বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৫০ অপরাহ্ন
সংবাদদাতা, সুনামগঞ্জ:
গত তিন বছর পূর্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয় থেকে দুজনার মধ্যে গড়ে উঠে ভালবাসার সম্পর্ক। গভীর প্রেমের পূর্ণতায় বাধা ছিল কাটাতার, পরিবার,জাতীয়তা ও ভৌগোলিক সীমানা। কিন্তু সকল বাধা অতিক্রম করে প্রেমিক আশরাফুল আলমের কাছে বাংলাদেশে তিন বছরের প্রচেষ্টা সফল হয়েছে কারিসমা শেখ।
পরিবারকে বুঝিয়ে পাসপোর্ট-ভিসা নিয়ে কাঁটাতারের সীমানা পেরিয়ে বাংলাদেশি প্রেমিকের বাড়িতে এসেছেন ভারতীয় তরুণী কারিশমা শেখ (১৯)। এমনি ঘটনা ঘটেছে সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের চরগাঁও গ্রামে।
কারিশমা ভারতের আসাম প্রদেশের শোনিতপুর বালিডাঙ্গা গ্রামের আবদুল কাচিম শেখের কন্যা ও তার প্রেমিক সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার ধনপুর ইউনিয়নের চরগাঁও গ্রামের আলফাজ উদ্দিনে ছেলে কলেজছাত্র আশরাফুল আলম (২২)। তিনি বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দীগেন্দ্র বর্মণ সরকারি ডিগ্রি কলেজের ডিগ্রি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী।
গত ১৬ জুলাই বেনাপোল সীমান্ত হয়ে বৈধ পন্থায় আশরাফুলের বাড়িতে আসেন এই তরুণী। এসে গত ১৯ জুলাই সুনামগঞ্জ নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে তারা ইসলামি শরিয়ত অনুযায়ী বাঙালি প্রেমিকের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন।
ভারতীয় তরুণী বাঙালি প্রেমিকের বাড়িতে এসে বিয়ে করার ঘটনা জানাজানি হওয়ায় এলাকায় হৈচৈ পড়েছে। নবদম্পতিকে দেখতে আসছেন আশপাশের লোকজন।
খোঁজ নিয়ে জানাযায়, গত তিন বছর আগে ভারতীয় তরুণী কারিশমার সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয় আশরাফুলের। পরিবারের অজান্তেই তাদের মধ্যে গভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এ সম্পর্কের কথা জানাজানি হওয়ার পর অন্য দেশের ছেলে হওয়ায় বাদ সাধেন কারিশমার বাবা। কিন্তু নাছোড়বান্দা কারিশমা বাবাকে বুঝিয়ে রাজি করান। এর পর সম্পর্ক মেনে নেয় দুজনের পরিবার। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় কাঁটাতার আর জাতীয়তা। অবশেষে সব বাধা ডিঙিয়ে পরিবারের সহযোগিতায় গত ১৬ জুলাই বেনাপোল সীমান্ত হয়ে বৈধ পন্থায় আশরাফুলের বাড়িতে আসেন এই তরুণী। গত ১৯ জুলাই সুনামগঞ্জ নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে তারা বিয়ে করেন।
এ বিষয়ে কারিশমা শেখ (১৯) বলেন, আমার প্রেমিক অনেক ভাল এবং খুব চমৎকার মনের মানুষ। পাশাপাশি সহজ সরল ও ভালোবাসা পরিপূর্ণ পরিবারের সব মানুষ। তিনি আরও বলেন আমি সবাইকে খুব ভালোবাসি এবং স্বামীর সঙ্গে বাংলাদেশে থাকতে চাই। আমি বাংলাদেশের সরকারের কাছে নাগরিকত্ব দাবি করছি।
আশরাফুল আলমের বাবা আলফাজ উদ্দিন বলেন, মেয়েটি তার নিজ দেশ,মা বাবা সহ সব কিছুর মায়া ত্যাগ করে আমার ছেলের কাছে চলে এসেছে। মেয়েটিকে আমি মেয়ে হিসেবে মেনে নিয়েছি। ছেলে বউয়ের নাগরিকত্বের জন্য সরকারের কাছে আবেদন করব।
বিশ্বম্ভরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, কারিশমা শেখ বৈধভাবে বাংলাদেশে এসেছে কিনা সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়া হবে।