শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১০:০৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম
হাসিনার রাজনীতির কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দিল জাতিসংঘ হাসিনা চীনের তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেনি ভারতের আপত্তির কারণে জানিয়েছে আসাদুল হাবিব দুলু উলিপুরে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গ্রেপ্তার তিস্তা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে পাঁচ কৃষককে পেটানোর ঘটনায় বিজিবি-বিএসএফ’র পতাকা বৈঠকে বিজিবি’র কড়া প্রতিবাদ রাজারহাটে ভয়াভহ অগ্নিকান্ডে ৪বছরের শিশু সহ ৪লাখ টাকার মালামাল ভস্মিভূত ফুলবাড়ী সীমান্তে বাংলাদেশে ঢুকে পাঁচ কৃষককে মারধোর করল বিএসএফ মোদির সঙ্গে বৈঠক: বাংলাদেশের বিষয়ে যা বললেন ট্রাম্প আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে শবেবরাত পহেলা ফাল্গুন ভালোবাসার দিন

ঘূর্ণিঝড় রেমাল: বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ৪০ লাখ গ্রাহক

রিপোর্টারের নাম / ৯১ টাইম ভিউ
Update : সোমবার, ২৭ মে, ২০২৪

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রাথমিক ধাক্কায় দুইজনের মৃত্যুর খবর এসেছে; বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছেন দুর্গত জেলাগুলোর প্রায় ৪০ লাখ গ্রাহক। গাছ পড়ে, লাইন ছিঁড়ে অনেক এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক এলাকায় পূর্ব সতর্কতা হিসেবে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে সাত-আট ফুট বেশি উচ্চতার জোয়ারের চাপে সাতক্ষীরা, বরগুনাসহ কয়েক জেলায় বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। উপকূলীয় নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে প্লাবিত হয়েছে শত শত গ্রাম।-খবর তোলপাড় ।

বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (বিআরইবি) এক পরিচালক নাম প্রকাশ না শর্তে বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে দুর্ঘটনা এড়াতে ১৪টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ২৫ লাখ ৬৯ হাজার ৫০০ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলগুলোর বিদ্যুৎ কর্মীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় শেষ হওয়ার পরপরই যাতে দ্রুত বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা যায় সেই লক্ষ্যে প্রত্যেকটি সমিতির কর্মীরা প্রস্তুত রয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎহীন এলাকাগুলোর মধ্যে রয়েছে- পটুয়াখালী, বাগেরহাট, ভোলা, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা, ঝালকাঠি জেলা। পটুয়াখালীতে ছয় লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। বাগেরহাটে ৪ লাখ ৫০ হাজার ও ভোলা জেলায় ৪ লাখ ২৫ হাজার গ্রাহক এবং ৩ লাখ গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।

বাগেরহাট পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক সুশান্ত রায় বলেন, জেলায় ৪ লাখ ৮৫ হাজারের বেশি গ্রাহক রয়েছেন।

সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার জিয়াউর রহমান জানান, আমরা জুম মিটিং করে প্রতিটি অফিসে প্রস্তুতির নির্দেশ দিয়েছি। আমরা সাধারণত তিন ধরনের প্রস্তুতি নেই, ঝড় আসার আগে ও ঝড়ের সময় এবং ঝড় পরবর্তী সময়ে করণীয়। ঝড় আসার আগে আমরা মোবাইলে চার্জ দিয়ে রাখতে বলি সবাইকে, মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় মালামাল সংগ্রহ করে রাখা হয়, যারা স্ট্যান্ডবাই থাকবেন, তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।

এদিকে, ঝড়ের সময় যাতে কেউ বিদ্যুৎস্পৃষ্ট না হয়, সেজন্য মাইকিং করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি আমরা চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্যদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে রাখছি। যাতে করে তাদের এলাকায় বিদ্যুতের তারের ওপরে গাছ পড়লে, তাদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করা যায়।

দমকা ঝোড়ো হাওয়ায় পল্লী বিদ্যুতের মূল সঞ্চালন লাইনের বিভিন্ন স্থানে গাছপালা উপড়ে পড়ায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ঝড়ে বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়েছে। এতে কমবেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দুর্যোগ শেষ হলে লাইনে কাজ করে বিদ্যুৎসংযোগ পুনরায় চালু করা হবে। এদিকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। মোবাইল কোম্পানিগুলো বিকল্প উপায়ে নেটওয়ার্ক চালু রাখার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ঘূর্ণিঝড় রেমাল বা অন্য কোনো কারণে বিচ্ছিন্ন বৈদ্যুতিক লাইন যাতে কেউ স্পর্শ না করে সে ব্যাপারে সতর্ক থাকা এবং ছেঁড়া বৈদ্যুতিক তার দেখলে দ্রুত নিকটবর্তী বিদ্যুৎ অফিসে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷

এছাড়াও বিদ্যুৎ সংক্রান্ত যে কোনো প্রয়োজনে ১৬৯৯৯ নম্বরে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের সেন্ট্রাল কন্ট্রোলরুমের নম্বর ০১৭৯২-৬২৩৪৬৭, ০২-৮৯০০৫৭৫, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বরিশাল অঞ্চলের ০১৭১৩-৮৫০২১৮, খুলনা অঞ্চলের ০১৭১৩-৮৫০২১১, পটুয়াখালী অঞ্চলের ০১৭১৩-৮৫০২১৯-এ নম্বরগুলো সার্বক্ষণিক খোলা থাকবে। তাছাড়া পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড ও ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির প্রতিটি জেলায় কন্ট্রোলরুম খোলা হয়েছে।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের কারণে গভীর সমুদ্রে তেল খালাস কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে বলে বিপিসি সূত্রে জানা গেছে। নিরাপত্তার কারণে জ্বালানি তেলবাহী দুটি জাহাজকে গভীর সমুদ্রে পাঠানো হয়েছে। একই সঙ্গে অভ্যন্তরীণ নৌরুটে তেল পরিবহন বন্ধ থাকবে। তবে রেমালের কারণে এলএনজি সরবরাহে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানান পেট্রোবাংলার এক কর্মকর্তা।

এদিকে সোমবার (২৭) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়, রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সাথে দেশের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

অধিদপ্তরের বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরকে ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরগুলো ৯ নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে।

খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার জেলার নদী বন্দরগুলোকে ৪ নম্বর নৌ-মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হলো। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ী অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধ্বস হতে পারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!