মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৩:০৭ অপরাহ্ন
আনছার আলী তুহিন, রৌমারী (কুড়িগ্রাম):
কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়নের বড়াইকান্দি বাজারের ইউনিয়ন ভুমি অফিস সংলগ্ন সরকারি জমি অবৈধ ভাবে দখল করে দোকান ঘর নির্মানের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতির বিরুদ্ধে। গত শনিবার দিনগত রাতের অন্ধকারে শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যানের গ্রাম পুলিশ ও স্বানীয় ছাত্রলীগ সভাপতির নেতৃত্বে এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।
সহকারি কমিশনার (ভুমি) কর্মকর্তাকে অভিযোগ ও সরেজমিন সূত্রে জানা যায়, বড়াইকান্দি বাজারে ইউনিয়ন ভুমি অফিসের সামনের পরিত্যাক্ত জায়গায় শৌলমারী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ সুজনের নেতৃত্বে ও ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে পাহারা থাকা ৯ জন গ্রাম পুলিশের সহযোগীতায় আমজাদ হোসেন ও ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের নামে রাতের অন্ধকারে দোকান ঘর নির্মান করা হয়। স্থানীয় লোকজন সহকারি কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা জিন্নাতুল ইসলামকে অভিযোগ করলে, তিনি ঘরের চাল, বেড়া ভেঙ্গে জব্দ করে রাখার নির্দেশ দেন ইউনিয়ন সহাকরি ভুমি কর্মকর্তাকে। এদিকে ইউনিয়ন সহকারি ভূমি কর্মকর্তা বলছেন সরকারি জমি অবৈধ ভাবে দখল করার কোনো সুযোগ নেই। স্যারের নির্দেশে ঘর নির্মাণ করা ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শী সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল হুদা আকন্দ, সাবেক চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিনু মাষ্টার, আওয়ামী লীগ নেতা মোজাফ্ফর হোসেনসহ অনেকেই বলেন আমরা জেনেছি, এ জায়গাটি দীর্ঘদিন থেকে ফাঁকা পরে ছিল। অর্র্থের বিনিময়ে গত শনিবার রাতের আধারে গ্রাম পুলিশ ও ছাত্রলীগ সভাপতির নেতৃত্বে আমজাদ হোসেন ও চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের নামে ঘর দুটি নির্মান করা হয়েছিলো।
বোয়ালমারী যুব সমবায় সমিতি লিঃ এর সভাপতি আব্দুল হামিদ ও সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক দাবি, তাদের সমিতির নামে সরকারের নিকট থেকে ২০১২ সালে জায়গাটা লিজ নেওয়া হয়। সেখানে ঘর নির্মান করে দীর্ঘদিন অফিস কার্যালয় হিসাবে চালিয়ে আসা হয়েছিল। ঝড় তুফানে ঘরটি নষ্ট হয়ে গেলে ভাঙ্গা অবস্থায় রয়ে যায়। হঠাৎ কওে জানতে পারি রাতের আধারে বর্তমান চেয়ারম্যান গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে ও ছাত্রলীগ সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ সুজন তার লোকজন নিয়ে আমজাদ ও চেয়ারম্যানের নামে দুটি ঘর নির্মান করা হয়। সহকারি কমিশনার ভূমিকে অভিযোগ দিয়ে ঘরটি ভেঙ্গে দেয়া হয়েছে।
এব্যাপারে শৌলমারী ইউনিয়ন ছাত্রলীগ সভাপতি হুমায়ুন আহমেদ সুজন বলেন, অর্থ নিয়ে অবৈধ ভাবে দোকান ঘর নির্মানের বিষয়টি আমি জানিনা। তবে যারা বলেছে মিথ্যা বলছে। আমজাদের বাড়ি আমার বাড়ির পাশাপাশি বলে আমি দেখতে গিয়েছিলাম। অভিযোগ অবৈধ দখলদার আমজাদ হোসেন জানান, এখানকার সকল সম্পত্তি আমার বাব দাদার পৈত্রিক সম্পত্তি। আমার এক সময় এখানে দোকান ঘর করে চা বিক্রি করতাম। বর্তমানে আমি অসহায় হওয়ায় একটি চায়ের দোকান ঘর দেয়ার জন্য ঘরটি নির্মান করে ছিলাম।
উপজেলা আ’লীগের সাবেক যুগ্ন-সাধারণ সম্পাদক ও শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, কে বা কাহারা ঘর নির্মান করেছে, তা আমি জানিনা। গ্রাম পুলিশ সেখানে পাহারায় রাখা ছিল। যাতে কেউ ঘর তুলতে না পারে।
শৌলমারী ইউনিয়ন সহকারি (ভুমি) কর্মকর্তা রুহুল্লাহ বলেন, অবৈধ ভাবে ঘর নির্মাণ করা হয়েছে শুনে সহকারি কমিশনার ভূমি স্যারকে বিষয়টি অবগত করলে আমাকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। পরে ঘরটি ভেঙ্গে জব্দ করে রাখি। সহকারি কমিশনার (ভূমি) মো:জিন্নাতুল ইসলাম বলেন, সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে ঘর নির্মানের বিষয়টি আমাকে জানালে, ঘরটি ভেঙ্গে নির্মাণাধীন সামগ্রী জব্দ করে রাখার নির্দেশ দেই।