ঈদের ছুটিতে হার্ডিঞ্জ ব্রীজ-লালনশাহ সেতু ও পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প দেখতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়
জাহাঙ্গীর হোসেন জুয়েল, কুষ্টিয়া:
ঈদের ছুটিতে পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত হার্ডিঞ্জ ব্রীজ-লালনশাহ সেতু ও পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প দেখতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। ঈদুল আজহার টানা ছুটিতে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা ও পাবনার পাকশী পাড়ে দু’পাড়ে যুগল সৌন্দর্য লালন শাহ সেতু ও হার্ডিঞ্জ ব্রীজ দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এসে ভিড় জমাচ্ছে। ঈদের ছুটিতে যেন মানুষের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে হার্ডিঞ্জ পয়েন্টের দু’পাড়ে পদ্মার ধারে। পদ্মার পাড়ে অবস্থিত পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিশাল কর্মযজ্ঞ দেখতে ভূল করছে না দর্শনার্থীরা।
ঈদের ছুটিতে পদ্মা নদীর তীরে অবস্থিত হার্ডিঞ্জ ব্রীজ-লালনশাহ সেতু ও পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প দেখতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। দর্শনার্থীদের ভিড়ে ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই অবস্থা। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছোট-বড়, ধনী গরিব সকল শ্রেণী পেশার মানুষ একটু বিনোদনের উদ্দেশ্যে এখানে ভিড় করছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য নেয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। পাশাপাশি রয়েছে পদ্মা নদীর চরে হাঁটা ও পদ্মায় নৌকা ভ্রমণের সুযোগ। হার্ডিঞ্জ ব্রীজের, লালনশাহ সেতুর পাশাপাশি দেখা যায় পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কুলিং টাওয়ার। ভেড়ামারা-পাকশী যুগল সৌন্দর্য দেখার জন্য অনেক দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসা প্রতিদিন দর্শনার্থীরা ভিড় করে অবাক চোখে দেখছেন পদ্মার ওপর নির্মিত যুগল সৌন্দর্য। একদিকে অপরূপ সৌন্দর্য আর অপরদিকে প্রজন্মের সাক্ষী ঐতিহ্যবাহী দেশের বৃহত্তম হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও পাশেই লালন শাহ সেতু দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন দর্শনার্থীরা। ঈদের পরদিন থেকে দর্শনার্থীদের ভিড়ে মুখর হয়ে উঠেছে এসব বিনোদন স্থানগুলো। ঈদকে ঘিরে নতুন নতুন বর্ণিল সাজে সাজানো হয়েছে স্থানীয় পার্কগুলো। রূপ-মাধুর্যে ভরা জোড়া সেতু এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই মানুষের দারুণ ভিড় জমাচ্ছে। এছাড়াও নৌকায় চরে এপাড় ভেড়ামারায় পদ্মা পাড়ে মনি পার্ক ও আধ্যাত্মিক সাধক পুরুষ হযরত সোলাইমান শাহ্ চিশতি (র.) মাজার দেখার জন্য সেখানে ও পরিবার-পরিজন নিয়ে ভিড় করে দেখছে মানুষ।
এছাড়াও পাকশী মানুষের চাহিদার অন্যতম কারণ-ঐতিহ্যবাহী পাকশী পেপার মিল (বন্ধ), ফুরফুরা শরিফ, ঈশ্বরদী বিমানবন্দর, বিশাল অঞ্চল নিয়ে পশ্চিম রেলওয়ের পাকশী বিভাগীয় কার্যালয়, বিবিসি বাজার ও রিসোর্টসহ ঐতিহাসিক বিভিন্ন স্থাপনা। হার্ডিঞ্জ ব্রিজের পাশে সমান্তরালভাবে দাঁড়িয়ে আছে লালন শাহ সেতু। এটি দেশের তৃতীয় দীর্ঘতম সড়ক সেতু। এ সেতুর কোল ঘেঁষেই নির্মিত হচ্ছে দেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রকল্প রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। নির্মাণাধীন এ কেন্দ্রের সুউচ্চ (৩০ তলার সমপরিমাণ উঁচু) চুল্লি ও নতুন নির্মিত রূপপুর রেলস্টেশন উঁচু স্থাপনাগুলো হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু থেকে খুব সহজের অবলোকন করা যায়। পদ্মার পাদদেশে নির্মাণাধীন রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র, হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ও লালন শাহ সেতু মিলে এই এলাকা যেন সৌন্দর্যের আঁধারে পরিণত হয়েছে। সরেজমিন দেখা যায়, হাজার হাজার দর্শনার্থী ব্রীজের সৌন্দর্য উপভোগ করতে এসেছেন। ঈদের ছুটির কারণে মানুষের সমাগম অনেক বেড়েছে। যে যার মতো করে ছবি, সেলফি তুলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করছেন।
দর্শনার্থী হায়দার আলী বলেন, হার্ডিঞ্জ ব্রীজ, লালন শাহ সেতু ও রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্র ও জিকে সেচ প্রকল্প দেখতে এসেছেন। সব মিলিয়ে জায়গাটি দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। জায়গাটি পর্যটন শিল্পের আওতায় আনা হলে দর্শনার্থীদের সমাগম আরো বাড়বে। ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুন্ডু বলেন, এখানে প্রতিদিন প্রচুর মানুষের সমাগম হয়। দর্শনার্থীদের জন্য উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকল প্র্রকার সুযোগ সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।