উলিপুরে বৃদ্ধাকে ‘এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ’

সংবাদদাতা, উলিপুর (কুড়িগ্রাম):
কুড়িগ্রামের উলিপুরে জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে মরিয়ম বেগম নামে এক বৃদ্ধাকে এসিড নিক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পরিবার থানায় অভিযোগ করার দুইদিন পেড়িয়ে গেলেও মামলা নেয়নি পুলিশ। পুলিশ বলছে, এসিড নিক্ষেপের ঘটনাটি সন্দেহজনক হওয়ায় অধিকতর তদন্তের প্রয়োজন।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নে এই ঘটনা ঘটে। বর্তমানে ওই বৃদ্ধা রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের মাদারটারী এলাকার আবুল তালেবের ছেলে মঞ্জু মিয়ার পরিবারের সঙ্গে প্রতিবেশী আজিজার রহমানের ছেলে রফিকুল ইসলাম রানুর পরিবারের দীর্ঘদিন থেকে জমাজমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল।
গত শনিবার দুপুরে মঞ্জু মিয়ার ছোট ভাই মজনু মিয়া বাড়ির পাশে পুকুর থেকে মাছ ধরে বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে রানুর বাড়ির সামনে পৌঁছালে তারা মজনু মিয়াকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে থাকে। মজনু মিয়া ঘটনার প্রতিবাদ করলে তার ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। সংবাদ পেয়ে মজনু মিয়ার মা মরিয়ম বেগম ও স্ত্রী শিউলী বেগম এগিয়ে আসেন। এ সময় রানুর পরিবারের লোকজন মঞ্জুর পরিবারের সকলকে মারপিট করেন। এক পর্যায়ে রানু মিয়ার সাথে প্লাস্টিকের বোতলে থাকা এসিড মরিয়ম বেগমের মুখে ও কপালে ঢেলে দেয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে আরও জানা গেছে, এসিড নিক্ষেপের পর মরিয়ম বেগমসহ আহতদের চিৎকারে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে তাদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। পরবর্তীতে মরিয়ম বেগমের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। সেখানেও তার অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এদিকে ঘটনার পর ওই দিন রাতেই মঞ্জু মিয়া বাদী হয়ে রফিকুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৪ জনের বিরুদ্ধে উলিপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
এ বিষয়ে মঞ্জু মিয়া বলেন, ‘প্রতিপক্ষ আমার মায়ের মাথায় ও মুখে এসিড ছুড়ে মারেন। ঘটনার দিন শনিবার রাতেই থানায় অভিযোগ দিলেও তা সোমবার দুপুর পর্যন্ত মামলা হিসাবে গ্রহণ করেনি পুলিশ।’
এসিড নিক্ষেপের বিষয়ে রফিকুল ইসলাম রানুর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, ‘মঞ্জু মিয়ার পরিবারের সাথে সামান্য হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। সেখানে এসিড নিক্ষেপের কোনো ঘটনা ঘটেনি। বিষয়টি তদন্ত করলেই সত্যতা বেড়িয়ে আসবে।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্প কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে জানান, ওই দিন দুপুরে মরিয়ম বেগম নামে এক বৃদ্ধা হাসপাতালে ভর্তি হন। তার মুখে ও মাথায় কেমিক্যাল জাতীয় পদার্থ ছোঁড়া হয়েছে। আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে অতিরিক্ত জ্বালাপোড়ার কারণে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, এসিড নিক্ষেপের ঘটনাটি সন্দেহজনক। তাই বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।