রংপুরে ধানখেত থেকে উদ্ধার আলোকচিত্রীর মরদেহ
রংপুরে ধানখেত থেকে আবু সিয়াম (২০) নামের এক আলোকচিত্রী তরুণের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সিয়ামের এক বন্ধুকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার ২৮অক্টোবর সকালে গঙ্গাচড়া থানার বিনোদনকেন্দ্র ভিন্নজগতের পাশে খলেয়া ইউনিয়নের লালচাঁদপুর নয়াপাড়া এলাকার ধানখেত থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত সিয়াম একই এলাকার আলতাব হোসেনের ছেলে। সে ভিন্নজগতে ফ্রিল্যান্সিং আলোকচিত্রী হিসেবে কাজ করত। পাশাপাশি সিয়াম তার মামার ইট-বালুর ব্যবসাও দেখাশোনা করত।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার সকালে এক ব্যক্তি ভিন্নজগৎ এলাকার ক্যানেলের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তার মাঝে রক্তভেজা মাটি দেখতে পান। এসময় তিনি চারপাশে তাকাতেই দেখেন রাস্তার পার্শ্ববর্তী একটি ধানখেতে একজনের মরদেহ পড়ে আছে। তার পরনে শুধু লুঙ্গি ছিল।
খবর পেয়ে পুলিশ ও রংপুর সিআইডি এসে মরদেহ সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এসময় মরদেহের পাশে একটি ভাঙা চাকু এবং একটি রক্তমাখা টি-শার্ট আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়।
তবে কে বা কারা তাকে হত্যা করে সেখানে ফেলে গেছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে সিয়ামের বাড়িতে গেলে দেখা যায়, বাড়ির উঠানে বিলাপ করছেন মা সাদেকা বেগম। এ সময় তিনি বলছিলেন, ‘ওরে মোর সোনার বাবারে তুই মোক ছাড়ি কোনটে গেলুরে। মোর সোনার বাবাটা যদি কারও কোনো ক্ষতি করি থাকে তাইলে মোক আসি কইলেন না কেনে, মোর বাবার জন্যে না হয় মুই মোর এই জানটা কোরবানি করি দিনুং হয়।’
স্থানীয় ও নিহতের ভাগনে সোহাগ বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যায় আমি আর মামা একসঙ্গে ভিন্নজগৎ হয়ে পাগলাপীর যাওয়ার কথা ছিল। অর্ধেক রাস্তা যেতেই মামার মোবাইল ফোনে একটি কল আসে, এরপর আমি আর মামা পাগলাপীর না গিয়ে ভিন্নজগতের দিকে ফিরে আসি। ভিন্নজগৎ এলাকায় (মরদেহ উদ্ধারের ঘটনাস্থল) আসার পর এক ব্যক্তির সঙ্গে মামা কথা বলেন। অন্ধকার থাকায় তাকে দেখতে পাইনি। এরপর নানাবাড়ি গিয়ে রাতে খাবার খেয়ে ফের বের হই। একপর্যায়ে মামা বলেন, মোবাইল ফোনে চার্জ নেই। বাড়ি গিয়ে চার্জার নিয়ে আসবেন। এরপর মামা আর ফেরেননি। রাতে খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি।’
রংপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এ সার্কেল) হোসাইন মুহাম্মদ রায়হান বলেন, ‘মরদেহের গলায় ছুরির কয়েকটি ক্ষত পাওয়া গেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ছুরিকাঘাতে রক্তক্ষরণের কারণে তার মৃত্যু হয়েছে। তার ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে কাজ করছে পুলিশ। তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে কীভাবে এই হত্যা করা হয়েছে।-সম্পাদনায় রংপুর বার্তা সম্পাদক।