৫ উইকেট হারালো বাংলাদেশ

সিলেট টেস্টে জয়ের জন্য বাংলাদেশকে ৫১১ রানের লক্ষ্য দিয়েছে শ্রীলংকা। টেস্ট ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ডটি ৪১৮ রানের। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের গড়া সেই রেকর্ডটি এখনো ভাঙতে পারেনি অন্য কোনো দল। তাই সিলেটের মতো ব্যাটারদের জন্য কঠিন পিচে বাংলাদেশ জিতবে, সেটিও ছিল দূরতম স্বপ্ন। তবে শেষ বিকেলে মাঠে নেমে যে টাইগার ব্যাটাররা এমন বিপর্যয় ঘটাবেন সেটিও আশা করেননি কেউ।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শেষ বিকেলে ৪৭ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারিয়েছে বাংলাদেশ। জয় থেকে এখনো দূরে ৪৬৪ রানে। প্রথম ইনিংসে শ্রীলংকার ২৮০ রানের বিপরীতে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছিল মাত্র ১৮৮ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে ধনাঞ্জয়া ও মেন্ডিসের সেঞ্চুরিতে শ্রীলংকার ইনিংস থামে ৪১৮ রানে। তাতে ৫১১ রানের লক্ষ্য পায় বাংলাদেশ।-খবর তোলপাড় ।

বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একদম হতশ্রী ব্যাটিং দেখায় বাংলাদেশ। দলের সঙ্গে কোনো রান যোগ হওয়ার আগেই ফেরেন মাহমুদুল হাসান জয়। বিশ্ব ফার্নান্দোর বলে এলবিডব্লিউ হন তিনি। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তও ৫ বলের বেশি টিকতে পারেননি। ৯ রানের মধ্যে ২ উইকেট হারানো বাংলাদেশ তৃতীয় উইকেট হারায় ৩৬ রানে। আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকা জাকির হাসানকে ফেরান লাহিরু কুমারা। দলের সঙ্গে আর ১ রান যোগ হতেই ফার্নান্দোর পরপর দুই বলে ফেরেন শাহাদাৎ হোসেন দীপু ও লিটন দাস। অদ্ভূতুরে সব শট খেলে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। শেষ পর্যন্ত মুমিনুল হকের সঙ্গে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন আগের ইনিংসে দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক তাইজুল ইসলাম।

এর আগে, দ্বিতীয় ইনিংসে ৫ উইকেটে ১১৯ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করে শ্রীলংকা। দিনের শুরুতে বাংলাদেশকে বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। খালেদ আহমেদের বলে বলে ফার্নান্ডো খোঁচা দিলে স্লিপে থাকা মেহেদী হাসান মিরাজ দারুণ এক ক্যাচ নেন। এরপরই শুরু হয় ধনাঞ্জয়া ও কামিন্দুর শাসন। প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও হতাশ করেন বাংলাদেশকে। সপ্তম উইকেট জুটিতে এই দুজন করেন ২৭৩ বলে ১৭৩ রান। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় ইনিংসেও সেঞ্চুরি তুলে নেন লংকান দলনেতা ধনাঞ্জয়া। প্রথম শ্রীলংকান অধিনায়ক হিসেবে টেস্টের দুই ইনিংসেই করেন সেঞ্চুরি। পরে সেঞ্চুরি আসে কামিন্দুর ব্যাটেও। যেটিকে তিনি নিয়ে যান দেড়শ রানের ওপরে। শেষ পর্যন্ত ১৬টি চার ও ৬ ছক্কায় ১৬৪ রান করে দশম ব্যাটার হিসেবে আউট হন তিনি।

এদিন দুর্দান্ত এক রেকর্ডও গড়েন ধনাঞ্জয়া-কামিন্দু। টেস্টে তৃতীয়বারের মতো একই দলের দুই ব্যাটার দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরির দেখা পেলেন। এর আগে, ১৯৭৪ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টের দুই ইনিংসেই সেঞ্চুরির দেখা পেয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ভাই ইয়ান চ্যাপেল ও গ্রেগ চ্যাপেল। এর পরে ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এই কীর্তি গড়েন পাকিস্তানের দুই ব্যাটার আজহার আলী ও মিসবাহ-উল হক।

মেহেদী হাসান মিরাজ ছাড়া বাংলাদেশের বোলিং লাইন আপের সবাই এদিন ছিলেন ব্যর্থ। আগের দিন ৩ উইকেট শিকার করে আশা জাগানো নাহিদ রান ওভারপ্রতি রান দিয়েছেন ছয়ের ওপরে। ২৯ ওভারে ৭৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন মিরাজ।


Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *