৭০ বছর বয়সী বৃদ্ধের লালসার শিকার ৬ বছরের শিশু
সংবাদদাতা, নাটোর:
নাটোরের গুরুদাসপুরে ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে গফুর মোল্লা (৭০) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন।
রবিবার (৩ নভেম্বর) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। থানা হাজত থেকে আদালতে পাঠানোর সময় অভিযুক্ত গফুর মোল্লা নিজেকে নিরপরাধ দাবি করেছেন। এর আগে শনিবার দুপুরে গুরুদাসপুর পৌর এলাকায় এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ওই দিন রাতে মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে থানায় ধর্ষণ মামলা করেন। পরে গভীর রাতে গফুর মোল্লাকে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গফুর পৌর সদরের খামারনাচকৈড় খোয়ারপাড়া মহল্লার আহাদ আলী মোল্লার ছেলে।
অন্যদিকে, অসুস্থ অবস্থায় ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. শারমিন জাহান লুনা বলেন, শিশুটির আলামত সংগ্রহ করে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হচ্ছে। ধর্ষণের কারণে মেয়েটির গোপনাঙ্গ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসার পাশাপাশি স্যালাইন দিয়ে রাখা হয়েছে। অচেতন হয়ে বেডে ঘুমাচ্ছে মেয়েটি, আর মা শিশুটিকে জড়িয়ে ধরে থাকছেন বলেও জানান তিনি।
পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবার সূত্রে জানা যায়, শনিবার দুপুরে গফুর মোল্লার লিচুবাগানে প্রতিবেশি ভ্যানচালকের ছয় বছর বয়সী কন্যা শিশু খেলতে গিয়েছিল। সুযোগ বুঝে তাকে ধর্ষণ করেন গফুর মোল্লা। ঘটনার পর মেয়েটি বাড়িতে গিয়ে কান্না শুরু করে। তার গোপনাঙ্গ থেকে রক্ত ঝরতে দেখে ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন মা। এ জন্য প্রতিবেশী গফুর মোল্লাকে দায়ী করে মেয়ে।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে শিশুটির মা বলেন, ঘটনার পর থেকে মেয়েটির কান্নাকাটি থামছেই না। হাসপাতালে ভর্তির পর ভয়–আতঙ্কে জড়োসড়ো হয়ে পড়েছে। কোনো কথা বলছে না, ঠিকমতো খাচ্ছে না। চোখ খুলেই তাকে জড়িয়ে ধরে অপলক চেয়ে থাকছে। শিশুটির মা আক্ষেপ করে বলেন, এতটুকু এক শিশুর ওপর এমন পাশবিক নির্যাতন কোনো মানুষ করতে পারে! মেয়ের ওপর নির্যাতনকারীর শাস্তি দাবি করেন মা।
শিশুটির বাবা জানান, ধর্ষণকারী এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তি। মামলা না করার জন্য তাকে আর্থিক প্রলোভন ও নানাভাবে চাপ, ভয়ভীতি দেখাচ্ছিলেন। শিশুমেয়েটির কারণে ভয়ে পিছু হটেননি তিনি। কারণ তার মেয়ের সঙ্গে যে অমানবিক অত্যাচার করা হয়েছে, তা ক্ষমা করা যায় না। ন্যায়বিচার পেতে শেষ পর্যন্ত লড়বেন বলে জানান তিনি।
এ ব্যাপারে গুরুদাসপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম সারওয়ার হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর একজন নারী পুলিশ কর্মকর্তাকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। সেখানকার একজন নারী চিকিৎসকের সহায়তায় শিশুটির গোপনাঙ্গ পরীক্ষা–নিরীক্ষা করে ধর্ষণের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হয়েছেন তিনি। তবে মেয়েটির সঙ্গে যেটা ঘটেছে, তা বর্ণনা করার মতো নয় বলে উল্লেখ করেন পুলিশের ওই কর্মকর্তা।