গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতুর কার্পেটিংয়ে ফাটল, চলাচল ব্যাহত
সংবাদদাতা, গঙ্গাচড়া (রংপুর):
রংপুরে গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতুর কার্পেটিং ফেটে সৃষ্টি হয়েছে গর্তের। এতে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ছোট-বড় যানবাহন ও পথচারীরা। ঘটছে দুর্ঘটনাও। সংস্কার হওয়ার দুই মাসের মাথায় উঠে গেছে কার্পেটিং। এতে আতঙ্কে সেতু পারাপার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। তবে সেতুটির রক্ষণাবেক্ষণে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা এটিকে সরাসরি ফাটল না বলে হেয়ার লাইন ক্র্যাক বলেছেন।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রংপুর কার্যালয় সূত্র জানায়, প্রায় ১১ কিলোমিটার সড়কে কার্পেটিং ও সড়ক বর্ধিতকরণের কাজ শুরু হয় গত বছরের নভেম্বরে। প্রায় ২৮ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ শেষ হয় গত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে। কিন্তু সংস্কারের দুই মাসের মধ্যে সেতুর মধ্যে কার্পেটিং এ ফাটল দেখা দিয়েছে।
জানা গেছে, তিস্তা নদীর ওপর গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতুর উদ্বোধন হয়েছে ৬ বছর আগে। রংপুর অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ এই সড়ক রংপুর-বুড়িরহাট-গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতু-কাকিনা-তুষভান্ডার-হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম হয়ে বুড়িমারী স্থলবন্দরে গিয়ে শেষ হয়েছে। সড়কটি দিয়ে লালমনিরহাট থেকে রংপুর শহরে চিকিৎসাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনে আসা-যাওয়া করে ৩০ হাজারের বেশি মানুষ। এ ছাড়া প্রতিদিন ছোট-বড় মালবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যান চলাচল করে।
সরেজমিনে গতকাল শুক্রবার বিকেলে দেখা গেছে, গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতুর ওপর প্রায় ৭ ফিট কার্পেটিং ফেটে গর্ত হয়ে গেছে। কার্পেটিংয়ের সঙ্গে স্প্যানের ঢালাইয়ের কিছু অংশ উঠে গেছে। এতে ঘটছে দুর্ঘটনা।
এসময় লালমনিরহাটের কাকিনা থেকে সেতু এলাকায় ঘুরতে আসা মজমুল মিয়া (৩৫) জানান, কিছুক্ষণ আগে ওখানে পরপর দুটি দুর্ঘটনা ঘটল। একজন মোটরসাইকেল আরোহীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
রংপুর থেকে ঘুরতে আসা শাহাজান (৪০) বলেন, একটু আগে একটি অটো এখানে উল্টে যেতে বসেছিল। ফাটলের জায়গায় কোনো সতর্কতার চিহ্ন না থাকায় আমি একটা লাল কাপড় খুঁজে নিয়ে এসে গাছের ডাল ভেঙে স্থানটিতে পুঁতে দিলাম। জরুরি পদক্ষেপ না নিলে যেকোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এটি সংস্কার করা প্রয়োজন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে গঙ্গাচড়া উপজেলা প্রকৌশলী মজিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জেনেছি। শনিবার মিস্ত্রি কাজ করবেন।
প্রসঙ্গত, গঙ্গাচড়া শেখ হাসিনা সেতু তিস্তা নদীর উপর অবস্থিত একটি দ্বিতীয় তিস্তা সেতু। এটি মহিপুর সেতু নামেও পরিচিত। ২০১২ সালে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। । ১২৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৮৫০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ফুটপাতসহ ৯ দশমিক ৬ মিটার প্রস্থের সেতুতে রয়েছে ১৬টি পিলার, ১৭টি স্প্যান, ৮৫টি গার্ডার রয়েছে। ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই সেতুর উদ্বোধন করেন। যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়ন ও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারের জন্য লালমনিরহাটের পাটগ্রামে অবস্থিত বুড়িমারী স্থলবন্দরের সঙ্গে রংপুরসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার দূরত্ব কমিয়ে আনতে তিস্তা নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়।