সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৬ অপরাহ্ন

পদচ্যুত শিক্ষকদের পুনর্বহাল করা হোক 

রিপোর্টারের নাম / ৪৫ টাইম ভিউ
Update : মঙ্গলবার, ২৭ আগস্ট, ২০২৪

।। শিতাংশু গুহ, নিউইয়র্ক।।

সামাজিক মাধ্যমে মাত্র ২২জন শিক্ষকের জোরপূর্বক পদত্যাগের একটি তালিকা দিয়েছিলাম, এতে অনেকেই বেজায় অসন্তোষ হয়েছেন। তালিকাটি ছিলো হিন্দু শিক্ষকের, একজন মুসলিম ভদ্রলোক বললেন, মুসলিম শিক্ষকদের নাম নেই? বললাম, আপনি তৈরী করুন না কেন? তিনি জানালেন, ‘ওটি আমার কাজ নয়’? ওটি আসলে আমারও কাজ নয়। মুসলিম শিক্ষকদের মামা-কাকা-চাচা কেউ না কেউ উচ্চপদে আসীন, সামরিক বাহিনী বা উপদেষ্টারা কেউ কেউ তাদের আত্মীয় হবেন, তাদের একটা হিল্লা হয়ে যাবে, হিন্দুদের পক্ষে কেউ নেই, তাই আমরা কিছু লোক তাদের হয়ে কথা বলার চেষ্টা করছি, তবে কেউ কথা শোনেনা। শেখ হাসিনাও কথা রাখেননি। ‘দি ওয়াইজ’ নামে একটি নিউজ পোর্টাল বলেছে, বলপূর্বক পদত্যাগী হিন্দু শিক্ষকের সংখ্যা ১৫শ’।

কিছু লোক চিৎকার করে বলার চেষ্টা করছেন যে, হিন্দু বলে নয়, এঁরা আওয়ামী লীগ আমলে সুবিধাভোগী তাই এদের পদত্যাগে বাধ্য করানো হয়েছে? একটি মহল সুচতুরভাবে বলার চেষ্টা করছেন যে, ৫ই আগষ্ট শেখ হাসিনা’র দেশত্যাগের পর হিন্দুর ওপর আক্রমনের ঘটনাগুলো রাজনৈতিক, সাম্প্রদায়িক নয়? একটি টিভি আমায় একই প্রশ্ন করে, আমার উত্তর ছিলো: বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রোল মডেল-এ ভন্ডামী আমরা সব সরকরের আমলেই শুনেছি। এখন যাঁরা এটিকে রাজনৌতিক প্রমানে সচেষ্ট রয়েছেন, এটিও তাঁদের ভন্ডামী। হিন্দুর ওপর অত্যাচার না হলে ড: ইউনুস ঢাকেশ্বরী মন্দিরে যেতেন না, জামাতের আমীর মন্দিরে গিয়ে মিষ্টি কথা বলতেন না। হিন্দুর মন্দিরে আক্রমন হতোনা, ছাত্ররা মন্দির পাহারা দিতোনা। ‘জলের গানের’ শিল্পী রাহুল আনন্দের বাড়ী আক্রমন করে তাকে বাড়িছাড়া করা হতোনা। ঋত্বিক ঘটকের বাড়ী ধ্বংস করা হতোনা। হিন্দু রমণী ধর্ষিতা হতো না?

আর কত বলবো? আপনারা যতই চিৎকার করে ঘটনা অস্বীকার করুন না কেন, সত্য জানাজানি হয় বটে, বিশ্ব জানে আপনারা ‘ভীষণ’ অসাম্প্রদায়িক, আপনাদের জ্বালায় দেশ হিন্দু শূন্য হয়ে যাচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকারকে অনুরোধ করবো, যেসব শিক্ষকদের জোর করে পদত্যাগ করানো হয়েছে তাদের পুনর্বহাল করা হোক। শিক্ষকরা আওয়ামী লীগ সমর্থক হলে তাদের বিদায় করতে হবে কেন? পরবর্তী কোন সরকার এলে কি তারা বিএনপি-জামাত সমর্থকদের বিদায় করবেন? বেশ ক’জনা শিক্ষককে যথেষ্ট অসম্মান করে পদত্যাগ করানো হয়েছে। ক’বছর আগে শিক্ষক শ্যামল ভক্তকে নারায়ণগঞ্জে এমপি সেলিম ওসমান কানধরে উঠবস করান, তখন কিছুটা প্রতিবাদ হয়েছিলো, কিন্তু শিক্ষক সমাজ রুখে দাঁড়ায়নি। কারণ তিনি হিন্দু-শিক্ষক? এবারো শিক্ষক সমাজ চুপ ছিলেন। তাদের জন্যে ঐ কবিতার এ লাইনটি হয়তো একদিন প্রযোজ্য হয়ে যেতেও পারে……. “হে দুর্ভাগা দেশ যাদের করেছো অপমান, অপমানে হতে হবে তাদের সবারই সমান’….। ২৬ আগষ্ট ২০২৪।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর