বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০১:২৪ অপরাহ্ন

নোটিশ:
দৈনিক তোলপাড় পত্রিকা থেকে আপনাকে স্বাগতম। তোলপাড় পত্রিকা আপনার আমার সবার। আপনার এলাকার উন্নয়নের ভূমিকা হিসেবে পত্রিকাটির মাধ্যমে আমরা দায়িত্ব নিয়েছি।  এ জন্য বাংলাদেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলা-বিভাগ-কলেজ ক্যাম্পাসসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় সাংবাদিক নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পত্রিকাটির পর্ষদ।  আগ্রহী হলে আপনিও এক কপি রঙিন ছবিসহ নিম্ন ঠিকানায় সিভি প্রেরণ করে নিয়োমিত সংবাদ পাঠাতে পারেন। সেই সাথে সারা বিশ্বে আপনার এলাকার প্রতিষ্ঠানের প্রচারেরর জন্য  ৫০% কমিশনে বিজ্ঞাপন দিতে পারেন।

বিদ্যানন্দের ‘মজিদ চাচা’ উপাখ্যান

‘পড়বো. খেলবো. শিখবো.’ নীতিবাক্য নিয়ে ২০১৩ সালে যাত্রা শুরু করে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সংগঠনটি পথশিশু, সুবিধা বঞ্চিত দরিদ্র ও অসচ্ছল শিশুদের মৌলিক শিক্ষা, আহার, চিকিৎসা এবং আইনি সেবা দিয়ে আসছে। এসব ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে মানুষের প্রশংসার পাশাপাশি ২০২৩ সালে প্রতিষ্ঠানটি বাংলাদেশ সরকারের কাছ থেকে একুশে পদক লাভ করে। কিন্তু সম্প্রতি জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রতিষ্ঠানটির ফেরিফাইড পেইজে অসংগতিপূর্ণ তথ্যের কারণে বিতর্কের মুখে পড়তে হয়েছে। –খবর তোলপাড় ।

অন্তত ১০টি পোস্টে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন ‘মজিদ চাচা’ নামের একটি কাল্পনিক চরিত্রকে দাঁড় করিয়ে ভুয়া গল্প পরিবেশন করেছে। প্রতিষ্ঠানটির অন্য একটি শাখা ‘এক টাকায় আহার’র পেইজে একই শিশুর ছবি একাধিক জায়গায় ব্যবহার করে দু’রকম প্রচারণা করেছে। একবার বলেছে এতিমখানায় আহার, আরেকবার শহরের বাইরে বস্তিতে আহার করানোর কথা বলা হয়েছে। ‘এক টাকায় আহার’র পেইজে ২০১৯ সালের ১৩ এপ্রিলে করা পোস্টে দেখা যায়, কথিত সেই মজিদ চাচা রাজশাহী স্টেশনে ভিক্ষা করছে। সেখানে বলা হয়, “স্ত্রী মারা যাওয়ার পর বড় আশা করে ছেলে জন্য ঘরে বউ আনেন। হয়তো একটু সেবাযত্ন আশা করেছিলেন। দিন শেষে সেই বউ তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ালো।”

অন্যদিকে ২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বরে বিদ্যানন্দ একটি জরাজীর্ণ ঘরের ছবি দিয়ে পোস্ট করেছে। তার ক্যাপশনে বলা হয়, কথিত মজিদ চাচার বাড়ি চাঁদপুরের হাইমচর উপজেলায়। তার কাছে সাহায্য পৌঁছাতে বিদ্যানন্দের স্বেচ্ছাসেবীরা গেলে তিনি প্রশ্ন করেন, “বাবা, গরু ছাগলের গোয়ালঘরও এরচেয়ে ভালো আর আমার কেন ঘুমানোর জন্য একখান শুকনা বিছানা জুটে না?” আরেকটি পোস্টে কথিত মজিদ চাচাকে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলে উল্লেখ করে বিদ্যানন্দ।

একই বছরের ২১ জুলাই করা পোস্টে সেই ‘মজিদ চাচা’কে ফুটপাতে বই বিক্রেতা বলে পরিচয় করিয়ে সেই প্রতিষ্ঠানটি। এতে বলা হয়, “ফুটপাতে বই বিক্রি করে সংসার চালান বৃদ্ধ মজিদ চাচা। করোনা দুর্যোগ তার জীবনে অন্ধকার নামিয়ে এনেছে। বিক্রি না থাকায় ঘরে বাজার হয় না, লজ্জায় হাত পাততে পারেন না।”

এছাড়াও বিদ্যানন্দের পেজে ‘পোড়া কাপড়ের তৈরি অলংকার’ ক্যাপশনে প্রকাশিত ছয়টি ছবির মধ্যে চারটি ছবিই গত ৯ মার্চ Women and e-Commerce Trust (WE) নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করা হয়েছিল। বিদ্যানন্দ মূলত পুরোনো ছবিগুলোই ‘কয়েক ঘণ্টা আগে পুড়ে যাওয়া কাপড় থেকে তৈরি অলংকার’ দাবিতে প্রচার করেছে। এর পরেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় তুমুল সমালোচনা। যদিও তোপের মুখে পড়ে সেই পোস্ট সরিয়ে নিতে বাধ্য হয় তারা। নিজেদের ভুল স্বীকার করে সংশোধিত পোস্ট দিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে।

প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন নেটিজেনরা। তাদের একজন তানজিরুল ইসলাম; তিনি বলেন, ছবিগুলো ৯ মার্চ Women and e-Commerce Trust (WE) গ্রুপে পোষ্ট করা, আর বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন সেটা প্রকাশ করেছেন ১৫ এপ্রিল তাদের অফিশিয়াল ভেরিফাইড পেজে। পারভীন সিরিন তার পোস্টে যা বলেছেন, তা প্রমানসহ। ব্যাপারটা তুচ্ছ করে দেখার অবকাশ নেই, গ্রুপ পেজের ছবি নিয়ে ব্যবসা করা ফাউন্ডেশন আরও কত কি করেছে তা দেখা দরকার। ঐ এক টাকার আহারের ছবিগুলো সত্যি? ১০ হাজার প্যাকেট খাবারের ব্যাপারটা?

মোহাম্মাদ জুয়েল রানা তার ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বিদ্যানন্দ প্রথমে শুরু করেছিলেন পড়াশোনার কথা বলে পরে খাদ্যে শিফট করেন কারণ খাদ্য এবং ক্ষুধা এগুলো ইমোশনাল টপিক। সেই ইমোশনের আড়ালে আজ আপনাদের ১৩০+ বিঘার সম্পত্তি! শেষমেশ ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সৃজনশীলতাকে নিজের বলে চালিয়ে দিতেও আত্মসম্মানবোধে লাগেনি? আপনারা তো মানুষের টাকায় জমি কিনেন আর এখন সামান্য উদ্যোক্তাদের কাজ নিয়েও মানুষকে সিমপ্যাথি দেখানো শুরু করলেন? আপনাদের সিমপ্যাথি পাওয়ার এতটাই অভাব!’

সামিউন খালিদ নামের একজন বলেন, “একজনের লেখার সূত্র ধরে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এক টাকায় আহার প্রজেক্টের পেইজ স্ক্রল করে ২০২১ সালের পোস্ট পর্যন্ত গেলাম। আর অবাক বিস্ময়ে লক্ষ্য করলাম, যে গরু তারা ২৪ নভেম্বর ২০২১ এ কুরবানী দিয়েছে, সেই একই গরু ২০ মার্চ ২০২২ এও কুরবানী দিয়েছে। ব্যারিস্টার সুমনের ভাষায় বলতে হয়, ‘পাবলিকে কিতার মধ্যে টাকা ঢালতিছে’।”

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিসেবে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনকে ক্রীড়া, বিনোদনসহ বিভিন্ন অঙ্গনের তারকারা সহযোগিতা করেছেন এবং প্রতিষ্ঠানটির প্রমোশনে স্ব স্ব স্থান থেকে প্রচারণাও করেছেন। সম্প্রতি রাজধানীর বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ব্যবসায়ীদের পুড়ে যাওয়া কাপড় নিজেদের সংগ্রহে নিয়ে রিসাইকেল করে ব্যবহারের কথা জানায় বিদ্যানন্দ। সেখান থেকে লাখ টাকায় লুঙ্গি, জিন্স প্যান্ট, শাড়িসহ বিভিন্ন পোড়া কাপড় কিনেন তারকারা। সেই টাকা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের সাহায্যে ব্যয় করা হবে বলেও প্রতিষ্ঠানটি জানায়। কিন্তু এই অর্থে কতটুকু অংশ ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা পাবেন তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।

সংশয়ের কারণ জানিয়ে মিসবাহ উদ্দীন মারুফ নামের এক ব্যক্তি জানান, বিদ্যানন্দ আর এক টাকায় আহার যে ভাওতাবাজি শুরু করেছে তাতে এই মুখোশধারী সংগঠনের ওপর থেকে সাধারণ মানুষের বিশ্বাস উঠে গেছে। কারণ ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর একটা কালো ষাড়ের ছবি দিয়ে ‘এক টাকায় আহার’ ছিন্নমূল মানুষদের খাওয়ার কথা পোস্ট করেছিল। এর পরের বছর ২০ মার্চ একই ষাড় গরুর ছবি দিয়ে পোস্ট করে তারা। এখন আর মানুষ বোকা নেই। তাদের এই যে সুক্ষ্ম প্রতারণা, মানুষ তা বুঝে গেছে।

সচেতন সমাজের প্রতিনিধিত্বকারী রায়না রহমান রিকি বলেন, নিঃসন্দেহে বিদ্যানন্দ ভালো কাজ করছে। কিন্তু বর্তমানে তাদের বিরুদ্ধে যেসকল অভিযোগ উঠতেছে সেগুলো খতিয়ে দেখা দরকার। তাদের ফান্ডিং কোথা থেকে এবং কীভাবে হয়, কত ব্যয় হয় ইত্যাদি বিষয়গুলোতে স্বচ্ছ হওয়া দরকার। এজন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জবাবদিহি করতে হবে। ইদানীং অনেক তারকাকেও তাদের সাথে যুক্ত হতে দেখা গেছে। তার কী আদতে বিদ্যানন্দ সম্পর্কে যাচাই-বাছাই করে যুক্ত হয়েছে নাকি নিজেদের সুবিধা নিতে যুক্ত হয়েছে বিষয়টা ধোঁয়াসার মধ্যেই থেকে যায়। তবে কথা হচ্ছে, যদি বিদ্যানন্দ প্রতারণার আশ্রয় নেয় তাহলে দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি। পরে ইমেজ অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিভাগের দায়িত্বরত কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। ওই বিভাগের ম্যানেজার সালমান খান ইয়াসিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।-সূত্র ব্রেকিং নিউজ বিএন বিডি২৪ কম ডট।

আপনার সামাজিক মিডিয়া এই পোস্ট শেয়ার করুন

দৈনিক তোলপাড় এর পক্ষ থেকে সকল পাঠক লেখক সাংবাদিক ও শুভানুধায়ীকে প্রাণঢালা অভিনন্দন। আনন্দের সাথে জানাচ্ছি যে, পত্রিকাটি বাংলাদেশের প্রতিটি বিভাগ জেলা উপজেলা থানা কলেজ ক্যাম্পাস-এ এক ঝাঁক তরুন-তরুনী সাংবাদিক নিয়োগ করতে যাচ্ছে ।

আগ্রহীরা দ্রুত এক কপি ছবিসহ প্রধান সম্পাদক বরাবর আবেদন করুন.. আবেদন পাঠানোর ঠিকানা-dailytolpercv@gmail.com

এছাড়া বিশেষ ৫০% ছাড়ে সারাবিশ্বে প্রচারের জন্য আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে পারেন। বিজ্ঞাপন পাঠানোর ঠিকানা-dailytolpernews@gmail.com যোগাযোগ করুন-+88 01915394614, +8801719026700


© All rights reserved © 2017 তোলপাড়