বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:০৩ অপরাহ্ন
সংবাদদাতা, বদলগাছী(নওগাঁ):
নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার বেগুনজোয়ার উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে সহকারী শিক্ষিকার আপত্তিকর একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনায় মঙ্গলবার (৪ জুন) বিকেলে এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের পক্ষে শেখর আহমেদ নামের এক ব্যক্তি জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ এলাকাবাসীর মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
জানা যায়, প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামিম আহমেদ (মিঠু) বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় ছাত্রীদের একাধিকবার কু-প্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসব ঘটনায় কয়েকবার বিচার-সালিশের মুখোমুখিও হয়েছেন তিনি। কিন্তু কিছু অদৃশ্য শক্তির কারণে রক্ষা পেয়ে বিদ্যালয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
সম্প্রতি বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছা. রিফাত আরার সাথে নিজ অফিস কক্ষে অনৈতিক কার্যকলাপ করেন প্রধান শিক্ষক। এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি মানেজিং কমিটির নিকট জানানো হলেও কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি।
ডিসি অফিসে অভিযোগকারী শেখর আহমেদের দাবি, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি ‘পুতুল কমিটি’ হিসেবে পরিচিত।
তিনি অভিযোগ করেন জানান, দুই বছর আগে ভগবানপুর গ্রামের এক ছাত্রীকে শিক্ষা সফরে নিয়ে গিয়ে কু-প্রস্তাব দেওয়ার ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃস্টি হয়েছিল। পরে ওই ছাত্রীর অভিভাবকরা তাকে তড়িঘড়ি করে বাল্য বিয়ে দেয়।
গত বছর বসন্তপুর গ্রামের এক ছাত্রীর সঙ্গে একই ধরনের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ রয়েছে। মেয়ের পরিবার মামলা করতে চাইলে ১০ লাখ টাকা দিয়ে ঘটনা চাপা দেওয়া হয়।
শেখর আহমেদ বলেন, আমি এলাকার একজন সচেতন মানুষ হিসেবে এই ঘটনার ভিডিও ক্লিপ দেখে বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। আমি ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।
ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, প্রধান আবু সাদাত শামিম আহমেদ (মিঠু) তার অফিস কক্ষের চেয়ারে বসে আছেন এবং পাশের চেয়ারে বসেছিলেন সহকারী শিক্ষিকা রিফাত আরা। এর কিছুক্ষণ পর প্রধান শিক্ষক চেয়ার থেকে উঠে এসে সহকারী শিক্ষিকা রিফাত আরার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। উভয়ের সম্মতিতেই আপত্তিকর এমন বেশ কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষিকা (ইংরেজি) মোসা. রিফাত আরা তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, কে বা কাহারা আমার বিরুদ্ধে এসব মিথ্যে অভিযোগ তুলেছেন জানি না। তবে ভিডিওর বিষয়ে তিনি যথাযথ উত্তর দিতে পারেননি।
এ বিষয়ে জানতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু সাদাত শামিম আহমেদের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। এমন কি এবং বুধবার তার বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
অভিযোগের বিষয়ে নওগাঁর জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান বলেন, অভিযোগটি এখনও আমার হাতে আসেনি। হাতে এলে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।