বড় অঙ্কের নতুন ঋণ নয় সীমা অতিক্রমকারীদের
বড় অঙ্কের ঋণসীমা সমন্বয়ের সময় আর বাড়ানো হবে না। যেসব বড় শিল্প গ্রুপের ঋণ এখনও বড় অঙ্কের ঋণ সীমার বেশি রয়েছে তাদেরকে অবিলম্বে সীমার মধ্যে নামিয়ে আনতে হবে। একইসঙ্গে নতুন ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ওই সীমা অনুসরণ করতে হবে।
বুধবার এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ নির্দেশনা অবিলম্বে কার্যকর হবে।-খবর তোলপাড় ।
সূত্র থেকে জানা যায়, ব্যাংক খাতে ঋণ শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। যেসব কোম্পানি বা গ্রুপের ঋণসীমা বেশি রয়েছে তাদেরকে বড় অঙ্কের ঋণ দেয়া যাবে না।
ব্যাংকগুলো এখন কোনো গ্রাহক বা গ্রুপকে মোট মূলধনের ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ দিতে পারে। এর মধ্যে ১৫ শতাংশ নগদ আকারে ও বাকি ১০ শতাংশ পরোক্ষ ঋণ হিসেবে যথা-এলসি খোলা, ব্যাংক গ্যারান্টিসহ নানা খাতে দিতে পারে। কিন্তু বর্তমানে অনেক গ্রুপের ঋণ ব্যাংকের মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি রয়েছে। এতে ব্যাংকের ঋণ কোনো একক কোম্পানি বা গ্রুপের কাছে কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়ছে। একই সঙ্গে ব্যাংক খাতে ঝুঁকি তৈরি করছে।
এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ২০২২ সালের ১৬ জানুয়ারি একটি সার্কুলার জারি করে ব্যাংকগুলোকে বড় অঙ্কের সীমা অতিরিক্ত ঋণ সমন্বয় করার জন্য সময় বেঁধে দিয়েছিল। এর মধ্যে ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সব গ্রাহকের অতিরিক্ত ঋণ নির্ধারিত সীমার মধ্যে নামিয়ে আনার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। বিদ্যুৎ খাতের উদ্যোক্তাদের অতিরিক্ত ঋণ ২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সমন্বয় করতে বলেছিল। ইতোমধ্যে বিদ্যুতের খাতে ঋণ সমন্বয় করার সীমা সাড়ে ৪ মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। অন্য কোম্পানি বা গ্রুপের ঋণ সীমা সমন্বয়ের সময় ১ বছর সাড়ে ৪ মাস আগেই শেষ হয়ে গেছে। এখনও অনেক গ্রুপের ঋণ সমন্বয় করা হয়নি। উল্টো অনেক ব্যাংক তাদের কিছু গ্রাহকের ঋণ সীমার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আবেদন করেছে। অনেকে এ বিষয়ে ব্যক্তিগত যোগাযোগও করছে।
এ কারণে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ওই সার্কুলার জারি করে বলেছে, সম্প্রতি কতিপয় ব্যাংক থেকে একক গ্রাহক বা গ্রুপের ঋণের ঊর্ধ্বসীমা শিথিল করার জন্য আবেদন করা হচ্ছে। এটি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনার পরিপন্থি। এ প্রেক্ষাপটে বড় অঙ্কের ঋণ ঝুঁকি হ্রাস, করপোরেট সুশাসন সমুন্নত রাখা এবং ঋণ বিতরণে উত্তম চর্চা নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে ব্যাংকিং খাতের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার লক্ষ্যে একক গ্রাহক ঋণ সীমা কোনোক্রমেই অতিক্রম না করার বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করা যাচ্ছে। বড় অঙ্কের ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে গ্রুপের আওতা নির্ধারণে আগের নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।