বুধবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:১১ পূর্বাহ্ন
এস.এ বাবলু/প্রহলাদ মন্ডল সৈকত :
“হামাক বাদ দিয়া কামের টাকা সবাই বকড়া করি খাও” কুড়িগ্রামের রাজারহাট সদর ইউনিয়নের ৩ ওয়ার্ডের অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি (ইজিপিপি) প্রকল্পের রাসস্তায় মাটি কাটার কাজ গত ৩ মে বুধবার পুনকর গ্রামের জনৈক হেলাল উদ্দিনের বাড়ির পাশে দেখতে গেলে হাছনা বেগম তিনি আক্ষেপ করে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। তিনি আরও বলেন গতবার ৪০ দিন কাজ না করিয়ে ৩০ দিনের টাকা হামাক দিয়েছে। এবার ১শ ১০ দিন কাজ হবার কথা, আজ পর্যন্ত ৪৫ দিন কাজ চলছে। সত্য কথা বললে মেম্বার হামাক গালি গালাজ করে। দলের সর্দার সত্যান্দ্র নাথ বলেন, ৪৯ জন কাজ করার কথা, কিন্তু কাজ করেন ৩৭ জন, বাকী ১৩ জন অনুপস্থিত থাকেন। শ্রমজীবি আবু সাঈদ বলেন, যে ১৩ জন অনুপস্থিত তারা অনেকেই জানেন না যে তাদের নাম কাজের তালিকায় আছে। আমিও জানতাম না, আমার নাম কাজের তালিকায় আছে, এক বছর পর শুনে কাজে আসছি। সেই বছরের টাকা আমি পাই নি। একই গ্রামের ফুলবাবুর স্ত্রী রসবালা বলেন আমার যে মোবাইল সিমে কাজের টাকা আসে সে সিম মেম্বার নিয়েছে, কত টাকা আসে মেম্বারেই জানে। রাজারহাট ইউনিয়নের ৩ ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ আশরাফ হোসেন বলেন, আমার কাছে কারো মোবাইল সিম নেই, যারা কাজে অনুপস্থিত থাকেন তারা কোন টাকা পাবেন না। ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ এনামুল হক জানান, শ্রমিকের মোবাইল সিম মেম্বারের কাছে থাকার বিষয়ে আমাকে এবং ইউএনও মহোদয় কে শ্রমিকগণ অভিযোগ করেছে, আমিও পিআইও কে বলেছি কিন্তু তারা কোন কর্ণপাত করেননি।
রাজারহাট প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সজিবুল করিম বলেন, মোবাইল সিমের বিষয়ে সুনিদৃষ্ট অভিযোগ নেই, সাত দিনের মধ্যে যাদের মোবাইল সিম কাজের সময় সাথে থাকবে না তাদেরকে অনুপস্থিত করা হবে। প্রয়োজনে তারা সিম রিপ্লেক্স করে নিতে পারেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরে তাসনিম যুগের আলোকে বলেন, ইজিপিপি প্রকল্পে কাজের অভিযোগ পেয়েছি, তদন্ত চলছে, যারা কাজ করছেন তাদেরকেই মজুরী দেয়া হবে।
ইজিপিপি প্রকল্পে শ্রমিকদের কাজের অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ শুধু ৩ নং ওয়ার্ডে নয়, উপজেলার অধিকাংশ ওয়ার্ডে বিদ্যমান। এগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে সরকারের উদ্দেশ্য ভেস্তে যাবে বলে মনে করেন সচেতন মহল।
শুধু রাজারহাট ইউনিয়নের ৩নং ওয়াডে নয়, রাজারহাট উপজেলার সব ইউনিয়নের ওয়াডগুলোতে একই অবস্থা।
রবিবার(৭মে) সকাল ১১টায় ইজিপিপি প্রকল্পের কাজ সরেজমিনে দেখতে গেলে একই ইউনিয়নের আরো কয়েকটি ওয়াডের অনিয়মের চিত্র উঠে আসে। এছাড়া ঘড়িয়ালডাঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নেও অনিয়ম লক্ষ্য করা যায়। বেশকিছু সাইটে গিয়ে জানা যায়, কেউ শ্রম দিয়ে টাকা কম পায়, আবার কেউ সাইটে না এসেও পুরো টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।