সোমবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৪:১১ অপরাহ্ন
সংবাদদাতা, শেরপুর:
শেরপুর পৌর শহরের মধ্য শেরীপাড়া মহল্লার সালেহা কটেজের একটি নারকেল গাছ পাড় ধসে পুকুরের মাঝখানের গভীর গর্তে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়েছে। গাছটি হেলে না পড়ে দাঁড়িয়ে থাকায় এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে শুরু হয়েছে কৌতূহল। প্রতিদিন কয়েক হাজার উৎসুক মানুষ গাছটি দেখতে ভিড় করছেন।
তাদের অনেকে মনে করছেন, গাছটিতে জিন-ভূত ভর করেছে। অনেকে রোগমুক্তির আশায় পুকুরের পানি বাড়ি নিয়ে পান করছেন, কেউ-বা গোসল করছেন।
জেলা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সহকারী বন সংরক্ষক সাদেকুল ইসলাম খান ও জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আল-মাহমুদ জানান, এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কোনো আশ্চর্যজনক ঘটনা নয়।
জানা গেছে, প্রয়াত ভাষাসৈনিক অধ্যক্ষ আব্দুল হান্নান ৫০ বছর আগে পুকুরের চারপাশে নারকেল গাছ রোপণ করেন। ৩ জুলাই রাতে সবগুলো গাছ থাকলেও একটি গাছ পাড় ধসে পুকুরের মাঝখানের গভীর গর্তে গিয়ে দাঁড়িয়ে পড়ে। গাছটির এমন অবস্থান পরিবর্তন দেখে ওই এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয় সুবাসী রাণী জানান, আগে বাড়িটি জমিদারদের বসতভিটা ছিল। ওই কারণে মানুষের বিশ্বাস এখানে ভুতুড়ে কর্মকাণ্ড ঘটে।
শহরের মোবারকপুর মহল্লার বাসিন্দা হুমায়ুন কবির জানান, তিনি প্রথমে বিশ্বাস করেননি। স্বচক্ষে দেখে মনে হচ্ছে এটি বিরল ঘটনা। নয়তো গাছটি ডানে-বামে একটু হলেও হেলে থাকত।
সদরের চরশেরপুর ইউনিয়নের মরিয়ম বেগম জানান, এই পুকুরে বিশেষ কিছু আছে। যা আকর্ষণ করছে তাকে। তিনি পুকুরে নেমে গোসল করেছেন।
ঝিনাইগাতী থেকে নমশেদ মিয়া সিএনজি ভাড়া করে এসেছেন। তিনি জানান, তার পা অনেক দিন ধরে ব্যথা করে। চার বোতল পুকুরের পানি নিয়েছেন। এগুলো পান করবেন ও শরীরে মাখবেন।
উদ্ভিদ বিশেষজ্ঞ ড. মোহিত কুমার দে জানান, নারকেল গাছটি পাড় ধসে পুকুরের গভীর গর্তে গিয়ে ঠাঁই নিয়েছে। গাছের শিকড়গুলো মাটিকে আঁকড়ে থাকায় হেলে পড়েনি এখনও।
শেরপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আল-মাহমুদ জানান, বৃষ্টির পানির ঢলে পাড় ভেঙে নারকেল গাছটি মূল শিকড়ের মাটিসহ অবস্থান পরিবর্তন করেছে। গাছের নিচের শিকড় শক্ত করে মাটির চাকটি আঁকড়ে থাকায় গাছটি হেলে পড়েনি। এটি খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। জিন-ভূতে ধরেনি।