রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১০:৪৯ পূর্বাহ্ন

রিক্সাচালক মোন্নাফ আলীকে বাঁচাতে দরকার ৭ লক্ষ টাকা

প্রকাশের সময়: বুধবার, ১২ নভেম্বর, ২০২৫

হুমায়ুন কবির সূর্য:

যে রিক্সা চালিয়ে পেট চালাতেন মোন্নাফ আলী, সংসারের হাল ধরেছিলেন; পরিবারকে বাঁচাতে অমানবিক পরিশ্রম করেছিলেন। সেই রিক্সাই তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়েছে। মরণব্যাধী হার্টের ব্যাধি তার জীবনকে তছনছ করে দিয়েছে। গত সাড়ে ৪ বছর ধরে ধুঁকে ধুঁকে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন তিনি। উন্নত চিকিৎসার জন্য শরীরের সঙ্গী রিক্সাটি বিক্রি করেও ভাগ্য ফেরাতে পারেন নি তিনি। ঢাকার চিকিৎসকরা জানিয়েছেন তার হার্টে একাধিক বøক ধরা পরেছে। ব্যয়বহুল চিকিৎসা প্রয়োজন। অর্থ না থাকায় হচ্ছে না অপারেশন, মিলছে না ঔষধ কেনার টাকাও। ফলে বিভিন্ন মানুষের হাতে পায়ে ধরেও চিকিৎসার ৭ লক্ষ টাকা যোগার করতে না পেরে হতাশ মোন্নাফ আলী চিকিৎসার জন্য দেশী বিদেশী সামর্থবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন।

কুড়িগ্রামের নাগেশ^রী উপজেলার ভিতরবন্দ ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের মৃত: বদিয়তজামানের ছেলে মোন্নাফ আলী। হত দরিদ্র পরিবারের সন্তান মোন্নাফ আলীকে সংসারের হাল ধরতে হয়েছে কিশোর বয়সে। সেই যে রিক্সার প্যাডেল ধরেছে, সেটি ঘুড়িয়েই গড়েছেন সংসার। জন্ম নিয়েছে দুই ছেলে ও এক মেয়ে। গত ২৩/২৪ বছর ধরে রিক্সা চালাতে গিয়ে কখন যে তার হার্ট দুর্বল হয়ে গেছে তা জানতে পারেনি সে। হঠাৎ করেই বুকে মোচড় দিয়ে ব্যাথা উঠলেও শুরুতে গুরুত্ব দেননি তিনি। বেশি ব্যাথা হলে রিক্সা থামিয়ে বুক চেপে বসে থাকতেন। এভাবেই গরীবের সংসারে মরণব্যাধী হার্টের রোগ তার সকল স্বপ্নকে চুর্ণ করে এখন সময় গুণছেন মৃত্যুর মুহুর্তগুলোকে। একমাত্র রিক্সাটি ৯ হাজার টাকায় বিক্রি করে ঢাকায় হার্ট ফাউন্ডেশনে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর বøক ধরা পরে। দ্রæত চিকিৎসার কথা বলা হলেও অর্থভাবে আটকে আছে মোন্নাফ আলীর চিকিৎসা। এলাকাবাসী চাঁদা তুলে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করলেও ৬/৭ লাখ টাকা সংগ্রহ করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য এলাকাবাসী দেশ-বিদেশে বসবাসরত বৃত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন।

মোন্নাফ আলীর স্ত্রী জানান, মানুষটা আর কর্ম করবের পায় না। সারাদিন শুতি বসি থাকে। কর্ম করবের না পারলে কি হয় সেটাতো বোঝেন। এখন হামার পেটোত খাবার দেওয়া খায়। তারও ঔষধ দরকার। বেটাটা কামাই করি দিলে খাই, না দিলে না খাই। তোমরাগুলো সহযোগিতা করলে যদি চিকিৎসা হয়।

অসুস্থ্য মোন্নাফ আলী জানান, কিছুদিন থাকি দেখি রিক্সা চালালেই প্যাট মোচড় দেয়। বুকে প্রচন্ড ব্যাথা হয়। সহ্য করবের না পায়া বুক চাপি ধরি দম নেই। পরে সবার সাথে কথা বলি চিকিৎসার জন্য প্রথম রংপুর যাই। সেখানকার ডাক্তার ঢাকায় যাবার পরামর্শ দেয়। টাকা না থাকায় ৯ হাজার টাকায় রিক্সা বিক্রি করি ঢাকায় হার্ট ফাউন্ডেশনে যাই। সেখানে হার্টে বøক ধরা পরে। ডাক্তাররা অপারেশনের কথা বলছে। গত সাড়ে ৪ বছর ধরি বিভিন্নজনের কাছে হাত-পা ধরিও কোন উপায় হয় নাই। এখন ট্যাবলেট কেনার টাকা, ভাত খাওয়ার টাকাও নাই। তোমরাগুলা সহযোগিতা করি যদি চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন তাহলে বাঁচতে পারবো। না হলে বিনা চিকিৎসায় মরতে হবে।

এ ব্যাপারে ভিতরবন্দ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম বাচ্চু জানান, রিক্সা চালাতে গিয়ে সে ঠিকমতো খাবার দাবার করেনি। এখন তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন হচ্ছে। তাদের বাড়িভিটা ছাড়া কিছু নেই। বড় ছেলে ঢাকায় দিনমজুরী করে। তারও অবস্থা ভালো নয়। ফলে পরিবারটি বর্তমানে ঘরের বাসনপত্র বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছে। হৃদয়বান ব্যাক্তিরা সহযোগিতার হাত বাড়ালে মোন্নাফ আলী বাঁচতে পারবে।
(বিকাশ নাম্বার: ০১৭৫২১৮৭৫৪৯ মোন্নাফ আলী)।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর