বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:০৯ অপরাহ্ন
সংবাদদাতা, কুড়িগ্রাম:
চলমান কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতিসহ সাথে সাবেক ছাত্রলীগ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছে।
সোমবার (৮মে) রাত ৯ টার দিকে উপজেলা শহরে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফজলুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান গ্রুপের সঙ্গে গত তিন দিন ধরে উপজেলা ছাত্রলীগের উত্তেজনা চলছিল। বিষয়টি ফুলবাড়ী থানা পুলিশ অবগত ছিল। এর মধ্যে মেহেদী গ্রুপের কয়েকজন নেতাকর্মী রবিবার সন্ধ্যায় দেশীয় অস্ত্রসহ উপজেলা শহরে মহড়া দেয়। সোমবার সন্ধ্যায় মেহেদী তার লোকজনসহ ফুলবাড়ী শহরের তিনকোণা মোড়ে ছাত্রলীগের ওপর হামলা করলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তৌকির হাসান তমাল, সাংগঠনিক সম্পাদক তাহাদ হাসান তুষার ও সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসানসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৭ জন আহত হন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আহতদের উদ্ধার করে ফুলবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে জানতে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মেহেদীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক মিলন দাবি করেছেন, মেহেদী নয় বরং ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মেহেদী ও তার লোকজনের ওপর হামলা করেছে।
মিলন বলেন, ‘আমার নেতৃত্বে হামলা হয়নি। বরং আমি মারামারি ভেঙে দিয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ ছিল। তারাও বিষয়টি জানে। আর ছাত্রলীগ আগে হামলা করেছে।’
ছাত্রলীগ কার্যালয়ে হামলার প্রসঙ্গে মিলন বলেন, ‘মারামারি হয়েছে উপজেলার তিনকোণা মোড়ে। ছাত্রলীগ কার্যালয় সেখান থেকে আরও দূরে। কে বা কারা কার্যালয়ে হামলা করেছে আমি তার তদন্ত দাবি করছি।’
উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি তৌকির হাসান তমাল বলেন, ‘মেহেদী ও তার ভাই মিলনের ছত্রছায়ায় উপজেলায় মাদক চোরাচালান হয়। মেহেদীর বিরুদ্ধে একাধিক মামলাও রয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডের জন্য বর্তমান কমিটিতে তার স্থান হয়নি। ছাত্রলীগ তার মাদক ব্যবসার বিরোধীতা করে বলে সে তার ভাই মিলনের ছত্রছায়ায় পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। আমাদের কার্যালয়ে হামলা করে বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রীর ছবি ভাঙচুর করেছে। আমরা আইনি ব্যবস্থা নেবো।’
জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজু আহমেদ বলেন, ‘যুবলীগ নেতা মিলনের মদদে মেহেদী হাসান বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। মেহেদীর বিরুদ্ধে মাদক চোরাচালানসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলা রয়েছে। সে বরাবর ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করতে চায়। আমরা ছাত্রলীগের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা এবং দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।’
এদিকে এ ঘটনার জন্য উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু বকর সিদ্দিক মিলন ও ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসানকে দায়ী করেছে ছাত্রলীগ। তারা জানান, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিলনের প্রত্যক্ষ মদদে তার চাচাতো ভাই ও ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী পরিকল্পিতভাবে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা করেছে। তারা ছাত্রলীগের উপজেলা কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুর করেছে বলেও অভিযোগ করেছে ছাত্রলীগ।
ওসি ফজলুর রহমান বলেন, ‘সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছে। তবে এ ঘটনায় রবিবার মধ্যরাত পর্যন্ত কোনও লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। কাউকে আটকও করা হয়নি।’
ছাত্রলীগ কার্যালয়ে হামলা ও ছবি ভাঙচুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এটা তদন্তের বিষয়। তদন্ত শেষে বলা যাবে।’ তবে মেহেদীর মাদক সংশ্লিষ্টতা ও মামলা প্রশ্নে কোনও সদুত্তর দেননি ওসি।