মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:০৩ অপরাহ্ন

বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শিক্ষার্থী-জনতার ঢল

রিপোর্টারের নাম / ৩৯ টাইম ভিউ
Update : শনিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৪

ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার এলাকায় জড়ো হয়েছেন শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ।

সংঘাতে হত্যার বিচার ও গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচি চলছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের। তাদের কর্মসূচিতে সরকার পতনের শ্লোগানও দেয়া হচ্ছে।-খবর তোলপাড়।

এই কর্মসূচি ঘিরে শনিবার বেলা ৩টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জড়ো হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন আন্দোলনের সমন্বয়করা।

সকালে ঢাকার বিভিন্ন সড়ক ও মোড়ে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করে দুপুরের পর শহীদ মিনারমুখি যাত্রা শুরু হয়। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি সেখানে উপস্থিত হন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। এক পর্যায়ে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ। বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকেও বিভিন্ন এলাকা থেকে মিছিল নিয়ে আন্দোলনকারীরা আসছিলেন।

শহীদ মিনারের চতুর্দিকে লোকে ভরে যায়। তিল ধারণের ঠাঁই নেই। ছাত্রদের সঙ্গে চলে এসেছেন তাদের অভিভাবক, বন্ধু, স্বজন ও পরিবারের সদস্যরাও।

একদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ছাড়িয়ে পুরাণ ঢাকার চানখারপুল পর্যন্ত যায়। পূর্বদিকে দোয়েল চত্বর ছাড়িয়ে ও উত্তরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল টাওয়ার পার করেছে জমায়েত।

শহীদ মিনার এলাকায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাইরে,’ ‘জাস্টিস জাস্টিস, উই ওয়ান্ট জাস্টিস,’ ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত,’ ‘স্বৈরাচারের গদিতে আগুন জ্বালো একসাথে,’ ‘জ্বালো রে জ্বালো, আগুন জ্বালো,’ ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’, ‘ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান, অভ্যুত্থান’, ‘পদত্যাগ পদত্যাগ, শেখ হাসিনার পদত্যাগ’ এমন নানা শ্লোগান দিচ্ছেন।

‘সারা দেশে ছাত্র-নাগরিকের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে খুনের প্রতিবাদ ও ৯ দফা’ দাবিতে গতকাল নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। তারা আজ সারা দেশে বিক্ষোভ মিছিল ও কাল রোববার থেকে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেয়।

আজকের কর্মসূচির অংশ হিসেবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড়ে দুপুর ১২টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করেন আন্দোলনকারীরা। বেলা আড়াইটার দিকে রাজধানীর সায়েন্স ল্যাব মোড় থেকে আন্দোলনকারীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের দিকে রওনা হন। বেলা তিনটার দিকে সায়েন্স ল্যাব থেকে কয়েক হাজার মানুষ মিছিল নিয়ে শহীদ মিনার এলাকায় উপস্থিত হন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় নিহত, গণগ্রেপ্তার ও হয়রানির প্রতিবাদে ব্যান্ড সংগীতশিল্পীরা আজ বেলা তিনটায় ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবরে জড়ো হন। সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের প্রতি সংহতি জানাতে সংগীতশিল্পীরা শহীদ মিনারে রওনা দেন। মিছিল নিয়ে বিকেল পৌনে চারটার দিকে তাঁরা শহীদ মিনার এলাকায় পৌঁছান।

শুক্রবার সারাদেশে ‘গণপদযাত্রা’ থেকে শনিবার বিক্ষোভ ও রোববার থেকে অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে কোটা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যমূলক ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে।

শুক্রবার উত্তরা এলাকায় জমায়েতে সংঘর্ষ হলেও এদিন পরিস্থিতি সকাল থেকে শান্ত। তবে বিক্ষোভের প্রায় সব পয়েন্টে পুলিশকে সতর্ক অবস্থান দেখা গেছে।

গত ১৮ থেকে ২১ জুলাই সংঘর্ষে যে-সব হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেগুলোর বিচারের দাবি আছে শিক্ষার্থীদের। সংঘাতের পর শিক্ষার্থীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ জানিয়ে তারা মামলা প্রত্যাহারের দাবি তুলেছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রতিটি মৃত্যুর তদন্তের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি তদন্তে জাতিসংঘের সহযোগিতা নেয়ার কথাও বলেছেন একাধিক বক্তব্যে।

শিক্ষার্থীদেরকে আলোচনার জন্য আমন্ত্রণও জানিয়েছেন সরকারপ্রধান। বলেছেন, “গণভবনের দরজা খোলা। কোটা আন্দোলনকারীদের সাথে আমি বসতে চাই, তাদের কথা শুনতে চাই। আমি সংঘাত চাই না।”

আন্দোলনের মধ্যে যেসব ছাত্র গ্রেপ্তার হয়েছে, তাদেরকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান সরকার প্রধান।

তবে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীরা। শনিবার দুপুর সোয়া দুইটার দিকে নাহিদ ইসলাম তার ফেইসবুক আইডিতে দেয়া এক পোস্টে বলেন, “খুনি সরকারের কাছে বিচার চাওয়া বা সংলাপে বসারও সুযোগ আর নেই। ক্ষমা চাওয়ার সময়ও পার হয়ে গেছে। যখন সময় ছিল তখন সরকার ব্লক রেইড দিয়ে শিক্ষার্থীদের গ্রেফতার করেছে, নির্যাতন করেছে। আখতার হোসেন, আরিফ সোহেলসহ রাজবন্দিদের কারাগারে রেখে আমরা কোনো ধরনের সমঝোতায় যাব না।”


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর

এক ক্লিকে বিভাগের খবর