সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০৯ অপরাহ্ন

চলতি মাসেই আদানির বকেয়া ১৭ কোটি ডলার পরিশোধ করবে বাংলাদেশ সরকার

রিপোর্টারের নাম / ৪৩ টাইম ভিউ
Update : মঙ্গলবার, ৫ নভেম্বর, ২০২৪

আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া বিল পরিশোধ করতে বলেছে ভারতের আদানি পাওয়ার। আর পরিশোধের ব্যবস্থা না না নিলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দিবে বলেও আল্টিমেটাম দিয়েছে। এরপরই বাংলাদেশ সরকার ৮০ কোটি ডলারের বেশি বকেয়া পরিশোধে দ্রুত পদক্ষেপ নিচ্ছে। চলতি নভেম্বর মাসেই আদানির বকেয়া ১৭ কোটি ডলার পরিশোধ করবে সরকার। গত মাসে ৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার পরিশোধ করা হয়েছে।

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দুজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।-খবর তোলপাড়।

ভারতীয় আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি কোম্পানি আদানি পাওয়ার পূর্ব ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গড্ডা প্ল্যান্ট থেকে বাংলাদেশকে ১ হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করার জন্য চুক্তিবদ্ধ। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণই করা হয়েছে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ রপ্তানির জন্য। কয়লা আমদানি নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে থাকার অজুহাতে কোম্পানিটি বকেয়া পাওয়ার জন্য ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করে দিয়েছে। যেখানে এরই মধ্যে তারা বিদ্যুৎ রপ্তানি ৫০ শতাংশের বেশি কমিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের মোট বিদ্যুতের ১০ শতাংশ সরবরাহ করে আদানি।

বিলিয়নিয়ার গৌতম আদানির মালিকানাধীন এই কোম্পানিটি চলতি মাসে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে প্রায় ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট থেকে ৭০০–৮০০ মেগাওয়াটে নামিয়ে এনেছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।

বাংলাদেশের কর্মকর্তারা নাম প্রকাশে রাজি হননি। অপর দিকে এ বিষয়ে আদানি পাওয়ারের সাথে যোগাযোগ করা হলেও তারা রয়টার্সের প্রশ্নের কোনো জবাব দেননি।

নাজুক অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে প্রায় শুরু থেকেই বাংলাদেশ বিল পরিশোধে সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে। চলতি বছর আগস্টে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতির ফলে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেশের অর্থনৈতিক সমস্যাকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

অন্তর্বর্তী সরকারের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান রয়টার্সকে বলেছেন, ‘গত মাসে আমরা ৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার পরিশোধ করেছি। গত জুলাই মাসে ৩৫ মিলিয়ন ডলার, সেপ্টেম্বরে ৬৮ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছি। এ মাসে আরও ১৭ কোটি ডলার পরিশোধের জন্য একটি ঋণপত্র (এলসি) খোলা হয়েছে।’

গত মাসে বিষয়টির সঙ্গে সম্পর্কিত সূত্রগুলো জানায়, বাংলাদেশ আদানি পাওয়ারের সাথে চুক্তি আবার খতিয়ে দেখছে। কারণ এটি ভারতের অন্যান্য বেসরকারি উৎপাদকদের তুলনায় প্রায় ২৭ শতাংশ বেশি চার্জ করছে।

আদানি পাওয়ারের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা দিলিপ কুমার ঝা গত সপ্তাহে এক ত্রৈমাসিক রাজস্ব সম্মেলনে বলেছিলেন, বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহে কোনো সমস্যা নেই। তিনি বলেন, ‘আমরা আশা করি, বকেয়া বিষয়ে আর অবস্থার কোনো অবনতি হবে না।’

বিদ্যুতের সরবরাহ সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশ কয়েকটি গ্যাস ও তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ফের চালু করছে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এতে বিদ্যুতের খরচ আরও বাড়বে। শীতের মৌসুমে বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। এদিকে ডিসেম্বরে বাংলাদেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। রাশিয়ার সহায়তায় নির্মিত এই প্রকল্পে খরচ হয়েছে ১২.৬৫ বিলিয়ন ডলার। দীর্ঘমেয়াদি রুশ ঋণে বাস্তবায়ন করা হচ্ছে প্রকল্পটি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর