রিকশাচালকের পা ভেঙে দিল ট্রাফিক পুলিশ
সংবাদদাতা, সাভার :
সাভারে লোহার পাইপ দিয়ে পিটিয়ে রিকশাচালকের পা ভেঙে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক বিভাগের পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে রিকশাচালকরা। শুক্রবার (১৭ মে) ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গেন্ডা এলাকায় ওই রিকশাচালককে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়।
আহত রিকশাচালকের নাম মো. ফজলু। তিনি দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর থানার বনসাপুর এলাকার আবুল হোসেনের ছেলে। প্রায় ২২ বছর ধরে তিনি সাভারে বসবাস করছেন।
অভিযুক্ত পুলিশ সদস্য হলেন ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক বিভাগের র্যাকার চালক মো. সোহেল রানা। শুক্রবার (১৭ মে) র্যাকার চালক সোহেল ও মোস্তফা সাভারে দায়িত্বরত অবস্থায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী রিকশাচালক ফজলু বলেন, আমি ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক দিয়ে ঢাকামুখী লেন দিয়ে অটোরিকশা চালিয়া যাচ্ছিলাম। এসময় পাকিজার সামনে থেকে মোটরসাইকেল যোগে র্যাকার চালক সোহেলসহ দুইজন ধাওয়া করেন। গেন্ডা বাস স্ট্যান্ডের কাছে গেলে আমাকে ধরে ফেলে তারা। আমাকে রিকশা থামাতে বললে সাইট করে থামাতে চাই আমি। পর তিনি একটি লোহার রড দিয়ে বাম পায়ে আঘাত করে।
তিনি আরও বলেন, আমি হাত দিয়ে প্রতিহত করতে চাইলে তিনি ডান পায়ে সেই লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে পা ভেঙে দেন। এরপর আমি পরে যাই, আর উঠে দাঁড়াতে পারি নাই। পেটানো অবস্থায় দেখে স্থানীয়রা এসে ওই পুলিশকে ঘিরে ধরে। তখন পুলিশ সদস্য সবার উদ্দেশ্য বলেন, আমি ভুল করেছি এখন রিকশাচালককে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করতে দেন। পরে স্থানীয়রা চলে যায়। কিন্তু আমাকে অপর একটি রিকশায় তুলে দিয়ে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যেতে বলে তিনি চলে যান।
এদিকে সাভার প্রেসক্লাবের সামনে এ ঘটনা শুনে অন্য রিকশাচালকরা বিচারের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
বিক্ষোভ থেকে রুবেল নামের এক রিকশাচালক বলেন, ভুক্তভোগী ফজলুকে নিয়ে সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার সময় র্যাকার চালকদের সাথে থেকে অটোরিকশাটি আটক করা দুই জন আবারও গতিরোধ করেন। পরে অন্য রিকশাচালকরা বিষয়টি জানতে পেরে প্রেসক্লাবের সামনে থানারোড অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে পুলিশ তাদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরিয়ে দেয়।
তিনি আরও বলেন, ফজলুকে সরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে কিন্তু ফেরত দেওয়া হয়েছে। পরে তাকে সুপার ক্লিনিকে পাঠানো হয়। আমরা লোকাল রাস্তায় রিকশা চালাই। আমরা গরিব মানুষ, তার দুঃখ দেখে বিচারের দাবিতে সড়কে দাঁড়িয়েছি। এই সোহেল ১ সপ্তাহ যেতে না যেতেই রিকশা ধরে দুই হাজার করে টাকা নেয়।
এঘটনায় অভিযুক্ত সোহেল রানার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তবে র্যাকার চালক মোস্তফা বলেন, আমি ওই রিকশাচালককে মারিনি। তবে আমি শুক্রবার (১৭ মে) র্যাকারের দায়িত্বে রয়েছি। আমি তাকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। আমি ডিউটিতে এসেই দেখি এসব ঘটনা। পরে আমি ওই রিকশাচালককে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা উত্তর ট্রাফিক পুলিশের অ্যাডমিন হোসেন শহীদ চৌধুরী জানান, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।