বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৫:০৩ অপরাহ্ন
পাকিস্তানের ক্ষমতাসীন জোট সরকারের দুই অংশীদার পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজ (পিএমএল-এন) ও পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) আগামী ৮ আগস্ট দেশটির জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেয়ার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছেছে।
পার্লামেন্টে ভেঙে দিয়ে নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হতে পারে বলে মঙ্গলবার একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে।-খবর তোলপাড় ।
তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে দেয়া এক বার্তায় পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী মরিয়ম আওরঙ্গজেব এখনও পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ভেঙে দেয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, ক্ষমতাসীন জোটের অংশ পিডিএম এবং অন্যান্য সহযোগী রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনা করে (সংসদের বিলুপ্তির) সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সংসদের উচ্চকক্ষ জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেয়ার তারিখের সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে।
দেশটির বর্তমান জাতীয় সংসদের পাঁচ বছরের সাংবিধানিক মেয়াদ আগামী ১২ আগস্ট মধ্যরাতে শেষ হবে। অর্থাৎ দেশটির সংসদ যে তারিখে ভেঙে দেয়ার বিষয়ে উভয় রাজনৈতিক দল সম্মত হয়েছে তার চারদিন পর সংসদের মেয়াদ পূর্ণ হবে।
একাধিক সূত্রের বরাত দিয়ে জিও নিউজ জানিয়েছে, পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার তারিখ হিসেবে ৯ ও ১০ আগস্টও আলোচনায় এসেছিল। কিন্তু আগাম ভেঙে দেয়ায় যাতে কোনও বাধা না আসে সেজন্য আগামী ৮ আগস্টের বিষয়ে ক্ষমতাসীন জোটের নেতারা রাজি হয়েছেন।
পাকিস্তানের আইন অনুযায়ী, দেশটির প্রেসিডেন্ট সরকারে থাকা দলগুলোর সিদ্ধান্তে অনুমোদন না দিলেও ৪৮ ঘণ্টা পর সংসদ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। দেশটির সংবিধানের ২২৪ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, যদি ভেঙে দেয়া না হয়, তাহলে জাতীয় পরিষদ বা প্রাদেশিক পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ৬০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তবে সংবিধানের ২২৪(২) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, সংসদের সাংবিধানিক মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে যদি তা ভেঙে দেয়া হয়, তাহলে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি) পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে সাধারণ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে বাধ্য।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, আগামী আগস্ট মাসে আমাদের সরকারের মেয়াদ শেষ হবে। আমরা মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই বিদায় নেব এবং একটি অন্তর্বর্তী সরকার চলে আসবে।
এর আগে, সাংবিধানিক মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই দেশটির সংসদ ভেঙে দেয়ার প্রস্তাব করেছিল পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের জোটসঙ্গী পিপিপি।
আইন অনুযায়ী, জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেয়ার সাথে সাথেই কেন্দ্রীয় সরকার তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী মনোনীত করবে। দেশটির সংবিধানের ২২৪ অনুচ্ছেদে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়োগের প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
তবে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ কয়েকদিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচিত সব প্রতিনিধিদের মধ্যে কেবল জাতীয় পরিষদের স্পিকার রাজা পারভেজ আশরাফ ক্ষমতায় থাকবেন। নব-নির্বাচিত আইনপ্রণেতাদের শপথ গ্রহণ ও স্পিকারের স্থলাভিষিক্ত নির্বাচন না করা পর্যন্ত রাজা পারভেজ স্বপদে বহাল থাকবেন।