কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় দু’গ্রামের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী মোতায়েন
হুমায়ুন কবির সূর্য:
কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় মহিলা দর্শানার্থীর ছবি মোবাইলে ধারণ করাকে কেন্দ্র করে দু’গ্রামের মধ্যে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহষ্পতিবার সকালে কুড়িগ্রামের চিলমারী ও গাইবান্ধা জেলার সীমান্তবর্তী সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তিস্তা নদীর উপর নির্মানাধীন কুড়িগ্রাম-গাইবান্ধা হরিপুর সড়ক সেতু এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় টেটা বিদ্ধ একজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গত ৫ এপ্রিল কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার সীমান্তবর্তী দুই থানার মোড় এলাকার মা এবং মেয়ে চিলমারী-হরিপুর তিস্তা সেতু দেখতে গেলে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শহরের মোড় এলাকার বিজয়, পাভেল ও সুমন নামে তিন বখাটে গোপনে ছবি মোবাইলে ধারণ করাসহ তাদের উত্যক্ত করে। এ ঘটনায় মা বাঁধা দিতে গেলে ওই তিন বখাটের সাথে তার বাক-বিতন্ডা হয়। এ সময় চিলমারীর রমনা ইউনিয়নের ডাঙ্গার চর এলাকার সাজু ও মোতালেব নামে দুই যুবক এগিয়ে গেলে তাদের উপরও তিন বখাটে চড়াও হয়। এর এক পর্যায়ে বখাটেরা ওই দুই যুবকদের মারধর করে। এ ঘটনায় স্থানীয়রা দু’পক্ষকে ডেকে মীমাংসা করে দিলেও মীমাংসার পরদিন ৬ এপ্রিল চিলমারী উপজেলার যে কোন গাড়ি ও মানুষকে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শহরের মোড় এলাকায় আটকে রেখে মারধরের ঘটনা ঘটে। তারা কিছু অটোরিক্সাও আটকে রাখে। বিষয়টি জানাজানি হলে চিলমারী উপজেলার দুই থানার মোড় ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শহরের মোড় এলাকার মানুষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়।
এরই জের ধরে ১০ এপ্রিল সকালে রমনা ইউনিয়নের দক্ষিণ খড়খড়িয়া এলাকার আলমগীর হোসেন (৩৫) নামে এক যুবক ভুট্টা খেত দেখতে গেলে শহরের মোড় এলাকার কয়েকজন ব্যক্তি মিলে তাকে বেধরক মারধরের পর বস্তাবন্দি করে পার্শ্ববর্তী ধান খেতে রেখে যায়।
খবর পেয়ে চিলমারী উপজেলার দুই থানার মোড় এলাকার লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে আলমগীরকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে চিলমারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।
রমনা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মেম্বার আনিচুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আলমগীরকে টেটা দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারাত্মক জখম করা হয়েছে। তার দুটি দাঁত ভেঙ্গে গেছে।
এ ঘটনায় চিলমারী উপজেলার দুই থানার মোড় এলাকার লোকজন ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার শহরে মোড় এলাকার মানুষজন মাইকিং করে দেশীয় অস্ত্র হাতে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।
পরে খবর পেয়ে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার সবুজ কুমার বসাক, চিলমারী থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
চিলমারী থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুর রহিম জানান, খবর পাওয়ার সাথে সাথে সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়। পরে সেনাবাহিনী যৌথভাবে উভয়পক্ষকে শান্ত করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। # ০১৭১৯০২৬৭০০।