ড: আসিফ নজরুলের ‘খবর’ আছে!
।। শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক।।
ড: আবদুল মতিন আমাদের ভাইস-চ্যানচেলার ছিলেন। তার প্রতি এখনো আমাদের শ্রদ্ধার কোন কমতি নেই। তার স্ত্রী ড: রাজিয়া মতিন ঢাকা কলেজিয়েট স্কুল ও কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন। একবার তার কলেজে এক্সটারন্যাল হিসাবে গিয়ে আমি তার সাথে পরিচিত হই। আজো তার প্রতি আমার শ্রদ্ধা রয়েছে। এদের মনে রাখার কারণ হচ্ছে, এঁরা শিক্ষক ছিলেন, ভালো মানুষ ছিলেন এবং তোষামোদকারী ছিলেন না? এরপরে বিএনপি ও আওয়ামী লীগ আমলে আমরা বেশ ক’জন ‘চামচা’ দু:খিত এ শব্দটি ব্যবহারের জন্যে) ভিসি পেলাম। বর্তমান সময়ে আমরা পেয়েছি একজন উপদেষ্টা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের শিক্ষক ড: আসিফ নজরুল। একজন শিক্ষক এতটা মিথ্যাবাদী হন কি করে? রাজনীতিকরা হরদম মিথ্যা বলেন, শিক্ষক হিসাবে তিনিও বা পেছনে পরে থাকবেন কেন?
ড: আসিফ নজরুলের সাথে আমার আমার এজীবনে তেমন কোন ইন্টারেকশন নেই, তবে একবার ভয়েস অফ আমেরিকার একটি সাক্ষাতকারে তিনি, সাবেক বিদেশমন্ত্রী ড: আবদুল মোমেন ও আমি ছিলাম। সম্ভবত: অনুষ্ঠানটি কোন একটি ‘হিন্দু-নির্যাতনের’ পরে ছিলো, তাই আমাকে যুক্ত করা? সেখানে ড: মোমেন মিথ্যাচার করলেন যে বাংলাদেশে ২৫% হিন্দু সরকারী চাকুরী করেন। ড: আসিফ নজরুল সমর্থন করলেন। আমি বললাম, মোমেন ভাই (নিউইয়র্কে আমরা বেশ কিছুটা সময় একসাথে কাজ করেছি), বাংলাদেশে সরকারি চাকুরীজীবি হিন্দু’র সংখ্যা ৩-৫%। আরো বললাম, মোমেনভাই, আপনার মন্ত্রণালয়ে হিন্দুর সংখ্যা কত? প্লিজ একজন হিন্দু রাষ্ট্রদূতের নাম বলুন। আরো অনেক তথ্য দিয়েছি, তার উত্তর দেয়ার ক্ষমতা তাদের ছিলোনা। যাহোক, বলছিলাম, মিথ্যাচার সর্বদা চলেনা। ড: আসিফ নজরুল বললেন, ২৬লক্ষ ভারতীয় বাংলাদেশে কাজ করেন। দু’চারজন দেখলাম বেশ ক্ষেপেছেন, কেউ কেউ তাকে ‘খুনি মুশতাক’-র সাথে তুলনা করেছেন।আসিফ নজরুলরা যে রাজনীতি করেন সেটা মিথ্যাচার ও ভ্রষ্টাচারে ভরপুর।
আসিফ নজরুল এখন ‘ভয়ানক’ ক্ষমতাশালী লোক, তার উচিত ২৬লক্ষ ভারতীয়ের তালিকা প্রকাশ করা, তাদের বরখাস্ত করে ২৬লক্ষ বাংলাদেশী বেকারের কর্মসংস্থান করা। তিনি যদি এই বাংলাদেশী ২৬লক্ষ হিন্দুকে ভারতীয় বলে আখ্যায়িত করে থাকেন, তবে তার ‘খবর’ আছে। দেশটা আসিফ নজরুলের মামার নয়, হিন্দুরা এদেশের ভূমিপুত্র। আসিফ নজরুলের বদৌলতে আমরা জানলাম যে, ২৬লক্ষ হিন্দু চাকুরীজীবি আছে, এই সংখ্যাটি মোট জনসংখ্যার (১৬কোটি) মাত্র ১.৬%শতাংশ? ধরে নেয়া যাক, বাংলাদেশে মোট চাকুরীজীবি ৫কোটি, সেক্ষেত্রে হিন্দু চাকুরীজীবি হচ্ছেন, ৫.২% শতাংশ। পররাষ্ট্র ও সেনাবাহিনীতে সেটি সম্ভবত: ০.২% হতে পারে? যাহোক, মন্ত্রী ও ভার্সিটি’র শিক্ষকদের মিথ্যাচার দেখানো আমার উদ্দেশ্য নয়, তবে উচ্চপদে থেকে নির্লজ্জ্ব মিথ্যাচার রাষ্ট্রের জন্যে ক্ষতিক্ষর। আমাদের মন্ত্রী ও রাজনৈতিক শিক্ষকরা একাজটি হামেশাই করে থাকেন। শেখ হাসিনা-কে যখন দেশত্যাগ করতে হয়, তখন আসিফ নজরুলকে দেশত্যাগ করতে হবেনা, এ গ্যারান্টি কে দেবে? ২৪ আগষ্ট ২০২৪।