শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০১:৫৬ অপরাহ্ন

মুনতাহার মরদেহ ছিল গৃহশিক্ষিকার মায়ের কোলে, ফেলতে যাচ্ছিল পুকুরে

রিপোর্টারের নাম / ১০৮ টাইম ভিউ
Update : রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪

সংবাদদাতা, সিলেট:

নিখোঁজের ৭ দিন পর মিলেছে সিলেটের কানাইঘাটের ৬ বছরের শিশু মুনতাহার মরদেহ। শিশুটির সাবেক গৃহশিক্ষিকা, তার মা ও নানি তিনজন মিলে তাকে হত্যা করে মাটিতে পুঁতে ফেলে।

রবিবার (১০ নভেম্বর) ভোরে মাটিতে পুঁতে ফেলা মরদেহ তুলে মুনতাহার চাচার বাড়ির পুকুরে ফেলার সময় হাতেনাতে গৃহশিক্ষিকার মাকে হাতেনাতে আটক করেন স্থানীয়রা। শিশু মুনতাহার গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়া, তার মা ও তার নানি কুতুবজান বিবিকে আটক করেছে পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, রবিবার রাতে গৃহশিক্ষিকা শামীমা বেগম মার্জিয়াকে সন্দেহজনকভাবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয় পুলিশ। মার্জিয়ার আচরণ সন্দেহজনক মনে হলে তার বাড়িতে মুনতাহার সন্ধান করেন স্থানীয়রা। রাত সাড়ে ৩টার দিকে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে অন্ধকারের মধ্যে রাস্তা পার হতে দেখেন স্থানীয়রা। এ সময় হাতে কী জানতে চাইলে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। স্থানীয়রা তাকে আটক করার পর তার কোলে কাদামাটি মাখা মুনতাহার মরদেহ দেখতে পান। পরে তাকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।

এ বিষয়ে কানাইঘাট সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন আহমদ বলেন, মুনতাহার নিখোঁজের পর রবিবার স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গেলে মার্জিয়ার আচরণ সন্দেহজনক মনে হয়। পরে রাতে পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। এরপর পুলিশ মুনতাহার স্বজনদের বলেন মার্জিয়ার বাড়ির আশপাশে মাটি খোঁড়া আছে কি না খোঁজ নিতে। স্থানীয়রা রবিবার রাতভর তার বাড়ির আশেপাশে কোথাও মাটিখোঁড়া কোনো জায়গা আছে কি না খুঁজতে থাকেন। ফজরের আজানের আগ মুহূর্তে মার্জিয়ার মা আলিফজান বিবিকে হঠাৎ অন্ধাকারের মধ্যে রাস্তা পার হতে দেখে আটকানোর চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্ঠা করলে স্থানীয়রা তাকে আটক করেন। পরে কাদামাটি মাখা মুনতাহার মরদেহ দেখতে পান।

আটক আলিফজান বিবির বরাত দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আফসার উদ্দিন জানান, তারা মুনতাহার মরদেহ প্রথমে মাটিতে পুঁতে ফেলেছিলেন। রাতে সেখান থেকে মরদেহ তুলে মুনতাহার চাচার বাড়ির পুকুরে ফেলতে চেয়েছিলেন।

তিনি আরও জানান, মার্জিয়া মুনতাহার প্রতিবেশি ও তার গৃহশিক্ষক। একসময় ভিক্ষা করতেন মার্জিয়ার মা ও নানী। মার্জিয়াকে তার স্বামী ছেড়ে চলে গেছেন। ফলে বাড়ির বাইরে গেলে মুনতাহাকে সঙ্গে নিতেন মার্জিয়া। সবাই তাকে বিশ্বাসও করতেন। তবে কী কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে তা জানা যায়নি। সম্প্রতি মার্জিয়ার পরিবারের সঙ্গে তাদের বিরোধ চলছিল।

এর আগে, রবিবার (৩ নভেম্বর) সকালে মুনতাহাকে নিয়ে স্থানীয় একটি ওয়াজ মাহফিল থেকে বাড়ি ফেরেন তার বাবা। পরে শিশুটি প্রতিদিনের মতো আশপাশের বাড়িতে শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করতে যায়। বিকেল ৩টার পরও বাড়ি না ফেরায় পরিবার থেকে মুনতাহাকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়। তারপর তাকে আর কোথাও পাওয়া যায়নি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরো খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর
error: Content is protected !!
error: Content is protected !!