ছাত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগে শিক্ষক আটক
সংবাদদাতা, দিনাজপুর:
দিনাজপুর ক্রিসেন্ট কিন্ডারগার্টেন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক সেলিম হোসেনকে ছাত্রীর সাথে অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার অভিযোগে পিটিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে বের করে থানায় সোপর্দ করেছে ছাত্রীরা।
বৃহস্পতিবার ২৯আগষ্ট সকাল সাড়ে ১১টার দিকে বিদ্যালয়ের ক্লাস রুম থেকে টেনে হেঁচড়ে লাঞ্ছিত করে কোতোয়ালি থানায় সোপর্দ করে বিক্ষুব্ধ ছাত্রীরা।
অভিযুক্ত শিক্ষক সেলিম হোসেন দিনাজপুর সদরের কণাই গ্রামের বাসিন্দা ও ২০১৬ সালে এনটিসিআর এর মাধ্যমে ইংরেজি শিক্ষক হিসেবে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন।
বিদ্যালয়ের আন্দোলনরত ছাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০২০/২১ অর্থবছরে ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইংরেজি কোচিং করানোর কথা বলে তৎকালীন অষ্টম শ্রেণির একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ঘটনাটি জানাজানি হলে ম্যানেজিং কমিটিসহ অন্যান্য শিক্ষকরা ইংরেজি শিক্ষক সেলিম হোসেনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেন। বরখাস্ত হওয়ার পর শিক্ষক সেলিম হোসেন আদালতের শরণাপন্ন হন। চলতি বছরের প্রথম দিকে উক্ত শিক্ষককে যোগদান করানোর জন্য আদালত নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের আদেশ পাওয়ার পর প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ অভিযুক্ত শিক্ষক সেলিম হোসেনকে বিদ্যালয়ে যোগদান করতে দেয়।
পুড়িয়ে দেয়া মোটরসাইকেল
শিক্ষক সেলিম যোগদান করলেও বিদ্যালয়ের কোন ক্লাস তাকে দেয়া হয় নাই। তবে বিদ্যালয়ে তখন থেকেই তিনি হাজিরা বহিতে স্বাক্ষর করে চলে যেতেন। গত ৬ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের পর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকদেরকে জিম্মি করে তাকে ক্লাস দিতে বাধ্য করেন। তখন থেকে নিয়মিত ক্লাস করেন। এই ঘটনার পর থেকেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ধারণ করে। বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের ছাত্রী এবং অভিভাবকরা একত্রিত হয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক সেলিম হোসেনকে ক্লাসরুম থেকে বের করে লাঞ্ছিত করে পার্শ্ববর্তী কোতোয়ালি থানায় সোপর্দ করে।
প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, ২০২০/২১ অর্থবছরে অভিযুক্ত শিক্ষক সেলিম হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। তাকে সেই সময় থেকে সাময়িক দরখাস্ত করা হয়েছিল। তারপর সে আদালতের আদেশ নিয়ে বিদ্যালয়ে যোগদান করলেও তাকে ক্লাস দেয়া হয় নাই। সে জোর করে ক্লাস নিত, তাকে আজকে ছাত্রীরা ক্ষিপ্ত হয়ে বিদ্যালয়ে স্লোগান দিয়ে তাকে ক্লাস থেকে বের করে দিয়েছে। তার ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল শিক্ষার্থীরা জ্বালিয়ে দেয়।
কোতোয়ালী থানার অফিসার ইনচার্জ ফরিদ হোসেন বলেন, বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সেলিম হোসেন নামক একজন শিক্ষককে থানায় সোপর্দ করে গিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি, শিক্ষার্থীরা মামলা দিলে অবশ্যই মামলা নেয়া হবে।