‘আইসিসি আর আইসিসি নেই, এখন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড’

এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক দেশ পাকিস্তানে সফর না করার কথা আইসিসিকে জানিয়ে দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট সংস্থা বিসিসিআই। এই কারণে এমন ধারণাও করা হচ্ছে, পুরো টুর্নামেন্টটি পাকিস্তানের বাইরে আয়োজিত হতে পারে। ভারত দলের পাকিস্তান সফরে না যাওয়ার বিষয়টির লিখিত আইসিসির কাছে চেয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। আইসিসি দীর্ঘ প্রায় ছয় বছরেরও বেশি সময় পর চ্যাম্পিয়নস ট্রফি আয়োজন করছে। -খবর তোলপাড়।
কিন্তু আগামী ফেব্রুয়ারির সে টুর্নামেন্ট হবে কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ জাগছে। এমন ঝামেলাপূর্ণ পরিস্থিতির জন্য আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থাকে (আইসিসি) ধুইয়ে দিলেন নাজাম শেঠি। স্থানীয় এক সংবাদ মাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আইসিসির ওপর ক্ষোপ প্রকাশ করে পিসিবির সাবেক সভাপতি বলেন, ‘আইসিসি আর আইসিসি নেই। আইসিসি এখন বিসিসিআই হয়ে গেছে। কারণ জয় শাহ আইসিসির চেয়ারম্যান হচ্ছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘আইসিসি খুবই দুর্বল। তারা কখনো বিসিসিআইয়ের বিরুদ্ধে যাবে না। কারণ বিসিসিআইয়ের রাজস্বের ওপর আইসিসি নির্ভর করে।’
ভারতের ওপর তোপ প্রকাশ করে নাজাম শেঠি বলেন, ‘আমি আপনাকে একটি কথা বলতে চাই যে আইসিসি সর্বদা ভারতের পক্ষ নেবে, আপনি এটি মনে রাখবেন। এখন, যদি তারা টুর্নামেন্টটি শ্রীলঙ্কা বা দুবাইতে স্থানান্তরিত করে এবং পাকিস্তান অংশগ্রহণ না করে, তাহলে এর দায়ভার আইসিসির পাশাপাশি ভারত ও পাকিস্তানকে বহন করতে হবে, কারণ আইসিসির রাজস্ব যে ভাবে ভাগ করা হয়। তার একটি বড় অংশ যায় ভারতের কাছে এবং চতুর্থ অংশ যায় পাকিস্তানে। এতে ভারতের খুব একটা সমস্যা হবে না। বিসিসিআই অনেক ধনী। কিন্তু এটা পাকিস্তানের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ, যদি পাকিস্তানের রাজস্ব কমে যায়, তাহলে সেটা পাকিস্তানের জন্য আরেকটি বড় সমস্যা হতে পারে।’
ভারত কেন আসবে না, সেটা জানতে চেয়ে পিসিবিও চিঠি দিয়েছে আইসিসিকে। এমনকি পাকিস্তান টুর্নামেন্ট বর্জনেরও হুমকি দিয়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। এই ধরনের ঝামেলা মোটেও পছন্দ নয় শেঠির,‘আইসিসি, পিসিবি ও বিসিসিআইয়ের মধ্যে বিতর্ক ভিত্তিহীন। আলাপ-আলোচনা হওয়া উচিত ভারত-পাকিস্তানের সরকারের মধ্যে।’
এরপরে নাজাম শেঠি বর্তমান পিসিবি প্রধানকে বড় পরামর্শ দিয়েছেন। কীভাবে তিনি এশিয়া কাপ সময়ে একই সমস্যা সমাধান করেছিলেন তাঁর ব্যাখ্যা করেছেন নাজাম শেঠি। তিনি বলেন, ‘আমিও একই সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম। সেই সময়ে আমি পাকিস্তান মিডিয়ার পরিবর্তে ভারতীয় মিডিয়ার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি করি। আমি তাদেরকে সাক্ষাৎকার দিতে শুরু করি। আমি হাইব্রিড মডেলের কথা তাদেরকে বলি। তারা আমার কথা বিসিসিআই-এর কাছে পৌঁছে দেয়। এর ফলে আমি হাইব্রিড মডেলে টুর্নামেন্ট করতে সফল হই। আমি চাইব বর্তমান কর্তাও যেন ঠান্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নেন।’
এদিকে পাকিস্তানে না হলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠিত হতে পারে এমন গুঞ্জণ গত কয়েকদিন সংবাদমাধ্যমে ভাসলেও স্পোর্টসতাক জানিয়েছে, এ টুর্নামেন্ট শুরুর কয়েকদিন আগেই শেষ হবে দক্ষিণ আফ্রিকার ঘরোয়া টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট এসএ টি-টোয়েন্টি লিগ। এ কারণে দেশটিতে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি নাও হতে পারে।
এমন অবস্থায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আয়োজক হিসেবে ভারতের নাম আসছে। স্পোর্টসতাক জানিয়েছে, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজনের সম্ভাব্যতা নিয়ে কাজ করছে বিসিসিআই। শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ভাগ্যে কি ঘটতে চলেছে তা হয়তো জানা যাবে আরও কিছুদিন পরই। ফেব্রুয়ারি-মার্চে পাকিস্তানে হওয়ার কথা রয়েছে আইসিসির এই ইভেন্টটি।