রবিবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৫:১৭ পূর্বাহ্ন
সংবাদদাতা, কাউনিয়া(রংপুর):
ইচ্ছা থাকলে সবকিছুই সম্ভব, তার অন্যতম উদাহরণ কলি রানী। জন্ম থেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী কলির দুই হাতই অচল। তবুও থেমে নেই তার পড়াশোনা। জীবন জয়ের স্বপ্ন নিয়ে পা দিয়ে লিখে চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে কলি ।তৃতীয় শ্রেণিতে পড়াশোনাকালীন বাবা মনোরঞ্জন রায় মারা যান। তবুও থেমে যায়নি লেখাপড়া।
সে কাউনিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগ নিয়ে কাউনিয়া মোফাজ্জল হোসেন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়কেন্দ্রে চলতি এসএসসি পরীক্ষা-২০২৩ এ অংশ নিয়েছে। সে উপজেলার হরিশ্বর গ্রামের মৃত মনোরঞ্জন বর্মণ ও রুপালি রানীর কন্যা। তার বাবা মারা গেছেন। তারা ৩ ভাই ৩ বোন। কলি রানী সবার ছোট। প্রথম প্রথম কষ্ট হলেও এখন স্বাভাবিক হয়ে গেছে বলে জানায় কলি। কলি রানীর ইচ্ছে, পড়ালেখা শেষ করে ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করবে সে।
পরীক্ষা কেন্দ্রের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, নিয়ম অনুযায়ী সব সুবিধা পাচ্ছে কলি রানী। পঞ্চম শ্রেণিতে সে পা দিয়ে লেখে এ গ্রেড পেয়েছিল, কালি রানী এবারও সে ভালো ফলাফল করবে আশা তাদের। এ বিষয়ে কলি রানীর মা রূপালী রানী বলেন, জন্ম থেকেই মেয়ের হাতের আঙুল নেই, হাত বাঁকা ও ছোট। তাই হাত দিয়ে কলম ধরতে পারে না। মেয়ের অদম্য ইচ্ছা শক্তি দৃঢ় মনোবল দিয়ে ডান পা দিয়ে আস্তে আস্তে লেখা শুরু করে। লিখতে লিখতে এক সময় দ্রুত গতিতে লেখার অভ্যাস রপ্ত করে। তিনি তার মেয়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন।
বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তোজাম্মেল হক জানান, কলি রানী প্রতিবন্ধী হলেও কখনও ক্লাস ফাঁকি দেয়নি। নিয়মিত ক্লাস করেছে এবং সবার সঙ্গে ভালো ব্যবহার করতো। ছাত্রী হিসেবে সে বেশ ভালো। আশা করি এবার সে ভালো ফলাফল করবে। কাউনিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মনোনীত দাস বলেন, এবারে উপজেলার কাউনিয়া মোফাজ্জল হোসেন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থী হিসেবে কলি রানীর পরীক্ষা শিক্ষা বোর্ডের নির্দেশনা মেনে গ্রহণ করা হচ্ছে। তার পরীক্ষার প্রতিটি খাতা আলাদা করে বোর্ডে পাঠানো হচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে যথেষ্ট সচেতন রয়েছি।