক বন্যায় ভেসে যাওয়ায় বিখ্যাত পর্যটন গন্তব্য কাগান ও নারানের সংযোগকারী একটি মূল সেতু দেশের বাকি অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় শত শত পর্যটক দুই দিন ধরে সেখানে আটকে আছেন।
পাকিস্তানের আবহাওয়া বিভাগ ২ থেকে ৬ আগস্ট করাচি, লাহোর এবং ইসলামাবাদের মতো প্রধান শহরগুলোর পাশাপাশি সারা দেশে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টি এবং বন্যার পূর্বাভাস দিয়েছে।
জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ সবাইকে সতর্ক থাকতে এবং সম্ভাব্য বৃষ্টির কারণে মানব ও অবকাঠামোগত ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেছে। দেশটির রাষ্ট্র পরিচালিত এই সংস্থাটি বিভিন্ন ত্রাণ ও উদ্ধার সংস্থার মধ্যে সমন্বয় করে থাকে।