প্রধান উপদেষ্টার অভিনন্দন,পাকিস্তানকে হারিয়ে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয়
মুশফিক ও সাকিব আল হাসানের দাপুটে পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পাকিস্তানকে টেস্ট সিরিজে ধবলধোলাই করেছে। আবরার আহমেদের বলে চার মেরে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত করেন সাকিব আল হাসান। পাকিস্তান ঘরের মাঠে নিজেদের ইতিহাসে মাত্র দ্বিতীয়বার এমন লজ্জার শিকার হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসও যে ফোনে অভিনন্দন জানিয়েছেন। মাঠে দাঁড়িয়েই প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে কথা বলেছেন নাজমুল।-খবর তোলপাড়।
মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টের ৫ম দিনের দ্বিতীয় সেশনে এসে পাকিস্তানকে হারিয়ে ঐতিহাসিক টেস্ট সিরিজ জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। দেশের বাইরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও জিম্বাবুয়ের পর জিতল তৃতীয় টেস্ট সিরিজ। প্রতিপক্ষ, প্রেক্ষাপট বিচার করলে এই সিরিজ জয় নিশ্চিতভাবেই সবার উপরে রাখা যায়।
এর আগে ৫ম দিনের শুরুতে বাংলাদেশের আর দরকার ছিল ১৪৩ রান। আগের দিনের ৪২ রানের উদ্বোধনী জুটিতে এদিন যোগ হলো আরও ১৪ রান। দলীয় ৫৮ রানে জাকির আর ৭০ রানে ফেরেন আরেক ওপেনার সাদমান। দুই ওপেনার মিলে ১০ ওভারে রান তুলেছেন পার করেছেন ৫০ এর মার্ক। এরপরেই অবশ্য বিপত্তি। মির হামজার বলে ব্যক্তিগত ৪০ রানে বোল্ড হয়ে ফিরেছেন জাকির। জীবন পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি আরেক ওপেনার সাদমান। মিডঅফে আলতো শট খেলতে গিয়ে ক্যাচ দিয়েছেন শান মাসুদের হাতে। খুররাম পেয়েছেন নিজের প্রথম উইকেট।
অধিনায়ক নাজমুল শান্ত আর মুমিনুল এরপর খেললেন নিখুঁত টেস্ট ইনিংস। ভেজা আউটফিল্ডের কারণে শুরুতে খানিক কষ্ট হলেও শেষ পর্যন্ত ঠিকই নিজেদের খুঁজে পেয়েছেন বাংলাদেশ ক্রিকেটের সাবেক ও বর্তমান অধিনায়ক। ২০ ওভার খেলে দুজন যোগ করেন ৫৭ রান। ম্যাচটাও ততক্ষণে পাকিস্তানের নাগালের অনেকটা বাইরে।
লাঞ্চের পর শান্ত পারেননি নিজের ইনিংস বড় করতে। সালমান আঘার বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। করেছেন ৩৮ রান। দ্বিতীয় টেস্ট জিততে তখনো বাংলাদেশের প্রয়োজন এখন ৫৮ রান। সেখান থেকে এরপর আর ফিরতে হয়নি বাংলাদেশের। দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার মিলে বাংলাদেশকে নিয়ে গেলেন জয়ের আরও কাছে। মুমিনুল ফিরলেও সাকিব আল হাসান এসেছিলেন জয় করতে। তাতে বাংলাদেশ আবারও পেল দেশের বাইরে টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ। এর আগে ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর ২০২১ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেই ছিল বিদেশে সিরিজ জয়ের স্মৃতি। এবার তাতে যুক্ত হলো পাকিস্তানের নাম।
এর আগে চতুর্থ দিনে পাকিস্তানকে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৭২ রানে অলআউট করে দেয় বাংলাদেশ। তাতে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ১৮৫ রানের। যেই লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে দারুণ শুরু এনে দেন জাকির ও সাদমান। স্কোরবোর্ডে ৪২ রান জমা করার পর শুরু হয় বৃষ্টি। যা না থামলে দিনের খেলা শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয় ম্যাচ অফিসিয়ালসরা। জয় থেকে তখনও ১৪৩ রান দূরে বাংলাদেশ।
তবে পঞ্চম দিনে জয়ের ঘ্রাণ নিয়েই খেলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। দুই ওপেনারে ভর করে দলীয় ফিফটি পায় বাংলাদেশ। জাকির নিজেও ছিলেন ফিফটির পথে। তবে হঠাৎই মির হামজার বলে ৪০ রানে থামতে হয় তাকে। ৫৮ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। এরপর ৭০ রানে এসে দ্বিতীয় উইকেট হারায় বাংলাদেশ। খুররম শেহজাদের বলে ২৪ রানে সাজঘরের পথ ধরতে হয় সাদমানকে। এরপর ১২৭ রানে সাজঘরের পথ ধরতে হয় অধিনায়ক শান্তকে। খানিক পর ফিরে যান মুমিনুল।