গল্পঃ সুখের ঘরে আগুন

–নুর ই আল সাহাত চৌধুরী
আতিয়ার রহমান একজন কৃষক। কৃষি কাজ করে তার জীবন সংসার চলে । ঘরে তার বউ আর চার সন্তান আছে।এই নিয়ে তাদের সুখের সংসার।তার বউ টা খুব ভালো কোনো দিন কারো সাথে কখনো ঝগড়া করে নি । তার বউর নাম অফিকা বানু।সে একজন সহজ সরল মানুষ। শশুর শাশুড়ির মাঝে তাকে খেতে হয়। কখনো তার শশুর শাশুড়ির সাথে ঝগড়া করে নি ।ছেলে মেয়ে অনেক বড় হয়ে গেছে। তার তিন ছেলে আর এক মেয়ে। তার বড় ছেলের বিয়ের বয়স হইছে । এইবার বিয়ে দিতে হবে। তাই সে চারদিকে ঘটক পাঠায় কোথাও কোন ভালো মেয়ে পাওয়া গেল না। তার বড় ছেলের পরিক্ষা তাই সে বাড়ি থেকে চলে যায় এক আত্মীয়ের বাসায় সেখান থেকে সে পরিক্ষা দিবে।
বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে চলে যায় সেখানে। যার বাড়িতে উঠছে সে তার খালা হয়। সেখান থেকে সে ভালো ভাবে পরিক্ষা দিয়ে বাড়ি আসে ।
তার খালার বাড়িতে থেকে ঘটক আসলো সেখানে একটা পালক মেয়ে তার খালার বাড়িতে থাকে তাকে দিয়ে তার বড় ছেলে সাদেকুল এর বিয়ে দিবে। কিন্তু সাদেকুল সে বিয়ে করবে না। তার কথা আগে চাকরী করব তার পর বিয়ে করব । কিন্তু তার বাবা আর কোন কথা শুনছে না তাকে ওইখানে বিয়ে দিবে ।
এইদিকে মেয়ের বাড়ি থেকে আবার ঘটক আসে ৫ বিঘা জমি মেয়ের বাবা দিতে রাজি। আপনার ছেলের বিয়ে দিবেন কি। ছেলের বাবা বলে দিলো হ্যাঁ বিয়ে দিব । ছেলে কোনো ভাবে আর রাজি হচ্ছে না এইদিকে মেয়ের বাবা কে কথা দিয়েছে ছেলেকে বিয়ে দিবে। ছেলে রাজি হচ্ছে না বলে আতিয়ার রহমান অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে। পড়ে তাকে ডাক্তার এর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই দিকে ছেলেকে অনেক বার বুঝার পর রাজি করা হয়। ওইদিকে মেয়ের বাবা সব আয়োজন সম্পন্ন করছে।এরা গেলে বিয়ে হয়ে যাবে।
সবাই মিলে চলে গেল বিয়ে বাড়িতে। ৫লক্ষ টাকা দিন মহর করে সাদেকুল এর বিয়ে হয়ে গেল।
বিয়ের পর বেশ কিছু দিন সংসার ভালোই চলছে। সাদেকুল একটা স্কুলে ঢুকলো সেখানে তিনি চাকরী করতেছে। বেশ কয়েকদিন যাওয়ার পর আতিয়ার রহমান তার বউমার সাথে ঝগড়া করতে শুরু করে। তোর বাবা ৫ বিঘা জমি দিতে চেয়েছে নিয়ে আয়। মেয়ে কিভাবে তার বাবা কে বলবে সে যে তার নিজের বাবা না ।এভাবে আতিয়ার রহমান সে তার বউমার সাথে নির্যাতন করতে থাকে। এভাবে চলতে লাগবে বেশ কয়েকদিন।
তার নাতনি হইলো । অনেক এ বলে তার বউমার নাকি মাথায় সমস্যা আছে তাই সারাদিন শুধু চিল্লাচিল্লি করে। কাউকে বাড়ি ঢুকতেই দেয় না। মাঝে মাঝে তার শশুর শাশুড়ি কেও বাড়িতে ঢুকতে দেয় না।
এইদিকে বাড়িতে অভাব সৃষ্টি হচ্ছে। তার আরো দুই ছেলে এক মেয়ে আছে তারা লেখা পড়া করতেছে। তার দ্বিতীয় ছেলে সে অভাব দেখে একটা ডিলার এর সাথে কাজ করে। আর তার ছোট ছেলে আরিফুল আর তার মেয়ে রুমি পড়াশুনা করছে।
এভাবে বেশ কিছুদিন চলতে লাগলো তাদের দিন। আতিয়ার রহমান সে ও ভালো মানুষ না সব সময় তার বউমার সাথে ঝগড়া করে থাকে। কিন্তু তার শাশুড়ি অফিকা অনেক ভালো কখনো তার সাথে ঝগড়া করে নাই।
এইদিকে রাব্বি একটা মামলা খায় এইখানে তার বাবা তার জন্য অনেক টাকা খরচ করে তাকে উদ্ধার করে। তাকে উদ্ধার করতে গিয়ে তার বাবার সব জমি বিক্রি করে দেয়।জমি বিক্রি করে রাব্বি কে উদ্ধার করে অনেক।
এইদিকে আতিয়ার রহমান তার বউমার সাথে ঝগড়া করে বলে সাদেকুল ইসলাম মরতে চায়। আবার সাদেকুল ইসলাম অনেক মানুষ এর কাছে টাকা নিয়ে তারা দুই ভাই মিলে ব্যবসা শুরু করে।কিন্তু তারা ব্যবসায় বেশি দিন টেকতে পারে নি তাদের টাকা অনেক মানুষ খেয়ে নেয়।
এইদিকে রাব্বি ও ব্যবসা করতে করতে একটা মেয়ে কে বিয়ে করে। এইদিকে তার বাবা আরো বেশি ক্ষেপে যায় বাড়িতে আবার নতুন করে ঝগড়া সৃষ্টি করে দেয়। এইভাবে ঝগড়া করে বলে তার কোন সন্তান তাকে দেখতে পায় না। তার বাবা মানুষের কথা চলে বলে তার বাড়িতে ঝগড়া সৃষ্টি করে।
এই দিকে তার মেয়ের ও বয়স হইছে এখন তাকে বিয়ে দিতে হবে। কিন্তু তার ছেলেরা কেউ কথা শুনছে না। তার মেজো ছেলে রাব্বি কিছু টাকা খরচ করে তার মেয়ের বিয়ে দেয়। তার বাবা কে কে কি বলছে এই নিয়েও তার বাড়িতে ঝগড়া সৃষ্টি করে। কিন্তু তার ছেলেরা কোন কথা না শুনে তার মেয়েরকে তারা বিয়ে দেয়।
এভাবে আরো কিছুদিন চলতে লাগলো। এই তার ছোট ছেলের বিয়ে দিবে বলে তার জন্য মেয়ে দেখতে যায় কিন্তু মেয়ের বাবার এইখানে আর পছন্দ করে না বলে আরিফুল নিজে মেয়ে পছন্দ করে আজ রাতে বাড়িতে না বলেই সে বিয়ে করে।পাড়ার সকলে জানে আরিফুল বিয়ে করছে কিন্তু তার বাড়িতে কেউ জানে না। এভাবে তাদের সুখের সংসার আগুন লাগে। সেও বিয়ে করে অন্য জায়গায় থাকে আর বাড়িতে নিয়ে আসে না।তাই তার মা এই জীবনে সুখ পেলো না ।