আর জি করের ঘটনা নিয়ে নির্মিত সিনেমায় তীব্র আপত্তি তৃণমূলের
আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে হত্যার প্রতিবাদে সরব হয়ে উঠেছিল কলকাতা। সেই ঘটনার ছায়া অবলম্বনে স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘আগমনী: তিলোত্তমাদের গল্প’ সিনেমায় মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন তৃণমূল নেত্রী রাজন্যা হালদার আর সিনেমাটি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন রাজন্যার ঘনিষ্ঠ বন্ধু তৃণমূলেরই আরেক নেতা প্রান্তিক চক্রবর্তী। ছবিটি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছেন খোদ তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারাই।-বিনোদন তোলপাড়।
আর জি কর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এক নারী চিকিৎসককে ধর্ষণ করে হত্যার ঘটনা ছায়া অবলম্বনে নির্মিত স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমাটি আগামী ২ অক্টোবর মহালয়ার দিন মুক্তি পাবে। এই সিনেমার পোস্টারেই লেখা রয়েছে, ‘আরজি কর ঘটনার পটভূমি।’ কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস চাইছে না এ মুহূর্তে আর জি কর-কাণ্ড নিয়ে তৈরি কোনো ছবি মুক্তি পাক। দলটির নেতারা ছবিটি মুক্তি না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানালেও তাতে সায় দিচ্ছেন না ছবির পরিচালক ও প্রধান অভিনেত্রী। ছবির কিছু অংশ ছেঁটে ফেলার দাবি তুললেও পরিচালক ও অভিনেত্রী জানিয়েছেন, যেভাবে তৈরি হয়েছে, সেভাবেই ছবিটি মুক্তি পাবে।
মুক্তির আগেই যখন ছবিটি নিয়ে তোলপাড়, তখন গতকাল শুক্রবার রাতে তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষ জানিয়ে দেন, এই ছবির সঙ্গে দলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ওই ছবির সঙ্গে তৃণমূলের কেউ জড়িতও নয়।
কুণাল ঘোষ জানান, তদন্তাধীন ঘটনা নিয়ে দলের সঙ্গে জড়িত কেউ যদি ছবির প্রচারে ব্যবহার করে, দল তার দায়িত্ব নেবে না। এই ছবি নির্মাণেও দল অনুমতি দেয়নি।
কুণাল ঘোষের এই মন্তব্যের পর গতকাল রাতেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদ এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ছবির নির্মাতা প্রান্তিক চক্রবর্তী ও রাজন্যা হালদারকে দল থেকে বহিষ্কার করেছে। প্রান্তিক হলেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য শাখার সহসভাপতি আর রাজন্যা ছাত্র পরিষদের যাদবপুর-ডায়মন্ড হারবারের সাংগঠনিক জেলার সহ-সভানেত্রী। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি জানিয়েছেন, ছাত্র পরিষদের সহ-সভাপতির পদ থেকে প্রান্তিক চক্রবর্তীকে অনির্দিষ্টকালের জন্য সাসপেন্ড করা হল। একই নির্দেশ বহাল থাকবে, যাদবপুর ডায়মন্ড হারবার জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সহ-সভাপতি রাজন্যা হালদারের ক্ষেত্রেও। এই সিদ্ধান্তের বিষয়ে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, যারা দলীয় দায়িত্বে থাকেন তাদের কিছু নিয়মকানুন মানতে হয়। বিষয়টি বিচারাধীন। দল এই ছবির ব্যাপারে কিছুই জানত না। এই ধরনের বিষয় নিয়ে কেন প্রচারমূলক কাজ হবে তাই দল কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে।
শুক্রবার সকালেই ছবির মূল চরিত্রের অভিনেত্রী রাজন্যা এই ছবি প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমকে বলেন, কোনও তদন্তের বিষয়, বিচার ব্যবস্থা বা কোনও তথ্যের সঙ্গেও কোনও যোগসূত্রই নেই এই ছবির। যাঁরা এই প্রশ্নগুলো তুলছেন, তাঁদের উদ্দেশে বলব, আসবেন, এসে ছবিটা দেখবেন, তারপর বিচার করবেন।
রাজন্যার মতো একই মন্তব্য করেন ছবির পরিচালক প্রান্তিক চক্রবর্তী। তিনি বলেন, আগমনী শব্দটার সঙ্গে আমার মনে হয় না কোনও তদন্তের বিষয় যুক্ত থাকতে পারে। তিলোত্তমা কিন্তু শহর কলকাতারও নাম। তাই এই দুয়ের সঙ্গে একেবারেই বিচারের কোনও কিছুর সংযোগ নেই।