স্ত্রীর ভারতীয় শাড়ি পুড়লো রিজভী
নিজ স্ত্রীর ভারতীয় শাড়ি রাস্তায় ছুড়ে ফেলে পুড়িয়ে দিয়েছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আমাদের ঐক্য ইস্পাতের মতো কঠিন। এই ঐক্য কেউ ভাঙতে পারবে না। আমরা ওদের (ভারত) দেশের স্বাধীনতা ও পতাকাকে সম্মান করবো। তারা যদিও আমাদের পতাকাকে অসম্মান করেছে। কিন্তু আমরা ওদের পণ্য বর্জন করবো।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাধারণ চিকিৎসক সমাজের উদ্যোগে আয়োজিত ভারতীয় পণ্য বর্জন কর্মসূচিতে তিনি এসব কথা বলেন। -খবর তোলপাড়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ভারতের আগরতলায় কিছু উগ্রবাদী মানুষ বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনের প্রধান ফটক ভেঙে আমাদের কর্মচারীদের আঘাত করেছে। আমাদের জাতীয় পতাকার যে খুঁটি রয়েছে সেটি ভেঙে পতাকাকে ছিঁড়েছে। কলকাতায় যে হাইকমিশন রয়েছে সেখানে গিয়ে তারা আজেবাজে বলেছে। বোম্বের ডিপুটি হাইকমিশনেও বলেছে। তাদের বাংলাদেশবিরোধী নানা প্রচার দেখছি। তোমরা আমাদেরকে পছন্দ করো না, তারপরও তোমাদের জিনিস কিনতে হবে? বাংলাদেশের মানুষ তো মাথা নত করার নয়। আমরা একবেলা খেয়ে থাকবো, তারপরও মাথা নত করবো না।’
ভারতীয়দের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনাদের কিসের এত অহংকার? কেন পদানত করে রাখতে চান? আপনারা নাকি পেঁয়াজ, আদা না দিলে আমরা খেতে পারবো না। আপনাদের আদা, পেঁয়াজ আমাদের দরকার নেই। আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রচুর আদা হয়। নীলফামারিতেও হয়। আদার চাষ বাড়িয়ে দিবো। আপনাদের উপর মুখাপেক্ষী থাকবো, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। একটু দেবেন, আর যা বলবেন তাই শুনতে হবে- হাসিনার মতো দু’একজন থাকতে পারে। কিন্তু কোটি কোটি বাংলাদেশি এটা মানবে না।
‘ভারত থেকে নাকি ডাক্তার না আসলে আমাদের চিকিৎসা হয় না’ এমন কথা উল্লেখ করে রিজভী বলেন, আপনারা কি আমাদেরকে বিনা পয়সায় চিকিৎসা দেন! নাকি বিনা টাকায় এক কাপ চা খাওয়ান! এরকম নজির তো নেই। আমাদের দেশের লোক ওখানে গিয়ে ডলার খরচ করে। এখন কলকাতার নিউমার্কেট বন্ধ, দোকান পাট বন্ধ। সেখানে আর কোনো ক্রেতা নেই। আমাদের ডলারে এগুলো কেনা হতো।
বাংলাদেশিদের উদ্দেশ্যে বিএনপির এই সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ওরা (ভারত) বাংলাদেশের মর্যাদাকে লুণ্ঠিত করার চেষ্টা করেছে, পতাকা পুড়িয়েছে কিন্তু আমরা ভারতের পতাকা লাঞ্ছিত করবো না। আমরা আরেকটি স্বাধীন দেশের মর্যাদাকে ছোট করবো না। প্রত্যেক জাতির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে সম্মান করবো। ওদের (ভারত) মতো ছোটলোকি করবো না।
তিনি বলেন, গতকাল প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে বসেছেন। জাতির সংকটকালে আমরা এভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল আগ্রাসন ঠেকাবো। যারা আমাদেরকে অপছন্দ করে, যারা শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি; যে ব্যক্তি বাংলাদেশের মানুষের উপর অত্যাচার, নিপীড়ন করেছে, ছাত্র-জনতার রক্তে রাজপথ লাল করেছে সেই নিষ্ঠুর হাসিনাকে তারা (ভারত) পছন্দ করে। বাংলাদেশের মানুষকে পছন্দ করে না। বাংলাদেশ টিকে থাকুক এটা চায় না। আজকে তারা (ভারত) বাংলাদেশে নানা ধরনের উস্কানি দিচ্ছে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তাদের উস্কানিতে কান দেয়নি। ছোট্ট যে দু’একটি গোষ্ঠী উষ্কানিতে পা দিয়েছে, তারা চিহ্নিত হয়ে গেছে। পার্শ্ববর্তী দেশ যে আমাদের এখানে উস্কানি দিতে পারে এটা গোটা জাতি ধরে ফেলেছে।
কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব আবদুস সালাম আজাদ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, ছাত্রদল নেতা ডা. আব্দুল আউয়াল প্রমুখ।