সুন্দরবন-বেনাপোল পুনর্বহাল ও চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন রুট বদলের প্রতিবাদে মানববন্ধন
জাহাঙ্গীর হোসেন জুয়েল ,কুষ্টিয়া:
সুন্দরবন-বেনাপোল পুনর্বহাল ও চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন রুট বদলের প্রতিবাদে শনিবার বেলা ১০ টা থেকে বেলা ১১টা ৩০ মিনিট পর্ষন্ত কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা রেলষ্টেশনে বিশাল মানববন্ধনের আয়োজন করে নাগরিক কমিটি। বিশাল মানববন্ধনে ভেড়ামারা,মিরপুর ও দৌলতপুর উপজেলার হাজার-হাজার সর্বস্তরের জনসাধারন অংশগ্রহন করেন। এই বিশাল মানববন্ধনে বিদেশীরাও অংশগ্রহন করেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, কুষ্টিয়া জেলা নাগরিক কমিটি;ও সভাপতি ডাঃ এস এম মোস্তানজিদ লোটাস, ভেড়ামারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজী আক্তারুজ্জামান মিঠু, বর্তমান চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল মুকুল, জাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল আলীম স্বপন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ ভেড়ামারা উপজেলা শাখার সাধারন সম্পাদক শামিমুল ইসলাম ছানা, ভেড়ামারা সরকারি কলেজের ক্রীড়া বিভাগের প্রধান জাহাঙ্গীর হোসেন জুয়েল, অসিত সিংহ রায়, নজরুল ইসলাম নজু, আবু দাউদ, তানজিন হাসান মিথুন, আলহাজ্ব মাহাবুল আলম বিশ্বাস, আব্দুর রাজ্জাক রাজা, আরিফুজ্জামান লিপটন, প্রদীপ সরকার, আসলাম উদ্দীনসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। দৌলতপুর উপজেলা বাসী, মিরপুর উপজেলা বাসী, ভেড়ামারা উপজেলা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক হিতৈষী সংঘ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, ভেড়ামারা উপজেলা শাখা, ভেড়ামারা এসএসসি ব্যাচ’ ৮৮, এসএসসি ব্যাচ, ৮৫, আমরা ৮৬ব্যাচ, বিজেএম ডিগ্রী কলেজ, ভেড়ামারা কলেজ শিল্প ও বণিক সমিতি, মারকাযুল উলুম ছকিনা ইসলামিয়া মাদ্রাসা, কুষ্টিয়া জেলা নাগরিক কমিটিসহ অর্ধ শতাধিক সংগঠন মানববন্ধনে অংশ গ্রহন করেন।
বক্তারা বলেন, সম্প্রতি সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি তুলে নিয়ে রুট পরিবর্তন করায় এ অঞ্চলের যাত্রীরা যাতায়াতে চরম বিড়ম্বনায় পড়েছেন। এছাড়া ট্রেন দুটি তুলে নেওয়ায় ভেড়ামারা রেলষ্টেশন সংলগ্ন ভেড়ামারার বড় বাজারটি অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। তাছাড়া জুন মাসে চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন তুলে নেওয়া হবে বলে শোনা যাচ্ছে। এতে ভেড়ামারার গুরুত্ব দিন দিন কমে যাচ্ছে। ভেড়ামারা একের পর এক ট্রেন রুট পরিবর্তন হচ্ছে। এর কারনগুলো চিহ্নিত করে ভেড়ামারা নাগরিক কমিটি তুলে নেওয়া খুলনা থেকে ভেড়ামারা হয়ে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি পুর্নবহাল ও চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বন্ধ না করা হলে পরবর্তীতে আরও কঠিন কর্মসূচী দেওয়া হবে বলে জানান।
ভেড়ামারা সরকারি কলেজের ক্রীড়া বিভাগের প্রধান জাহাঙ্গীর হোসেন জুয়েল বলেন, অবিভক্ত বাংলায় বিশেষ করে পূর্ব বাংলা অংশে কলকাতা টু জগতি প্রথম রেলওয়ে সার্ভিস চালু হয়। এরপর কলকাতা টু ভেড়ামারার দামুকদিয়া ঘাট। তারপর রায়টা পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়। দামুকদিয়া থেকে রেল ফেরিতে সাঁড়াঘাট হয়ে উত্তরাঞ্চল, এভাবে রেল সম্প্রসারিত হয়। একসময় ভেড়ামারা রেলওয়ে জংশন ছিল। কালের আবর্তে তা হারিয়ে গেছে। দক্ষিণাঞ্চল থেকে ঢাকামুখী সুন্দরবন এক্সপ্রেস, বেনাপোল এক্সপ্রেস ও চিত্রা এক্সপ্রেস ট্টেন ভেড়ামারা হয়ে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে ঢাকা যাতায়াত শুরু করে। ফলে কুষ্টিয়ার মিরপুর, দৌলতপুর, ভেড়ামারা, মেহেরপুরের গাংনি, মেহেরপুর অঞ্চলের যাত্রীগণ ভেড়ামারা রেলস্টেশন ব্যবহার করে সিরাজগঞ্জ, ক্যাপ্টেন মনসুর, যমুনা পুর্ব ও পশ্চিম, টাঙ্গাইল, জয়দেবপুর, ঢাকা বিমানবন্দর, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, কমলাপুর যাতায়াত করতো। সদ্য সুন্দরবন ও বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি তুলে নিয়ে ট্রেনের রুট পরিবর্তন করায় এ অঞ্চলের যাত্রীগণ উল্লেখিত স্থান গুলোতে যাতায়াতের জন্য বিড়ম্বনায় পড়েছে। এছাড়া ট্রেন দু’টো তুলে নেওয়ায় ভেড়ামারা রেল স্টেশন সংলগ্ন ভেড়ামারার বৃহৎ বাজারটি অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতি গ্রস্থ হচ্ছে। রেল স্টেশন কেন্দ্রীক মানুষের বাজার ব্যবস্থাপনায় স্থবিরতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বাড়তি লোকের আনাগোনা কমে গেছে। তাছাড়া আগামী মাসে চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি তুলে নেয়া হবে বলে জানা গেছে। এ কারণে ভেড়ামারার গুরুত্ব দিন দিন কমে যাচ্ছে। শহরের ব্যস্ততা লোপ পাচ্ছে।
ভেড়ামারা নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আসাদুজ্জামান আসলাম বলেন, একটা এলাকা কতটুকু উন্নত তা নির্ভর করে সেই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। কিন্তু ভেড়ামারার ইতিহাস-ঐতিহ্য, রাজনীতি-অর্থনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে একের পর এক ট্রেনগুলো রুট পরিবর্তন করে চলে যাচ্ছে। গুরুত্ব হারিয়ে বঞ্চিত হচ্ছে ভেড়ামারা, দৌলতপুর, মিরপুর ও মেহেরপুরের গাংনি অঞ্চলে বসবাসকারী একটা বিশাল জনগোষ্ঠী। কারণ গুলি চিহ্নিত করে ভেড়ামারা নাগরিক কমিটি তুলে নেওয়া খুলনা থেকে ভেড়ামারা হয়ে ঢাকাগামী সুন্দরবন, বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনটি পুনর্বহাল ও চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনটি বন্ধ না করার জন্য স্থানীয় মানুষের সময়ের দাবি পুরণ করার অভিপ্রায়ে আজ ২৫শে মে’২৪ শনিবার সকাল ১০ টায় রেল স্টেশনে জনস্বার্থমুলক কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে সর্বস্তরের মানুষের অংশ গ্রহণে মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করা হয়। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সর্বস্তরের নাগরিকদের নিয়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হবে।