মিলন মেলায় পরিনত হলো পাক্ষিক আলোকিত রাজারহাট এর প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী
‘আলোকিত রাজারহাট একদিন দৈনিক হয়ে প্রকাশ হবে’- ইউএনও আল ইমরান
‘ আলোকিত রাজারহাট রাজারহাটের গন্ডি পেরিয়ে সারাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে’- ওসি নাজমুল
‘কোন অঞ্চলের সম্ভবনা বা ঘটনার পরের ঘটনা তুলে নিয়ে আসাই হলো অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা’-কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাব ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহফুজার রহমান টিউটর
‘আলোকিত রাজারহাট যদি কোন ধরনের ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে পুরো রাজারহাট ক্ষতিগ্রস্ত হবে’- বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম
‘আলোকিত রাজারহাট নিরপেক্ষ ভাবে সংবাদ প্রকাশ করে’- জামায়াতের আমীর মাওলানা কপিল উদ্দিন
‘বিজ্ঞাপন একটি পত্রিকাকে যেমন বাঁচিয়ে রাখে তেমনি পন্যের মানও বাড়ায়’-রাজরাহাটের প্রবীন সাংবাদিক কবি-সাহিত্যিক সরকার অরুন যদু
‘যে দেশে সংবাদপত্র ও প্রশাসন কাজ করে না সেদেশ জঙ্গলে পরিনত হয়’-অধ্যক্ষ আবুল হোসেন সরকার
‘সাংবাদিক পেশা একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা’-এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক রাশেদুজ্জামান রাশেদ
‘পত্রিকাকে কখনো প্রতিপক্ষ কেউ ভাববেন না’- প্রেসক্লাব সভাপতি আব্দুল কুদ্দুস
‘বস্তুনিষ্ঠতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সংবাদ পরিবেশনে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ’- সম্পাদক প্রহলাদ মন্ডল সৈকত
প্রহলাদ মন্ডল সৈকত:
‘আলোকিত রাজারহাট একদিন দৈনিক হয়ে প্রকাশ হবে। আলোকিত রাজারহাট একদিন দেশের আরএক প্রান্ত থেকে দেখতে পাবো। ই-আলোকিত রাজারহাট সার্চ দিলেই অনলাইন ভার্সন দেখবো এই প্রত্যাশা করছি’- পাক্ষিক আলোকিত রাজারহাট এর প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল ইমরান প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সোমবার(১ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় প্রেসক্লাব রাজারহাট’র সভাপতি আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে কয়েক ঘন্টার জন্য জমাকালো অনুষ্ঠান মিলন মেলায় পরিনত হয় প্রেসক্লাব রাজারহাট চত্বর। কুড়িগ্রাম জেলার রাজারহাট উপজেলা থেকে একমাত্র প্রিন্ট পত্রিকা হিসেবে প্রকাশিত রাজারহাটের মাটি ও মানুষের আলোকিত রাজারহাট পত্রিকার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহন করেন উপজেলা বিএনপি ও তার সহযোগী সংগঠন যুবদল- ছাত্রদল, জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ, এনসিপিসহ সকল রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, সামাজিক-সংষ্কৃতি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান, শিক্ষক, রাজারহাট-কুড়িগ্রাম-ফুলবাড়ী-উলিপুর-চিলমারীর বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখকবৃন্দ, ব্যবসায়ী, কৃষক- শ্রমিকসহ শত শত মানুষ। অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানটি জমকালো অনুষ্ঠানে পরিনত হয়। আলোচনা সভায় সুধীজনদের উদ্দেশ্যে প্রধান অতিথি আরও বলেন-‘প্রতিদিনের পত্রিকার সব নিউজ দেখা সম্ভব হয় না। কারণ আজকের পত্রিকা শেষ না হতেই কালকের পত্রিকা হাতে আসে। কিন্তু পাক্ষিক পত্রিকার একটা গুণ আছে। পত্রিকার সব নিউজ ১৫দিন ধরে দেখা যায়। কাজের চাপে যে নিউজটা আজ দেখা সম্ভ হলো না। সেটা কাল দেখা যাবে। বাংলোর নিচে বসে আমি আলোকিত রাজারহাট পত্রিকা সম্পন্নভাবে দেখি। আরও একটা সুবিধা হলো আলোকিত রাজারহাট প্রিন্ট আসার আগে সফ্টকপি মোবাইলে চলে আসে।’
এসময় তিনি আরও বলেন -‘আমার দেখা রাজারহাটের আঞ্চলিক পত্রিকা বা উপজেলা ভিত্তিক কোন পত্রিকা ছিল না। আমি আসার পাঁচদিন পর একমাত্র আলোকিত রাজারহাট পত্রিকার সম্পাদক প্রহলাদ বাবু এই পত্রিকাটি প্রকাশ করেন। আমি আলোকিত রাজারহাট পত্রিকার এক বছর আগে উদ্বোধকও ছিলাম। আজ প্রথম বর্ষ উদযাপনেও আমি কেক কাটছি। এটি আমার জিবনের পরম পাওয়া। আমি এই রকম একটি পত্রিকা চেয়েছিলাম। এটা আমারও দরকার, সকল মানুষের দরকার। রাজারহাটে কোথায় কি ঘটছে, মানুষের অবস্থা কি? এমনকি রাজারহাটের মানুষের স্থানীয় সংবাদ জানা দরকার। রাজারহাটের মানুষের হৃদয় জয় করেছে। একমাত্র আলোকিত রাজারহাট পত্রিকা সেটি করতে পেরেছে। তিনি আরও বলেন- ‘নিউজ পেপার ছাড়া একটি রাস্ট্র কখনো কল্পনা করা যায় না। প্রশাসনের একটি প্রধান সোর্স হলো সংবাদপত্র। সংবাদমাধ্যম ও প্রশাসন একে অপরের পরিপূরক। আজকের এই অনুষ্ঠানই জানিয়ে দিলো আলোকিত রাজারহাট পত্রিকা নিরপেক্ষভাবে প্রকাশ হচ্ছে।’
আলোকিত রাজারহাট পত্রিকার প্রধান সম্পাদক দিপালী রানী রায় ও নির্বাহী সম্পাদক সাংবাদিক মোহাম্মদ আলী মন্ডল এটমের যৌথ সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে রাজারহাট থানার অফিসার ইনচার্জ নাজমুল আলম লিংকন বলেন-‘একটি পত্রিকা চালানো সাহসী পদক্ষেপ। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে পত্রিকা বের করা আরও সাহসী পদক্ষেপ। সন্তানের মতো না ভাবলে পত্রিকা বের করানো যায় না। যারা বড় বড় পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক পত্রিকা দাঁড় করাতে জিবনের যে চরম মেধা ও শ্রম ব্যয় করেছে এটি আসলে এক সন্তানের প্রতি পালনের চেয়েও বেশী কঠিন। আলোকিত রাজারহাট রাজারহাটের গন্ডি পেরিয়ে কুড়িগ্রামের গন্ডি পেরিয়ে উত্তরবঙ্গের প্রতিনধিত্ব করবে সারাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবে এই প্রত্যাশা করি। তিনি আরও বলেন এই পত্রিকা পজেটিভ নিউজ বেশী কভার করবে। বিশেষ করি সফলতার গল্প, উদ্যেক্তার গল্প, দক্ষতার গল্প, মেধাবীদের গল্প, যারা উদীয়মান লেখক সাহিত্যিক তাদেরকে সংযুক্ত করা। পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করার মতো লেখা নিয়ে আসতে হবে।’
কুড়িগ্রাম প্রেসক্লাব ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মাহফুজার রহমান টিউটর বলেন-‘রাজারহাটের মানুষ সংস্কৃতিমনা এলাকা। রাজারহাটের মানুষ সবদিক দিয়েই মানুষ। তাৎক্ষনিক কোন ঘটনা সংবাদ হলেও এটা কিছুক্ষণ পর তার মূল্য থাকে না। কিন্তু এই অঞ্চলের সম্ভবনা বা ঘটনার পরের ঘটনা তুলে নিয়ে আসাই হলো অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা। আলোকিত রাজারহাট সে কাজটিই করছে। এবং তার লক্ষ্যে পৌচ্ছিতে পারবে বলে প্রত্যাশা রাখছি।’
উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক ও আলোকিত রাজারহাট পত্রিকার আইন উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম বলেন-‘আলোকিত রাজারহাট এর শুরটা অনেক ভাল। আলোকিত রাজারহাট যদি কোন ধরনের ক্ষতিগ্রস্থ হয় তাহলে পুরো রাজারহাট ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ আলোকিতর শেষে রাজারহাট শব্দটা আছে। আপনাদের আমার নৈতিক দায়িত্ব আলোতিক রাজারহাট টাকে আলোকিত করা। কোন ভাবেই আমরা আলোকিত রাজারহাট টাকে অ-আলোকিত করতে চাই না। আমি আলোকিত রাজারহাটট এর উত্তোরত্তর কামনা করছি।’
উপজেলা জামায়াতের আমীর ও আলোকিত রাজারহাট পত্রিকার উপদেষ্টা মাওলানা মো. কপিল উদ্দীন বলেন-‘আলোকিত রাজারহাট শুধু সমস্যা তুলে ধরবেন সেটা না। রাজারহাটকে নিয়ে যারা উন্নয়নমূলক কাজ করছে সেটাও তুলে ধরবেন।আলোকিত সংবাদ নিরপেক্ষ ভাবে পরিবেশন করবেন। এবং এটি বন্ধ না হয় সেজন্য সকলে সহযোগীতা করবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করছি। রাজারহাট থেকে পত্রিকা বের করা খুবই অসম্ভব। তাই রাজারহাটবাসীকে বিভিন্নভাবে সহযোগীতা করার আহবান জানাচ্ছি। সমাজের দর্পণ যদি হয় সংবাদপত্র বা সাংবাদিকতা, সেই কাজটি করে যাচ্ছে আলোকিত রাজারহাট পত্রিকার সম্পাদক। আমি পত্রিকাটির উত্তোরত্তর কামনা করছি।’
রাজরাহাটের প্রবীন সাংবাদিক কবি-সাহিত্যিক সরকার অরুন যদু বলেন- বিজ্ঞাপন একটি পত্রিকাকে যেমন বাঁচিয়ে রাখে তেমনি পন্যের মানও বাড়ায়। তাই পন্যের মান এবং প্রচারের জন্য আলোকিত রাজারহাটকে বিজ্ঞাপন দিয়ে সহযোগীতা করেন। সেই সাথে আলোকিত রাজারহাট যেন দৈনিক হয়ে রাজারহাটকে আলোকিত করবে।
কারিগরি বানিজ্যিক কলেজের অধ্যক্ষ আবুল হোসেন সরকার বলেন- ‘যে দেশে সংবাদপত্র ও প্রশাসন কাজ করে না সেদেশ জঙ্গলে পরিনত হয়। সংবাদপত্র না হলে এলাকার সমস্যা অনিয়ম উঠে আসে না। কয়েকদিন আগে রাজারাহট রেল স্টেশনের একটি সদস্য সংবাদপত্রে আসার পর ইউএনও মহোদয় পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন। আলোকিত রাজারহাট পত্রিকা এ কাজ করে যাচ্ছে। রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দসহ রাজারহাটের সুধী মহল আলোকিত রাজারহাট এর পাশে দাঁড়াতে হবে। পত্রিকাটি আমাদের এলাকার গর্ব। আমি পত্রিকারটির সাফল্য কামনা করছি।’
এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক রাশেদুজ্জামান রাশেদ বলেন-‘সাংবাদিক পেশা একটি চ্যালেঞ্জিং পেশা। রাজারহাট উপজেলার জনদূর্ভোগ ও সমস্যাগুলো আলোকিত রাজারহাট পত্রিকার বিশেষ জায়গায় স্থান পাবে সেজন্য পত্রিকার সম্পাদকে অনুরোধ করছি।’
প্রেসক্লাব সভাপতি ও অনুষ্ঠানের সভাপতি এবং আলোকিত রাজারহাট পত্রিকার যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস বলেন- ‘সাংবাদিকরা সমাজের সকলের ভাল হতে পারে না। যার পক্ষে লেখে সে বন্ধু আর যার বিপক্ষে লেখে সে চরম শত্রু। পত্রিকাকে কখনো প্রতিপক্ষ কেউ ভাববেন না। কারণ আপনারা যে যেটা করেন সেটাই তুলে ধরাই হলো সাংবাদিককের কাজ। তাই আলোকিত রাজারহাট চড়াই উৎরাই করে হাটি হাটি পা পা করে ২বছরে পর্দাপণ করলো। আপনারা সহযোগীতা করলে আলোকিত রাজারহাট পত্রিকা কখনোই বন্ধ হবে বলে আমি আশাবাদী। ’
পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক প্রহলাদ মন্ডল সৈকত স্বাগত বক্তব্যে বলেন-‘ গত এক বছরে ‘আলোকিত রাজারহাট’ স্থানীয় জনজীবনের প্রতিচ্ছবি তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। আমরা রাজারহাটের সমস্যা, সম্ভাবনা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, শিক্ষা এবং সফলতার গল্পগুলো তুলে ধরেছি। চরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের জন্য সচিত্র প্রতিবেদন তুলে ধরেছি। আমরা সর্বদা বস্তুনিষ্ঠতা ও নিরপেক্ষতার সঙ্গে সংবাদ পরিবেশনে অঙ্গীকারবদ্ধ থেকেছি। হয়তো পথচলার শুরুতেই আমাদের কিছু ভুল-ত্রুটি হয়েছে, কিন্তু আপনাদের গঠনমূলক সমালোচনা আমাদের শুধরে নিতে সাহায্য করেছে। সমাজের অসঙ্গতি ও সমস্যাগুলো নির্ভয়ে তুলে ধরতে, যাতে সংশ্লিষ্ট মহলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায়। তরুণ প্রজন্মকে লেখালিখি ও সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করেছি যাতে করে তরুণ প্রজন্ম ভালো লেখক হয়ে সমাজ ও দেশের উন্নয়ন ঘটাতে পারে। এই অল্প সময়ে ‘আলোকিত রাজারহাট’ সারা বাংলাদেশে যে সাড়া ফেলেছে, তাতে আমরা অভিভূত ও অনুপ্রাণিত। স্থানীয় সাংবাদিকতায় এই পত্রিকা একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে আমাদের বিশ^াস।
আমরা জানি, এই প্রথম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী কেবল একটি মাইলফলক, গন্তব্য নয়। আগামী দিনগুলোতেও আমরা আমাদের আদর্শ ও অঙ্গীকারে অবিচল থাকব। আমরা আরও বেশি সংখ্যক পাঠকের কাছে পৌঁছাতে চাই। আমরা চাই সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষের কণ্ঠস্বর হোক ‘আলোকিত রাজারহাট’।
প্রিয় পাঠক, আপনারা আমাদের শক্তি ও সাহস। আপনাদের মতামত, সমালোচনা ও পরামর্শ আমাদের চলার পথের পথ প্রদর্শক। আপনাদের সহযোগিতা ছাড়া ‘আলোকিত রাজারহাট’-এর পথচলা অসম্পূর্ণ। আসুন, আগামী দিনগুলোতে আমরা সকলে মিলে রাজারহাটসহ সোনার বাংলাকে আরও আলোকিত করে তুলি।’
আলোকিত রাজারহাট পত্রিকা প্রিন্ট কপি ছাড়া অনলাইন নিউজ পোর্টাল আলোকিত রাজারহাট ডট কম হিসেবে প্রকাশ হয়ে আসছে। অনলাইন পোর্টালে আলোকিত রাজারহাট’র ই-পেপার দেখা যাবে বলে পত্রিকার সম্পাদক জানিয়েছেন।
পরে প্রধান অতিথিসহ অতিথিবৃন্দ কেক কেটে আলোকিত রাজারহাট পত্রিকা দ্বিতীয় বর্ষে পর্দাপনের জন্য সফলতা কামনা করেন।









Chief Editor-Dipali Rani Roy