গভীর রাতে দস্তগীরের বাসায় ভাঙচুর, কার্টনে ভরে নিয়েছে মালামাল
ঢাকার সিদ্ধেশ্বরীতে সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর বাসায় গভীর রাতে একদল লোক ঢুকে ব্যাপক ভাঙচুর চালিয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সদস্য পরিচয় দিয়ে শনিবার গভীর রাতে একদল লোক এই ঘটনা ঘটায় বলে অভিযোগ করা হয়।-খবর তোলপাড়।
বাসার নিরাপত্তাকর্মী ও স্থানীয় ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, তিনটি মাইক্রোবাসে ১৫–২০ জন রাত দুইটার দিকে বাসার সামনে আসেন। তাদের দুজনের গায়ে থানা–পুলিশের পোশাক ছিল। কয়েকজনের গায়ে ডিবির জ্যাকেট ছিল। বাকিরা ছিলেন সাদাপোশাকে। ফটকে এসে পুলিশ পরিচয় দিয়ে অভিযান চালানোর কথা বলে বাসার ভেতরে ঢুকতে চান। নিরাপত্তাকর্মীরা তালা খুলতে রাজি না হলে তারা তালা ভেঙে বাসার ভেতরে ঢোকেন। দোতলা বাসার চারটি কক্ষে ব্যাপক ভাঙচুর করে স্বর্ণালংকারসহ দামি জিনিসপত্র নিয়ে যান।
তারা জানান, ফটকের তালা ভেঙে তারা বাসার ভেতরে গিয়ে প্রথমে সিসিটিভি ক্যামেরা ভাঙচুর করেন। পরে বাসার চারটি কক্ষের আসবাব ভাঙচুর ও তছনছ করা হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টা পর বাসা থেকে বেরিয়ে যান ওই ব্যক্তিরা। এ সময় তারা একটি কার্টন ও দুটি বাজারের ব্যাগে ভরে বেশ কিছু জিনিসপত্র নিয়ে যান।
ডাকাত দল হানা দিয়েছে, এমন শঙ্কা থেকে রাতেই রমনা থানায় গিয়েছিলেন গাজী গ্রুপ সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা। তখন তাকে বলা হয়, সেখানে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) অভিযানে গেছে। রোববার এ বিষয়ে জানতে চাইলে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক বলেন, সাবেক পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজীর বাসায় অভিযানে গিয়েছিল ডিবি। তবে বিস্তারিত কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
পরে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ডিবির কোনো দল সেখানে অভিযানে যায়নি।
নিরাপত্তাকর্মী আবুল হোসেন বলেন, গেট না খোলায় দেয়াল টপকে একজন ভেতরে ঢোকেন। তিনি একটি রড দিয়ে গেটের তালা ভেঙে বাসার ভেতরে ঢোকেন। দুজনকে গেটে পাহারায় রেখে ১০–১২ জন বাসার ভেতরে ঢোকেন।
তিনি বলেন, বাসায় ঢুকেই তারা দুটি সিসিটিভি ক্যামেরা ভেঙে ফেলেন। এরপর গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা বাসার ভেতরে ছিলেন পুলিশ সদস্যরা। ভোর সাড়ে চারটার দিকে বেরিয়ে যান তারা।
এসময় তারা এক নিরাপত্তাকর্মীর কাছ থেকে সাদা কাগজে স্বাক্ষর নেন। নিরাপত্তাকর্মীকে বলা হয়, তারা বাসা থেকে কোনো জিনিসপত্র নেননি, সেটার সাক্ষী তিনি। ভয়ে ওই নিরাপত্তাকর্মী কোনো কথা বলেননি।
গোলাম দস্তগীর গাজীর স্ত্রী হাসিনা গাজীকে গ্রেপ্তার করতে ওই বাসায় গিয়েছিল ডিবি। তবে বাসায় তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে গাজী গ্রুপের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে আজ গণমাধ্যমকে বলেন, প্রথমে তারা মনে করেছিলেন বাসায় ডাকাতি হচ্ছে। রাতেই তারা রমনা থানায় যান। ওই বাসায় ডিবির অভিযান চলছে বলে তখন রমনা থানার পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়।