বাংলাদেশ-ভারত দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি
প্রথম ম্যাচে বাজেভাবে হারের দুঃস্মৃতি ভুলে নিজেদের সেরা পারফরমেন্স দিয়ে ভারতের বিপক্ষে সিরিজে সমতা আনার লক্ষ্যে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে আজ মাঠে নামতে যাচ্ছে সফরকারী বাংলাদেশ।-খবর তোলপাড়।
দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় আজ বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শুরু হবে ম্যাচটি। দেখা যাবে টি স্পোর্টস ও স্পোর্টস ১৮–১।
সিরিজ জয়ের স্বপ্ন নিয়ে দেশ ছাড়লেও দ্বিতীয় ম্যাচ হেরে গেলে সব আশা ধুলিসাৎ হয়ে যাবে বাংলাদেশের। যদিও প্রথম ম্যাচে শক্তিশালী ভারতের কাছে ধরাশায়ী হওয়ায় শেষ দুই ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানো কঠিন হয়ে যাবে বাংলাদেশের।
গোয়ালিয়রে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটেও নিজেদের মেলে ধরতে পারেনি বাংলাদেশের ব্যাটাররা। ১৯.৫ ওভারে ১২৭ রানে অলআউট হয় তারা। এরপর ভারতের ব্যাটারদের বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলো বাংলাদেশের বোলাররা। বাংলাদেশের ছুঁড়ে দেওয়া ১২৮ রানের টার্গেট ৪৯ বল বাকী রেখেই ৭ উইকেটে জয় পায় ভারত।
প্রথম ম্যাচের হারে স্বাভাবিকভাবে আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরেছে বাংলাদেশের। তবে বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত মনে করেন, প্রথম ম্যাচে যেমন পারফরমেন্স হয়েছে তার চেয়ে আরও ভালো দল তারা।
প্রথম ম্যাচে হারের পর শান্ত বলেন, ‘আমি বলবো না আমরা খারাপ খেলেছি। যা পারফরমেন্স করেছি, তার চেয়েও আমরা ভালো দল।’
তিনি আরও বলেন, ‘টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে দীর্ঘদিন ধরেই ভালো পারফরমেন্স করতে পারছি না আমরা। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি না, আমরা খুব খারাপ দল।’
শান্ত মনে করেন, ব্যাটিং প্রক্রিয়াটা আরও সঠিকভাবে করতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমার মনে হয় ব্যাটিং ইউনিট ভালো করেনি। কখনও কখনও আমাদের সঠিকভাবে বল নির্বাচন করতে হবে। আমরা এটি নিয়ে চিন্তা করছি। তবে এক্ষেত্রে চিন্তাভাবনা পরিবর্তন করতে তাড়াহুড়া করতে পারি না।’
এর আগে ভারতের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে হতাশাজনক পারফরমেন্স করেছে বাংলাদেশ। টেস্ট ফরম্যাটে এখনও ভারতকে হারাতে পারেনি বাংলাদেশ।
টি-টোয়েন্টিতেও ভারতের বিপক্ষে রেকর্ড ভালো না বাংলাদেশের। ১৫ ম্যাচের ১৪টিতে হেরেছে টাইগাররা। ২০১৯ সালের সফরে দিল্লিতে ভারতের বিপক্ষে একমাত্র জয়টি পেয়েছিল বাংলাদেশ।
পাঁচ বছর আগে দিল্লির সেই স্মৃতি সিরিজ বাঁচিয়ে রাখতে অনুপ্রাণিত করতে পারে বাংলাদেশকে।
তবে শান্ত বলছেন, ভারতের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পাওয়ার প্লে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। প্রথম ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে মাত্র ৩৯ রান করেছিল বাংলাদেশ। ভারতের সংগ্রহ ছিলো ৭১ রান।
শান্তর মতে, পাওয়ার প্লে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে না পারলে পরের দিকের ব্যাটারদের উপর চাপ সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রথম ছয় ওভারে উইকেট ধরে রাখতে হবে এবং রান করতে হবে। নয়তো পরের দিকে ব্যাটারদের জন্য খুব চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়বে। পাওয়ার প্লেতে আমাদের লড়াই করতে হয়েছে। পাওয়ার প্লেতে যারা ব্যাট করে তাদের দায়িত্ব নিতে হবে।’
শান্ত আরও জানান, ভারতের এই দলকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে হলে প্রতি ম্যাচেই ১৮০ রান করার কৌশল শিখতে হবে বাংলাদেশকে, ‘আমরা ঘরের মাঠে ১৪০-১৫০ রানের উইকেটে খেলি। আমাদের ব্যাটাররা জানে না কিভাবে ১৮০ রান করতে হয়। আমি শুধু উইকেটকেই দায়ী করবো না।’
বাংলাদেশের সামনে তাকাতে চাওয়া মানেই আজকের দ্বিতীয় ম্যাচ। সিরিজে টিকে থাকতে হলে যেটিতে জিততেই হবে। অবসরের ঘোষণা দেয়া মাহমুদউল্লাহর জন্য হলেও যে সিরিজে বাংলাদেশ দল বিশেষ কিছু করতে চায়। সেই ‘বিশেষ কিছু’ যদি হয় দিল্লির নতুন পেস, বাউন্স আর ব্যাটিং–স্বর্গ উইকেটে, তাহলে তো কথাই নেই!
বাংলাদেশ একাদশ: নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক), তানজিদ হাসান তামিম, পারভেজ হোসেন ইমন, তাওহিদ হৃদয়, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, লিটন কুমার দাস, জাকের আলি অনিক, মেহেদি হাসান মিরাজ, মাহেদি হাসান, রিশাদ হোসেন, মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, তানজিম হাসান সাকিব ও রাকিবুল হাসান।
ভারত একাদশ : সুর্যকুমার যাদব (অধিনায়ক), অভিষেক শর্মা, সঞ্জু স্যামসন, রিঙ্কু সিং, হার্দিক পান্ডিয়া, রিয়ান পরাগ, নিতিশ কুমার রেড্ডি, তিলক ভার্মা, ওয়াশিংটন সুন্দর, রবি বিষ্ণোই, ভারুন চক্রবর্তী, জিতেশ শার্মা, অর্শদিপ সিং, হার্শিত রানা ও মায়াঙ্ক যাদব।